শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

‘অনন্যা’ সাহিত্য পুরস্কার ১৪২৭ পাচ্ছেন ঝর্ণা রহমান

আপডেট : ০৫ মার্চ ২০২১, ১৩:০০

বাংলা ভাষার কথাসাহিত্যে বিশেষ অবদান রাখার জন্য ‘অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার-১৪২৭’ পেতে যাচ্ছেন বিশিষ্ট লেখক ঝর্ণা রহমান। তিনি একাধারে ঔপন্যাসিক, গল্পকার, কবি, প্রাবন্ধিক, সম্পাদক ও সাহিত্য সংগঠক। আগামী ১৬ মার্চ বিকালে জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে তার হাতে আনুষ্ঠানিকভাবে এই পুরস্কার তুলে দেওয়া হবে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন কথাসাহিত্যিক অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম এবং বিশেষ অতিথি থাকবেন গবেষক অধ্যাপক বেগম আকতার কামাল। সভাপতিত্ব করবেন অনন্যা-সম্পাদক তাসমিমা হোসেন।

ঝর্ণা রহমানের জন্ম ১৯৫৯ সালে। গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ-নিবন্ধ, নাটক, কবিতা, ছড়া, ভ্রমণ, শিশুসাহিত্য, সংগীত—সবক্ষেত্রেই তার কমবেশি বিচরণ। তবে গল্পকার হিসেবে তিনি বিশেষভাবে পরিচিত। তার সাহিত্যের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো তিনি বিশদ বিবরণের ভেতর দিয়ে সমাজ ও ব্যক্তিমানসের নানা সংকট উন্মোচন করেন। তার আখ্যানরীতি এবং বর্ণনাশৈলী যেমন স্বতন্ত্র তেমনই ঋদ্ধ। নারী-পুরুষের সম্পর্ক, নারী জীবনের অন্তর্গত বেদনা তার সাহিত্যের প্রিয় বিষয় হলেও তিনি দেশজ এবং সামাজিক প্রায় প্রতিটি অনুষঙ্গকে তার সাহিত্যের বিষয় করে তুলেছেন।

তার উল্লেখযোগ্য গল্পগ্রন্থ :ঘুম-মাছ ও এক টুকরো নারী, অগ্নিতা, স্বর্ণতরবারি, কৃষ্ণপক্ষের ঊষা, পেরেক, জাদুবাস্তবতার দুই সখী, বিপ্রতীপ মানুষের গল্প, বিষপিঁপড়ে, তপতীর লাল ব্লাউজ, আয়নামামি। অনূদিত গল্পগ্রন্থ :‘ডাউন অব দ্যা ওয়েনিং মুন’, উপন্যাস: পিতলের চাঁদ, ভাঙতে থাকা ভূগোল, কাব্যগ্রন্থ :জল ও গোলাপের ছোবল, হরিত্ রেহেলে হূদয়, চন্দ দহন, নাট্যকাব্য :উড়ন্ত ভায়োলিন। কিশোর উপন্যাস :আদৃতার পতাকা, হাতিমা ও টুনটুনি, নাটক :বৃদ্ধ ও রাজকুমারী, ভ্রমণ :আমরা যখন নেপালে।

১৯৮০ সালে বাংলাদেশ পরিষদ আয়োজিত একুশে সাহিত্য পুরস্কার প্রতিযোগিতায় ছোটগল্পে জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্তির মধ্য দিয়ে সাহিত্যে আত্মপ্রকাশ। এ পর্যন্ত তার প্রায় ৬০টির মতো গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর ঝর্ণা বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ পাবলিক কলেজের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক হিসেবে সম্প্রতি অবসরে গেছেন। তিনি সাহিত্যসংগঠন ‘পরণকথা’র অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। এছাড়া তিনি ছোট কাগজ ‘পরণকথা’ এবং ‘ত্রৈমাসিক অগ্রসর বিক্রমপুর’-এর সম্পাদক।

উল্লেখ্য, বাংলা ১৪০১ সন (১৯৯৩ সাল) থেকে অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার প্রবর্তন করা হয়েছে। প্রতি বছর একজন নারী-সাহিত্যিককে সাহিত্যে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ এ পুরস্কার প্রদান করা হয়। এ পর্যন্ত যারা এই পুরস্কার পেয়েছেন তারা হলেন—সেলিনা হোসেন, রিজিয়া রহমান, ড. নীলিমা ইব্রাহিম, দিলারা হাশেম, রাবেয়া খাতুন, ড. সন্জীদা খাতুন, শহিদ জননী জাহানারা ইমাম (মরণোত্তর), নূরজাহান বেগম, রাজিয়া খান, রুবী রহমান, পূরবী বসু, আনোয়ারা সৈয়দ হক, মকবুলা মনজুর, ঝর্ণাদাশ পুরকায়স্থ, সালেহা চৌধুরী, নূরজাহান বোস, মালেকা বেগম, কাজী রোজী, ড. নিয়াজ জামান, জাহানার নওশিন, সোনিয়া নিশাত আমিন, বেগম মুশতারি শফি, বেগম আকতার কামাল, আকিমুন রহমান ও নাদিরা মজুমদার।

ইত্তেফাক/জেডএইচডি