শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

একই গ্রন্থে মুক্তির ৫০ গল্পে দুই প্রজন্ম

আপডেট : ১৫ মার্চ ২০২১, ১২:০২

স্বাধীনতার আগের ও পরের প্রজন্মের চিন্তার মধ্যে ফারাক রয়েছে। ভিন্নতা রয়েছে ওই সময়ে ঘটে যাওয়া ঘটনা বিশ্নেষণের। এক দল সরাসরি দেখেছে মুক্তিযুদ্ধ, আরেক দল শুনে অনুভব করেছে সেই সময়কে। এ দুটি আলাদা প্রজন্ম একই ফ্রেমে বাঁধা পড়েছে ‌‘মুক্তির ৫০ গল্পে দুই প্রজন্ম’ গল্প সংকলনে।

গল্প সংকলনের প্রকাশনা অনুষ্ঠান শনিবার সকালে জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান।সংকলনটি সমৃদ্ধ হয়েছে দুই প্রজন্মের কথাসাহিত্যিকদের লেখায় আখতারুজ্জামান ইলিয়াস, শওকত আলী, সৈয়দ শামসুল হক, শওকত ওসমান, হাসান আজিজুল হক, রিজিয়া রহমান, সেলিনা হোসেন বা হুমায়ূন আহমেদের মতো মুক্তিযুদ্ধ দেখা শক্তিশালী কথাসাহিত্যিকদের লেখা দিয়ে। আবার এতে স্থান পেয়েছে ইমতিয়ার শামীম, আহমাদ মোস্তফা কামাল, প্রশান্ত মৃধা, শাহীন আখতার, শাহনাজ মুন্নি, মাহবুব আজীজ বা রুমা মোদক, নাহিদা নাহিদ এবং যুদ্ধ-পরবর্তী প্রজন্মের কথাসাহিত্যিকদের লেখা গল্পও। এসব গল্পের অধিকাংশ লেখা হয়েছে সত্য ঘটনা অবলম্বনে।

দুই প্রজন্মের ২৫টি করে গল্পের সংকলনটি সম্পাদনা করেছেন কথাসাহিত্যিক রোকেয়া ইসলাম ও নূর কামরুন নাহার। রাজীব রায়ের করা প্রচ্ছদে বইটি প্রকাশ করেছে ফেরারি প্রকাশনী। সমবেত জাতীয় সংগীত গাওয়ার মধ্য দিয়ে শুরু হয় অনুষ্ঠানের প্রথম পর্ব। দ্বিতীয় পর্বে গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করেন অতিথিরা। এ সময় অতিথিদের ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়ে উত্তরীয় পরিয়ে দেন প্রশিকা কর্মীরা। পরে বইটি নিয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান বলেন, 'স্বাধীনতাবিরোধীদের প্রতিহত করতে হলে এ ধরনের বই আরও আসতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধরে রাখার জন্য ইতিহাসকে সমৃদ্ধ করা এ বইগুলো আরও বেশি প্রকাশিত হওয়া দরকার। যে কোনো যুদ্ধে অস্ত্রের যেমন প্রয়োজন, তেমনি প্রয়োজন সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয়তার।'

প্রশিকা মানবিক উন্নয়ন কেন্দ্রের গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান রোকেয়া ইসলামের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন এনজিও ব্যুরোর মহাপরিচালক রাশেদুল ইসলাম, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মকবুল হোসেন এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সাংবাদিক হারুন হাবিব। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন কথাসাহিত্যিক ঝর্না রহমান, বাংলাদেশ লেখিকা সংঘের সভাপতি দিলারা মেজবাহ, বীর মুক্তিযোদ্ধা ফরিদুর রহমান, নূর কামরুন নাহার, কথাসাহিত্যিক ম্যারিনা নাসরিন, সাংবাদিক আ ফ ম ফয়সাল প্রমুখ। মুসতাক মুকুলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন প্রশিকার প্রধান নির্বাহী সিরাজুল ইসলাম।

নূর কামরুন নাহার বলেন, অনেক লেখক আছেন, একাত্তরে যারা সরাসরি যুদ্ধে অংশ নেওয়া বা প্রত্যক্ষ করার পাশাপাশি কলমসৈনিক হয়ে লিখে গেছেন। আবার আমাদের তরুণ প্রজন্মের লেখকও আছেন, যারা সরাসরি যুদ্ধ দেখেননি বা অংশ নেননি, অন্যদের কাছে থেকে শুনে অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন। আমরা এ দুই প্রজন্মের ২৫ জন করে লেখকের গল্প বইয়ে সংকলনের মাধ্যমে তাদের মুক্তিযুদ্ধকে দেখার দৃষ্টিভঙ্গি ও চিন্তাকে এক মলাটে বন্ধ করার চেষ্টা করেছি।

আলোচনা সভা শেষে একজন নারীর মুক্তিযোদ্ধা হয়ে ওঠার বীরত্বগাথা 'বীর পিয়ার চাঁদ' মঞ্চায়িত হয়। কুমার প্রীতিশ বলের রচনায় নাট্যপালাটি নির্দেশনা দিয়েছেন দেবাশীষ ঘোষ।

ইত্তেফাক/কেকে