বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

দোয়া কবুলের মাস রমজান 

আপডেট : ২৮ এপ্রিল ২০২০, ২১:০২

মহান আল্লাহতায়ালা সব সময়ই অপেক্ষায় থাকেন বান্দার দোয়া গ্রহণের জন্য। বিশেষ করে রমজানে তিনি অধির আগ্রহে থাকেন তার বান্দা যেন তার দিকে ফিরে আসে। মহান রাব্বুল আলামিনের কাছ থেকে চেয়ে নেয়ার মাস রমজান। যে যত বেশি চাইতে পারে, আল্লাহতায়ালা তাকে তত বেশি দান করেন। 

পবিত্র কোরআনে আল্লাহতায়ালা বলেন ‘তোমরা আমাকে ডাক, আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দেব। কিন্তু যারা আমার ইবাদত সম্বন্ধে অহংকার করে, তারা নিশ্চয় লাঞ্ছিত হয়ে জাহান্নামে প্রবেশ করবে’ (সুরা মোমেন, আয়াত: ৬০)। 

আল্লাহতায়ালা আরো বলেন, ‘আর যা কিছু তোমরা তার কাছে চেয়েছো তিনি তোমাদের সব দিয়েছেন এবং যদি তোমরা আল্লাহর নেয়ামত সমূহ গণনা করতে চাও তাহলে তোমরা সেগুলোর সংখ্যা নিরূপণ করতে পারবে না’ (সুরা ইব্রাহিম, আয়াত: ৩৪)। 

এই আয়াতদ্বয় থেকে স্পষ্ট প্রমাণ হয়, মহান আল্লাহতায়ালা তার বান্দার দোয়া গ্রহণ করার জন্য অধির আগ্রহে অপেক্ষা করেন। কখন তার বান্দা তাকে ডাকবে আর তিনি তা গ্রহণ করবেন এবং তার দু:খ-কষ্ট দুর করবেন। 

তিনি সবার খুবই নিকটে রয়েছেন, যেভাবে কোরআনে উল্লেখ রয়েছে ‘আর যখন আমার বান্দাগণ আমার সম্বন্ধে তোমাকে জিজ্ঞেস করে, তখন বল, আমি নিকটে আছি। আমি প্রার্থনাকারীর প্রার্থনার উত্তর দেই যখন সে আমার নিকট প্রার্থনা করে। সুতরাং তারা যেন আমার ডাকে সাড়া দেয় এবং আমার ওপর ঈমান আনে যাতে তারা সঠিক পথপ্রাপ্ত হয়’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৮৬)। 

এ আয়াত থেকে যে বিষয়টি অনুধাবন করা যায়, তাহলো তিনি প্রার্থনাকারীর প্রার্থনার উত্তর দিয়ে থাকেন। আমারা যদি প্রকৃতভাবে তাকে ডাকি তাহলে অবশ্যই তিনি আমাদের ডাকে সাড়া দিবেন। আমরা যদি বিনীতভাবে প্রার্থনা করি তাহলে হয়তো তিনি বিশ্ব থেকে সকল বালা-মুসিবত দূর করে দিবেন। 

আমরা জানি বিশ্বনবী ও সর্বশ্রেষ্ঠ নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর সব কিছুই ছিল আল্লাহতায়ালার সন্তুষ্টির জন্য। তাইতো তিনি (সা.) সবসময় আল্লাহর মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতেন। তার (সা.) দোয়ার বরকতে লক্ষ লক্ষ আধ্যাত্মিকভাবে মৃতরা জীবন ফিরে পেয়েছে। আধ্যাত্মিক অন্ধরা দৃষ্টি ফিরে পেয়েছে, বোবাদের মুখে ঐশী তত্ত্ব-জ্ঞান ফুটেছে এবং বংশ পরম্পরায় পথভ্রষ্টরা ঐশী রং ধারণ করার যোগ্য হয়েছে। আমরা যদি প্রকৃতভাবে সেই মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের বান্দা হই যিনি আমাদেরকে কেবলমাত্র তার ইবাদতের উদ্দেশ্যে সৃষ্টি করেছেন তাহলে তিনি অবশ্যই আমাদের ডাকেও সাড়া দেবেন। 

আরো পড়ুন: রোজা দৈহিক ও আধ্যাত্মিক রোগমুক্তির কারণ

আল্লাহতায়ালা দোয়া কবুল করবেন এবং করার ক্ষমতা রাখেন, এই দৃঢ় বিশ্বাস নিয়ে দোয়া করতে হবে এবং আল্লাহর রহমত হতে নিরাশ হওয়ার অবকাশ নেই। দোয়া করার পূর্বে নিজ শরীর, কাপড়-চোপড় এবং পরিবেশ পবিত্রতার প্রতিও লক্ষ্য রাখা প্রয়োজন। কেননা, আল্লাহতায়ালা পবিত্র, তাই তিনি পবিত্রতাকেই বেশি পছন্দ করেন। দোয়ার জন্য এক নীরব নিস্তব্ধ কোলাহলমুক্ত পরিবেশ বেছে নেয়া দরকার যাতে দোয়ার মাঝে পূর্ণ একাগ্রতা সৃষ্টি হয়। 

বর্তমান বিশ্বব্যাপী মহামারি করোনা ভাইরাসের কারণে বিশ্ব পরিস্থিতি অত্যন্ত ভয়াবহ। তাই দয়াময় আল্লাহর দরবারে আমাদের সবার বিনীত প্রার্থনা করতে হবে তিনি যেন সকল প্রকার বালা-মুসিবত থেকে আমাদের দেশের সকল জনগণকে নিরাপদ রাখেন আর বিশ্ব করেন করোনামুক্ত। 

আল্লাহতায়ালা আমাদের সকলকে এই পবিত্র মাহে রমজানে অনেক বেশি দোয়া করার তৌফিক দান করুন, আমিন।

লেখক: ইসলামী গবেষক ও কলামিস্ট

ইত্তেফাক/এএএম

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন