শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

বইবন্ধুর ভিন্ন উৎসব

আপডেট : ০১ মার্চ ২০২১, ২১:২৮

উৎসব মানেই আনন্দ। এমন একটা উৎসব হলে কেমন হয়, যেখানে সারাদিন জুড়েই হবে আনন্দের মাধ্যমে নিজেদের পড়া বইগুলো বিনিময় করার সুযোগ হবে অন্য কোন পাঠকের সাথে! তেমনি এক ব্যতিক্রমী বই বিনিময় উৎসবের আয়োজন করেছে সামাজিক সংগঠন 'বইবন্ধু'। ঢাকার রবীন্দ্র সরোবরে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি সারাদিনব্যাপী এ বই বিনিময় উৎসব অনুষ্ঠিত হয়।

আজকাল ঢাকা শহরে বুকশপগুলোতে বসেও বই পড়েন অনেকে। বেশকিছু সংগঠনও বই নিয়ে কাজ করছে। তবে এত বড় পরিসরে বই আদানপ্রদান করার দৃশ্য বোধহয় এটাই প্রথম। সব শ্রেণির মানুষের বই পড়ার প্রতি আগ্রহ তৈরির লক্ষ্যে কাজ করছে বইবন্ধু।

রবীন্দ্র সরোবরে বইবন্ধুর আয়োজনে গিয়েই চোখে পড়লো বই নিয়ে কাড়াকাড়ি। আর বইপ্রেমীদের সামলাচ্ছেন একদল তরুণ স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী। অনেকেই এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ছুটছিলেন নিজের পছন্দের বই সংগ্রহের জন্য। অনেকে নিয়ে এসেছেন নিজের সংগ্রহে থাকা রবীন্দ্রনাথের শেষের কবিতা কিংবা হুমায়ূন আহমেদের শ্রেষ্ঠ চরিত্র হিমু সমগ্র, যেটির বিনিময়ে হয়তো নেবেন প্রিয় লেখকের অন্যকোনো বই। জাফর ইকবালের বিজ্ঞানের নানান ধরনের বই, রূপকথার বই, ছড়ার বই, এমনকি সমরেশ মজুমদার থেকে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, আনিসুল হক থেকে ইমদাদুল হক মিলন, বাদ যাননি কোনো লেখক।

আয়োজকরা জানান, প্রায় পাঁচ হাজার মানুষের উপস্থিতিতে সারাদিনে ১৫ হাজার বই বিনিময় হয়েছে। বই বিনিময় উৎসবে শুধু মাত্র একটি কিংবা বা কয়েকটি বই দিয়ে সমান সংখ্যক বই নেওয়া সুযোগ ছিলো সকলের।

বেশকিছু হাসপাতালে পাঠাগার তৈরী করেছে বইবন্ধু। এছাড়া লালমাটিয়া এবং রবীন্দ্র সরোবরের দু'টো পার্কে তৈরী করা হয়েছে উন্মুক্ত পাঠাগার। এছাড়া তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের জন্য ঢাকার কমলাপুরে একটা পাঠাগার করে দিয়েছেন এই সংগঠনের তরুণেরা। ২০১৮ সালে জানুয়ারি মাসে গণপরিবহনে বই পড়ার ব্যবস্থা করার মাধ্যমে যাত্রা শুরু করে বইবন্ধু৷ বর্তমানে ৫৬টা পাঠাগার রয়েছে বাসে, হাসপাতালে, পার্কে, সেলুনসহ বিভিন্ন স্থানে।

বইবন্ধুর সমন্বয়ক মহিউদ্দিন তোহা জানান, বই বিনিময় উৎসবের ভাবনা আসে দু'বছর আগে থেকেই। সহকর্মী রাসিব আহমেদের সঙ্গে এই উদ্যোগ নেয়ার চেষ্টা করছিলেন। খুলনায় একদল তরুণ তা করে দেখিয়েছেন, ঢাকায় কেন আমরা করার কথা ভাবছি না!  সেই ভাবনা থেকেই কাজ। ভবিষ্যতে বিভাগীয় শহরে ও পর্যায়ক্রমে জেলা শহরে এই আয়োজন ছড়িয়ে দিতে চাই।

তিনি বলেন, আমরা চাই বই নিয়ে অনেক বেশি আলোচনা হোক, লেখক-পাঠকের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে ছড়িয়ে পড়ুক বইয়ের কথা। তরুণদের বই পড়ার আগ্রহ তৈরি করার জন্য পরিবার সদস্যদের এবং শিক্ষকদের ভূমিকা পালন করতে হবে।

ইত্তেফাক/এসটিএম