শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

আবৃত্তিতেই ভালোলাগা শ্রাবণীর

আপডেট : ১৪ জুন ২০২২, ১৬:০০

কবিতার ভাষায় স্রষ্টার সৃষ্ট জগৎকে নিয়ে লেখা বিখ্যাত থেকে নবীন কবিদের অজস্র কাব্য নানান সময়ে নানান জনের কন্ঠে শুনতে পাই। তবে কিছু কণ্ঠস্বর খুব আপন হয়ে হৃদয়ে গেঁথে দেয় সমস্ত সুখের সমন্বয়ে তৈরি আত্মতৃপ্তির মালা। তেমনই এক কন্ঠস্বরের অধিকারী শ্রাবণী আক্তার। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কল্যাণে অনেকের কাছেই তিনি হয়ে উঠেছেন পরিচিত এক মুখ।

পুরো নাম শ্রাবণী আক্তার। পরিবারের তিন ভাই-বোনের মধ্যে সবার বড় তিনি। পছন্দের বিষয় ইংরেজি সাহিত্য হলেও বাংলা শব্দের শুদ্ধ উচ্চারণে ঢের পটু। শৈশব কাটিয়েছেন কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলায়। চঞ্চল স্বভাবের মেয়েটি চার বছর বয়সেই কবিতা আবৃত্তিতে মঞ্চে আবির্ভাব ঘটান নিজের। এর আগে মায়ের কাছে কবিতার হাতেখড়ি। আবৃত্তির গুরু বলতে,  মা-ই ছিলেন তার দিকনির্দেশক। পাঠ্যবইয়ের থেকে জ্ঞান আহরণের উদ্দেশ্যে দাপিয়ে বেড়িয়েছেন কুমিল্লার বেশ কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। বর্তমানে তিনি একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি বিষয়ের স্নাতক তৃতীয় বর্ষে পড়াশোনা করছেন।

শৈশব থেকেই নিজেকে মেলে ধরেছেন শ্রাবণী। আরেকটি মজার ব্যাপার হলো স্কুলের সকল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের সর্বশেষ প্রতিযোগি হিসেবে থাকতো তার নাম, এর কারণটাও ছিল দারুণ। প্রধান শিক্ষকের উপস্থিতি পুরো অনুষ্ঠানে ধরে রাখতেই কিনা এমন কৌশল অবলম্বন করে থাকতেন স্কুলের আয়োজক কমিটি। কেননা প্রধান শিক্ষক তার আবৃত্তির মায়ায় নিজেকে হারিয়ে ফেলতেন। এখনো সেই বিষয়টি তাকে অনুপ্রেরণা এবং আনন্দ দেয়।

আললাইনে নিজেকে তুলে ধরবার ভাবনা প্রসঙ্গে বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে হঠাৎ দেখতে পান একটি অনলাইন প্লাটফর্মে আবৃত্তির প্রতিযোগিতা চলছিল। খুব আগ্রহের সাথেই সেখানে অংশ নেন এবং তৃতীয় স্থান অধিকার করেন। সেখান থেকে পাওয়া বেশ কিছু ইতিবাচক কমেন্টস নতুন কিছু করার শক্তি জুগিয়েছে। আর সেই অনুপ্রেরণা থেকেই তিনি আবারও আবৃত্তি শুরু করেন নতুন করে। বর্তমানে কবিতা আবৃত্তির পাশাপাশি সংবাদ পাঠিকা ও উপস্থাপিকা হিসেবে কাজ করছেন শ্রাবণী আক্তার।

শ্রোতাদের ভালোবাসা কতোটা উপভোগ্য জানতে চাইলে বলেন, প্রশংসা পেতে কার না ভালো লাগে! প্রতিদিন শ্রোতাদের একটা করে হলেও ভালো কমেন্ট পেলে সেটিই আমার এগিয়ে যাওয়ার সাহস, অনুপ্রেরণা এবং রসদ যোগাতে সহায়তা করে। নিজের কণ্ঠে প্রতিটি কবিতাই নিজের কাছে ভালো লাগে। প্রিয় কবির কথা জানতে চাইলে শ্রাবণী  বলেন, প্রিয় কবির নামটা একজনের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। আমাদের দেশের মধ্যে যারা বিখ্যাত হয়েছেন তারা তো তাদের অসাধারণ কাজের দ্বারাই ওই স্থানে গিয়েছেন। তাই তাদের সাথে অন্যদের তুলনা কখনোই হয় না। তবে আমি যেহেতু নবীন সুতরাং আমি সব সময় নবীনদের লেখাই পাঠ করবার চেষ্টা করি। যেমন স্বপ্নীল চক্রবর্তী, মৌমিতা তাসরিন প্রত্যয়, জান্নাত খুশবু, সুলতানা পারভিন সুমি এদের কবিতা বেশি পাঠ করবার প্রয়াস থাকে।

সবশেষে কবিতার মানুষটির কাছে জীবন এবং কবিতার সংজ্ঞা জানতে চাইলে বলেন, জীবনের মানে হলো আল্লাহর দেওয়া শ্রেষ্ঠ উপহার। এবং নিজের মনকে প্রাধান্য দেওয়া। আর কবিতা হচ্ছে মানুষের অব্যক্ত কিছু বাক্য যা কবিতার মাধ্যমে তুলে ধরা হয় এবং কবিতা মানে হচ্ছে একটা বার্তা। আর সেই বার্তা গুলো যদি হয় ইতিবাচক তাহলে তা অবশ্যই মানুষের উপর ভালো প্রভাব ফেলবে বলে তার বিশ্বাস।

ইত্তেফাক/এসটিএম