"আমি চিনি গো চিনি তোমারে, ওগো বিদেশিনী; তুমি থাকো সিন্ধুপারে, ওগো বিদেশিনী...।" রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিখ্যাত এই গানের কলির মতোই যেন বাংলাদেশি ছেলে হাবিবুর রহমান এবং বেলারুশের মেয়ে নাতালিয়ার সম্পর্কের সূচনা। সুদূর জার্মানিতে এ দম্পতির বসবাস। দু'জন ভিন্ন দুটি দেশের মানুষ হয়েও গড়েছেন মেলবন্ধন। নিজেদের জীবনাচরণের ভিডিও, পুরনো বাঙালী গানের সঙ্গে তাল মিলিয়ে গাওয়া কিংবা হাস্যরসিক কন্টেন্ট দিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মাতাচ্ছেন তাঁরা।
২০২০ সালে করোনায় পুরো বিশ্ব যখন বিপর্যস্ত, তখনই ইঞ্জিনিয়ার হাবীবুর রহমান তাঁর ফেসবুক পেজ ও ইউটিউবে সরব হন। বর্তমানে তাঁদের ভিডিও কন্টেন্ট উপভোগ করছে দেশে-বিদেশের লক্ষ দর্শক। 'নাতালিয়া অ্যান্ড হাবীব: দ্য মিক্সম্যাচ ফ্যামিলি' নামের ইউটিউব চ্যানেলটি ইতোমধ্যেই অর্জন করেছে সিলভার প্লে বাটন।
হাবীবুর রহমান জানান, ভিনদেশী তরুণী নাতালিয়ার সঙ্গে তার প্রথম পরিচয় হয় জার্মানির মিউনিখে।২০১১ সালে এমএসসি করার জন্য জার্মানি তে গিয়েছিলেন তিনি। নাতালিয়া সেখানে পড়াশোনার পাশাপাশি চাকরি করতেন। তখন থেকেই তাদের বন্ধুত্ব। এরইমাঝে মন দেওয়া-নেওয়া হয়ে যায়। কয়েক বছরের মধ্যেই বিয়ে করে ফেলেন তাঁরা। ইসলামি রীতি মেনে ২০১৭ সালে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হবার পর থেকে সুখেই কাটছে তাঁদের সংসার।
জার্মানিতে বসবাস হলেও বাংলাদেশী সংস্কৃতির সঙ্গে মিশে আছে এই দম্পতির জীবন। যার সাক্ষী তাদের ছোট্ট কন্যা নাদিয়ার অল্প অল্প মুখের বুলি। আর তাদের জীবনকেন্দ্রীক ভিডিও কন্টেন্টের মাধ্যমে প্রকাশ পায় ভালোবাসা, সমোঝেতা, একে অপরের প্রতি সম্মান।
একদম ভিন্ন দুই মেরুর দু'জনের এক পরিবেশে মানিয়ে নেওয়া নেয়া কতটা কঠিন ছিল, উত্তরে হাবীব বলেন, প্রতিটা সম্পর্কেই সমস্যা হতেই পারে, একসাথে থাকলে মতানৈক্যতা থাকতেই পারে। কিন্তু খোলাখুলিভাবে কথা বলেই পরস্পরের সমস্যা সমাধান করা সম্ভব। জানা যায়, অতি শীগগির বাংলাদেশে আসবেন এ দম্পত্তি। বাংলার প্রকৃতি, বাংলার মাটি, বাংলার সাধারণ জীবন-যাপন দেখবেন। হাবীব এ দেশের সহজ-সরল জীবন খুব কাছ থেকে দেখাতে চান তাঁর সহধর্মিণী নাতালিয়া ও ছোট্ট কন্যা নাদিয়াকেও।
ইত্তেফাক/এসটিএম