বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত থাকাকালীন ফ্রিল্যান্সিং, সামাজিক কর্মকাণ্ড, বিজ্ঞান মেলা ও বির্তক ক্লাবে যুক্ত ছিলেন সফিকুল ইসলাম। পটুয়াখালীর এই তরুণ পড়াশোনা করেছেন ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে। তবে প্রকৌশলের ছাত্র হলেও ঝোঁক ছিল ব্যবসায়। পড়াশোনা শেষে কিছুদিন চাকরি করলেও চাকরি ছেড়ে ব্যবসায় নামেন। বেছে নেন এফ-কমার্স, অর্থাৎ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুককে ব্যবহার করে পণ্যের বিজ্ঞাপন ও বিক্রি। তৈরি পোশাক ও পরবর্তীতে স্পোর্ট্সওয়্যার বিক্রি করে সাফল্য পেয়েছেন, হয়েছেন সফল উদ্যোক্তা।
পটুয়াখালীর এই তরুণের শৈশব-কৈশোরের কেটেছে নিজ গ্রামের বাড়িতে। ২০১০ সালে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হন ঢাকায় দারুননাজাত সিদ্দিকিয়া কামিল মাদরাসায়। ২০১২ সালে দ্বাদশ শ্রেণি পাস করে ভর্তি হন বিশ্ববিদ্যালয়ে। নিজের ও পড়াশোনার খরচ চালানোর জন্য টিউশনি করার মাধ্যমে উপার্জন শুরু করেন। পরে ২০১৫ সালে ছাত্র থাকা অবস্থায় বসুন্ধরা সিটিতে একটি ফ্যাশন হাউজে চাকরি নেন। তখন থেকেই ভাবতেন উদ্যোক্তা হবেন।
২০১৬ সালে গ্র্যাজুয়েশন শেষে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে আইটি অফিসার হিসেবে কিছুদিন কাজ করেন সফিকুল। পরে চাকরি ছেড়ে ব্যবসায় নামেন। 'গ্লো-সেভেন' নামে একটি স্টার্টআপ শুরু করেন। শুরুতেই পণ্য নির্বাচন করার ক্ষেত্রে বেশ নজর দেন। প্রথমদিকে মেয়েদের নানান ধরনের প্রোডাক্ট ও তৈরি পোশাক নিয়ে কাজ করেন। এরপর জীম এবং স্পোর্টস রিলেটেড প্রোডাক্ট নিয়ে আসেন। বর্তমানে প্রায় ৩০ এর অধিক প্রোডাক্ট রয়েছে তার প্রতিষ্ঠানে। নিজস্ব কিছু পণ্য রয়েছে। প্রথম থেকে ফেসবুকে বিভিন্ন গ্রুপে পোস্ট করার মাধ্যমেই বিক্রি বাড়তে থাকে।
চাকরি বাদ দিয়ে ব্যবসা করার কারণ হিসেবে তিনি জানান, চাকরি করলে আমি হয়তো একটা নিয়মের মধ্যে কাজ করতাম। স্বাধীনতা থাকতো না। ব্যবসা করার ফলে আমি আমার নিজের মত করে কাজ করতে পারছি। কয়েকজনের কর্মসংস্থান করতে পেরেছি। নতুন যারা ব্যবসা করতে চায় তাদের জন্য বলব, লেগে থাকতে হবে। পরিকল্পনামাফিক এগোতে হবে।
শুধু অনলাইনে সীমাবদ্ধ নয়, ঢাকার পান্থপথেও শো-রুম দিয়েছেন সফিকুল। পরবর্তীতে শাখা বৃদ্ধিরও পরিকল্পনা রয়েছে। ব্যবসার পাশাপাশি নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী গরীব মেধাবী শিক্ষার্থী, এতিমখানার শিশু, বৃদ্ধাশ্রমের বৃদ্ধ ও পথশিশুদেরকে সহযোগিতা করেন তিনি।
ইত্তেফাক/এসটিএম