শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

‘আমাদের চুপ করানো যাবে না’

আপডেট : ০৯ অক্টোবর ২০১৯, ২১:৩৬

দেশদ্রোহের মামলার প্রতিবাদে চিঠি ভারতের বিশিষ্টজনদের

গণপিটুনি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রীকে লেখা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, অপর্ণা সেন, অনুরাগ কাশ্যপদের খোলা চিঠির সমর্থনে এবার কলম ধরলেন আরো এক ঝাঁক বিদ্বজ্জন। নাসিরুদ্দিন শাহ, রোমিলা থাপারের মতো ব্যক্তিত্বরা নতুন একটি খোলা চিঠিতে স্পষ্ট বলেছেন, ‘আমাদের চুপ করিয়ে দেওয়া যাবে না।’ যেভাবে ৪৯ জন বিদ্বজ্জনের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহের অভিযোগ আনা হয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন চিঠিতে সই করা বিভিন্ন ক্ষেত্রের ১৮০ জন বিশিষ্ট ব্যক্তি। তীব্র নিন্দাও করা হয়েছে চিঠিতে। খবর আনন্দবাজার পত্রিকার

নতুন এই চিঠিটি প্রকাশ্যে এসেছে সোমবার। অভিনেতা নাসিরুদ্দিন শাহ, ইতিহাসবিদ রোমিলা থাপার ছাড়াও হিন্দিতে লেখা ওই চিঠিতে সই করেছেন সিনেমাটোগ্রাফার আনন্দ প্রধান, সমাজকর্মী হর্ষ মান্দার, লেখক অশোক বাজপেয়ী ও জেরি পিন্টো, শিক্ষাবিদ ইরা ভাস্কর, কবি জিত্ ঠাইল, লেখক সামসুল ইসলাম, সুরকার টি এম কৃষ্ণ, পরিচালক-সমাজকর্মী সাবা দেওয়ানের মতো গুণীজনরা। দেশদ্রোহিতার মামলার প্রসঙ্গ টেনে প্রতিবাদী ওই চিঠিতে তাদের বক্তব্য, সাধারণ মানুষের কণ্ঠস্বরকে এভাবে দমিয়ে রাখা যাবে না। তারা এই ধরনের ঘটনার প্রতিবাদ করেই যাবেন।

মাস তিনেক আগে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, অপর্ণা সেন, মণি রত্নম, অনুরাগ কাশ্যপ, শ্যাম বেনেগাল, সংগীতশিল্পী শুভা মুদগলের মতো বিশিষ্ট ব্যক্তিরা একটি খোলা চিঠি লিখেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে। দেশ জুড়ে গণপিটুনির ঘটনা বেড়ে যাওয়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে লেখা ওই চিঠিতে মোদি সরকারের অস্বস্তি বেড়েছিল। সেই চিঠির ভিত্তিতেই গত ৩ অক্টোবর বিহারের মুজাফ্ফরপুরে ৪৯ জন বিশিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার অভিযোগ তুলে এফআইআর দায়ের করা হয়। সঙ্গে যুক্ত হয় দেশে অশান্তি তৈরির চেষ্টা, ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত, শান্তি ভঙ্গে উসকানির মতো অভিযোগও।

এই নিয়ে প্রতিবাদ জানিয়ে নতুন এই চিঠিটি লিখেছেন নাসিরুদ্দিনরা। ১৮০ জন বিদ্বজ্জনের সই করা ওই চিঠির বক্তব্য, ‘আমাদের সহকর্মী ৪৯ জন সংস্কৃতিমনস্ক বিশিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে এফআইআর করা হয়েছে, শুধু এই অপরাধে যে তারা সমাজের সম্মাননীয় ব্যক্তি হিসেবে দেশে গণপিটুনির বিরুদ্ধে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।’ এই এফআইআরের তীব্র নিন্দা করে চিঠিতে প্রশ্ন তোলা হয়েছে, ‘এটা কি নাগরিকদের চুপ করাতে রাষ্ট্রযন্ত্রের অপব্যবহার করে হেনস্তা করা নয়?’

চিঠিতে আরো বলা হয়েছে, ‘আমরা সবাই ভারতীয় সংস্কৃতিমনস্ক হিসেবে, বিবেকবান নাগরিক হিসেবে এর তীব্র নিন্দা করি। আরো জানাই, আমাদের সতীর্থরা প্রধানমন্ত্রীকে যে চিঠি লিখেছিলেন, তার প্রতিটি শব্দ আমরা সমর্থন করি। তাই এখানে আরো একবার শেয়ার করলাম এবং সংস্কৃতিমনস্ক, শিক্ষাবিদসহ সবাইকে ওই চিঠি শেয়ার করার আর্জি জানাচ্ছি। এভাবেই আরো অনেকে প্রতিদিন প্রতিবাদ করবে। গণপিটুনির বিরুদ্ধে, জনগণের কণ্ঠরোধের বিরুদ্ধে, রাষ্ট্রযন্ত্রের অপব্যবহার করে হেনস্তা করার বিরুদ্ধে।’