শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

কথাবন্ধু আশা

আপডেট : ১৩ অক্টোবর ২০২১, ০১:১৩

জীবনের পথে পাড়ি দিয়েছেন অনেক অনিশ্চিত অধ্যায়। দীর্ঘ সময় ধরে ছিলেন কর্মহীন। নিজের মেধা আর যোগ্যতা দিয়ে ফিরে এসেছেন আবার। প্রমাণ করেছেন নিজেকে। বলছিলাম কথাবন্ধু আতিয়া আমান হক আশা-র গল্প। শ্রোতা মহলে যিনি পরিচিত আরজে আশা আমান নামেই।

আশার ছোটবেলা কেটেছে ঠাকুরগাঁওতে। সেখানেই প্রাথমিক শিক্ষার হাতেখড়ি। পরবর্তীতে পড়াশোনা করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে। বিশ্ববিদ্যালয় জীবন থেকেই যুক্ত ছিলেন বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের সাথে। কর্মজীবনের শুরুতে কাজ করেছেন দুটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে। কয়েকটি জনপ্রিয় রিয়েলিটি-শো এর সহকারী প্রযোজক হিসেবে কাজ করার মাধ্যমে নিজের অভিজ্ঞতার ঝুলিকে করেছেন সমৃদ্ধ। কিন্তু এরপরই ব্যক্তিগত জীবনের নানা সংকটের কারণে কর্মজীবনের বাইরে ছিলেন বেশ কিছুদিনের জন্য। মাঝের সময়টায় কাজ করেছেন একটি ফ্রিল্যান্সিং অ্যাজেন্সির সাথে, নিজেকে প্রস্তুত করেছেন আবারও।

অবশেষে ২০১৬ সালে কর্মজীবনে ফিরে এসে যোগ দেন বেসরকারি এফএম রেডিও স্টেশন কালার্স এফএম ১০১.৬ এ। সেখানেই এখন কাজ করছেন পুরোদমে। শুরুটা সহকারী অনুষ্ঠান প্রযোজক হিসেবে হলেও পরবর্তীতে একজন পেশাদার আরজে হিসেবে কাজ শুরু করেন। পাশাপাশি পালন করছেন আরো কিছু দায়িত্ব। কর্মনিষ্ঠা এবং মেধা দিয়ে নিজের অবস্থানকে করেছেন সুদৃঢ়।

বাংলাদেশের এফএম রেডিও স্টেশনের ভবিষ্যৎ নিয়েও কথা বলেন তিনি। তার মতে, এই প্রতিযোগিতাপূর্ণ বিশ্বে একটি বিনোদন মাধ্যম হিসেবে টিকে থাকতে হলে যুগের সাথে তাল মিলিয়ে এফএম রেডিও স্টেশনগুলোকেও সেভাবে তৈরী হতে হবে। তার বিশ্বাস, রেডিও ইন্ডাস্ট্রি আবারো তার হারানো স্বর্ণযুগ ফিরে পাবে। ভবিষ্যতে তিনি কাজ করতে চান ফ্যাশন ডিজাইনিং নিয়ে৷ স্বপ্ন দেখেন নিজের একটি ফ্যাশন হাউজ গড়ে তোলার। এছাড়াও সুযোগ এবং পর্যাপ্ত অর্থসংস্থান পেলে পরিচালক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করার ইচ্ছা পোষণ করেন আশা।

বর্তমান প্রজন্মের তরুণদের মধ্যে অনেকেই আরজে হিসেবে কাজ করতে আগ্রহী হয়ে থাকেন। তার মতে, শেখার আগ্রহটাই একজন মানুষকে তার নিজ নিজ ক্ষেত্রে অনেক দূর নিয়ে যায়। এছাড়াও ভাষার উচ্চারণের শুদ্ধ প্রয়োগ এবং সাবলীল বাচনভঙ্গির উপর কাজ করার তাগিদ দেন তরুণদের। আরজে হিসেবে কাজ করতে চাওয়া নতুনদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, 'শুদ্ধ উচ্চারণ, একটি বিষয়ে কথা বলার মতো পর্যাপ্ত ধারণা এবং নান্দনিকতার চর্চাকে নিজের মধ্যে ধারণ করতে পারলে একজন ভালো আরজে হওয়া সম্ভব। তবে একজন ভালো মানুষ হওয়াটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। কেননা কাউকে আঘাত না করে সুন্দর করে গুছিয়ে কথা বলতে পারা একজন ভালো মানুষের সবচেয়ে বড় গুণ।'

সমাজের প্রতিটি স্তরে নারীরা এখন নিজ যোগ্যতায় সাফল্যের সাথে কাজ করছেন। আতিয়া আমান হক আশা যার একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। শুধু তাই নয়, কর্মক্ষেত্রে নারীরা এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি নিরাপদ। নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য এখন সবাই বেশ সচেতন যা সামগ্রিকভাবে সমাজের জন্য ইতিবাচক বলে মনে করেন তিনি। তিনি বলেন, 'কর্মক্ষেত্র শুধু নারীবান্ধব হলেই হবে না, সবার আগে হতে হবে মানুষবান্ধব। তাহলেই হয়তো নারীর প্রকৃত নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।'

ইত্তেফাক/এসটিএম