শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

হারুনের সেলুনভিত্তিক পাঠাগার

আপডেট : ২৫ জুলাই ২০২১, ০২:১৭

প্রযুক্তির ব্যবহার যতই বাড়ছে ততই যেন বই-বিমুখ হচ্ছে মানুষ। অনলাইনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম আর নানাকিছুর ভীড়ে হারিয়ে যাচ্ছে বই পড়ার অভ্যাস। তবে কিছু ব্যতিক্রম মানুষ আছেন যারা বই পড়তে ভীষণ ভালোবাসেন তো বটেই, এই নেশা ছড়িয়ে দিতে চান অন্যের মাঝেও। তেমনই এক বইপ্রেমী হারুন অর রশীদ। ছোটবেলা  থেকেই বইয়ের প্রতি ভালোলাগা তাকে উৎসাহ দিয়েছে বই পড়াকে সমাজের অলিগলিতে ছড়িয়ে দিতে। তাইতো বই নিয়ে প্রায়সময়ই ছুটে যান বাড়িতে বাড়িতে। নেট দুনিয়ায় বুদ হয়ে থাকা প্রজন্মকে বইয়ের দুনিয়ায় ফিরিয়ে আনতে নিয়েছেন বিভিন্ন উদ্যোগ। বেশ কয়েকবছর ধরেই বই নিয়ে কাজ করছেন অনলাইনে ও অফলাইনে। গতবছর লকডাউনেও অনেকের বাড়ি পৌঁছে দিয়েছেন বই নিয়ে, উদ্দেশ্যে ছিল লকডাউনে বইপড়ায় উদ্বুদ্ধ করার।

এবার হারুন হাজির হয়েছেন ভিন্নধর্মী এক উদ্যোগ নিয়ে। গড়েছেন সেলুনভিত্তিক পাঠাগার। ঢাকা জেলার নবাবগঞ্জ উপজেলার কলাকোপা বাজারের সুব্রত হেয়ার কাটিং সেলুনে হারুন অর রশীদের অর্থায়নে স্থাপন করা হয়েছে ব্যতিক্রমী এক পাঠাগার। বিভিন্নধরনের বইয়ে ভর্তি এ পাঠাগারের উদ্দেশ্য চুল কাটার সময়টিকে মূল্যবান করে তোলা। চুল-দাঁড়ি কাটার পাশাপাশি সেলুনে বসে পড়া যাবে বই, ছড়াবে জ্ঞানের আলো—এমনটাই ধারণা। এতে যেমন সময়ের সদ্ব্যবহার হবে তেমনি হবে জ্ঞান আহরণও। শুধু নবাবগঞ্জ নয়,  ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলসহ বেশ কিছু জেলায় বাস্তবায়ন করা হয়েছে হারুনের এই উদ্যোগ। বাংলাদেশের বিখ্যাত লেখকদের পাশাপাশি তরুণ প্রজন্মের জনপ্রিয় কিছু লেখকের বই দিয়ে সাজানো হচ্ছে সেলুনভিত্তিক পাঠাগারগুলো।

ঢাকা থেকে শুরু হওয়া এ কার্যক্রমের প্রথম লক্ষ্য যেখানে সুযোগ হবে সেখানেই সেলুন পাঠাগার নির্মাণ করা। ধাপে ধাপে পুরো দেশেই এ পাঠাগারটি ছড়িয়ে দেওয়ার ইচ্ছা  হারুনের। ‘বই হোক নিত্যসঙ্গী’- এ শ্লোগানকে সামনে রেখে চালু হওয়া এ উদ্যোগের সাথে থাকতে চাইলে যে কেউ অন্তর্ভুক্ত হতে পারবেন বলে জানান হারুন।

হারুন অর রশীদ বলেন, "আমার স্বপ্ন গ্রাম থেকে শহরে প্রত্যেকটি জায়গায় বইপ্রেমী তৈরি করা। এর জন্য সবার সহযোগিতা কামনা করছি।" বই নিয়ে নানা উদ্যোগের স্বীকৃতি হিসেবে তিনি পেয়েছেন নানা পুরষ্কার। আফ্রিকা-এশিয়া ইয়ূথ ফাউন্ডেশন তাকে বাংলাদেশের 'বেস্ট সোশ্যাল অ্যাক্টিভিস্ট' হিসেবে পুরষ্কৃত করে। তবে স্বীকৃতি বড় কথা নয়, এসব উদ্যোগে একটি মানুষও যদি বইমুখী হয় তবেই সেটিই তার স্বার্থকতা বলে মনে করেন হারুন।

ইত্তেফাক/এসটিএম