বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

২১৮ বছরের ঐতিহ্য বহন করছে তিন কাতার মসজিদ

আপডেট : ১৭ জানুয়ারি ২০২১, ১৬:১৯

রংপুর থেকে মিঠাপুকুর সদরে যাবার আগে পশ্চিমে একটি রাস্তা চলে গেছে দিনাজপুর ফুলবাড়ির দিকে। সুন্দর পিচ আর পাথর গলানো সবুজে ছাওয়া সে রাস্তার কিছুটা পেরুলে হাতে বামে অর্থাৎ দক্ষিণে একটু দূরে সুন্দর লাল ইট রঙের একটা পুরনো মসজিদ চোখে পড়বে। মসজিদটি এখন মিঠাপুকুর মসজিদ নামে পরিচিত। আবার অনেকেই একে মিঠাপুকুর বড় মসজিদ আবার অনেকেই মিঠাপুকুর তিন কাতার মসজিদ বলে।

ইতিহাস সূত্রে জানা গেছে, ১২২৬ হিজরি বা ১৮০২ খ্রিস্টাব্দে জনৈক শেখ মোহাম্মদ সাবেরের পুত্র শেখ মোহাম্মদ আছের এই মসজিদটি নির্মাণ করেন। মসজিদের সামনে লাগানো তথ্য প্রাচীরে সুস্পষ্ট করে লেখা আছে ১৮০২ খ্রিস্টাব্দের কথা কিন্তু উইকিপিডিয়া সহ বেশ কিছু স্থানে এর নির্মাণ সময় ১৮১০ খ্রিস্টাব্দ বলা হয়েছে। মসজিদের আয়তকার তিন গম্বুজ বিশিষ্ট এই মসজিদটি। মসজিদের চার কোণে চারটি স্তম্ভ যা ছাদের কর্ণার থেকে বেশ উপরে উঠে তদানীন্তন মুসলিম সভ্যতার নির্মাণ শৈলী পরিস্ফুটন হিসেবে। এটি ছোট গম্বুজের মতো কিউপোলা আকারে শেষ হয়েছে। আয়তকার মসজিদটি দুটি ল্যাটারাল খিলানের সাহায্যে তিন ভাগে ভাগ করে ওপরে নির্মাণ করা হয়েছে তিনটি গোলাকার গম্বুজ। মসজিদের পূর্ব দিক দিয়ে তিনটি এবং উত্তর ও দক্ষিণে একটি করে মোট পাঁচটি প্রবেশ পথ থাকলেও এখন পূর্ব দিকের মাঝের পথটি ব্যবহার করা হয়। 

আরও পড়ুন: প্রথম দিনেই ডজনখানেক নির্বাহী আদেশ দেবেন বাইডেন

তিন গম্বুজ বিশিষ্ট আয়তকার এই মসজিদটি আকার ১০ দশমিক ৬৬ মিটার ৪ দশমিক ১১ মিটার। মসজিদের তিন মিহরাব, সামনের দেয়াল, প্যারাপেট দেয়াল ও গম্বুজের গোলাকার অংশে দৃষ্টিনন্দন নকশা দিয়ে আবৃত করা হয়েছে। কিছু প্যানেল করা আছে। নকশায় লতাপাতা, ফুল ও জ্যামিতিক আবহ ফুটে উঠেছে। খুব আকর্ষণীয় এর মূল প্রবেশ দরজা। বাংলাদেশের নিজস্ব স্থাপত্য বৈশিষ্ট্যকে ধারণ করে দোচালা আকৃতির এই দরজা মসজিদে পূর্ব দিকের দেয়ালের মাঝে নির্মিত। বর্তমানে নিরাপত্তার কারণে দৃষ্টি নন্দন লোহার গ্রিলের দরজা সেখানে লাগানো আছে। মূল দরজা দিয়ে ঢুকে সুন্দর একটি উঠোন বা বারান্দা।ফ্যাকাসে লালচে ইট রঙের মসজিদটি চারদিকে সবুজ ক্ষেত-ফসলের মাঝে অপূর্ব লাগে। ফিরে যায় ২১৮ বছর আগের রংপুরে। 

ইত্তেফাক/এমএএম

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন