নিজের দুই সন্তানকে ঠিক যতটুকু সময় দেন তারচেয়ে বেশি সময় দেন নিজের ই-কমার্স ফেসবুক পেজ ‘আড়ঙ্গ’-কে। দুই সন্তানের এই জননী স্নাতকোত্তর শেষে যখন চাকরির আশায় দ্বারে দ্বারে ঘুরেছিলেন, ঠিক তখনই নিজেকে উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে শুরু করা ‘আড়ঙ্গ’ ফেসবুক পেজ এক বিন্দু আলো জ্বালে তার জীবনে।
১০ হাজার টাকা দিয়ে শুরু করে বর্তমানে ৫ লক্ষাধিক টাকার পুঁজি করেছেন। প্রতিমাসে আয় করছেন ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা। এমনটাই জানান নবীন উদ্যোক্তা আড়ঙ্গ’র স্বত্বাধিকারী তামান্না আক্তার চাঁদনী।
নবম শ্রেণিতে থাকতেই বিয়ের পীড়িতে বসতে হয় তাকে। কিন্ত সংসার ও সন্তান লালন-পালনের পাশাপাশি সফলতার সঙ্গে চালিয়ে যান পড়াশোনা। কবি নজরুল সরকারি কলেজ থেকে কৃতিত্বের সঙ্গে সম্পন্ন করেছেন স্নাতক ও স্নাতকোত্তর।
চাকরির আশায় বসে না থেকে চাঁদনী শুরু করেছেন অনলাইন ব্যবসা। ‘আড়ঙ্গ’ নামে ফেসবুক পেজ খুলে বিভিন্ন গহনা, জামদানী শাড়ি, কসমেটিকসের বিজ্ঞাপন আপলোড দিতে থাকেন। ধীরে ধীরে অর্ডার আসতে থাকে। সেইসঙ্গে মানুষের চাহিদাও বাড়তে থাকে; ফলে জনপ্রিয় হয়ে উঠতে থাকে ‘আড়ঙ্গ’ পেজ।
এছাড়াও চাঁদনী লকেট পুঁতি, সাইট পিস, ব্রোঞ্জ পিস তৈরি করে বেশ সাড়া পেয়েছেন। বর্তমানে ব্যস্ততার কারণে তিনি দেশী জুয়েলারি, ঢাকাইয়া জামদানী ও বাঙ্গালির ঐতিহ্য দেশী মসলিন শাড়ি বিক্রি করছেন। মালামাল রাখার জন্য নিজ বাসায় গড়ে তুলেছেন গোডাউন। প্রোডাক্ট ডেলিভারির জন্য রেখেছেন ১০ জন ডেলিভারি বয়।
উদ্যোক্তা হওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘২০১৮ সালের শুরুর দিকে হঠাত্ করেই আমি নিজের জন্য কেনা গহনাগুলো ‘আড়ঙ্গ’ পেজ খুলে সেখানে আপলোড করি। রাতে আপলোড করি তো সকালে ঘুম থেকে উঠেই দেখি অর্ডার এসেছে। মূলত সেখান থেকেই ধীরে ধীরে আমার যাত্রা শুরু।’ ব্যবসায় সফলতার বিষয়ে চাঁদনী বলেন, ‘সকল প্রতিকূল পরিস্থিতিকে অনুকূলে আনা আমার একা সম্ভব ছিল না। মা-বাবা, স্বামী ও সহপাঠীদের সহযোগিতায় আমার এ পথ চলা।’
ইত্তেফাক/জেডএইচডি