শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

ইউটিউবের খেলনার সুফল-কুফল যত

আপডেট : ১১ ডিসেম্বর ২০১৯, ১৭:৫৬

বর্তমানে শিশুরা ঘরে বসেই দেশ-বিদেশের খেলনা সম্পর্কে জানতে পারে। তাদের সামনে এই সুযোগ এনে দিয়েছে ইউটিউব। নতুন নতুন খেলনার বিস্তারিত পর্যালোচনার ভিডিওগুলো ইউটিউবে প্রচারের সঙ্গে সঙ্গে তা লাখো শিশু দেখে ফেলে।

মূলত শিশুদের নিয়ে তৈরি ভিডিওর মাধ্যমে এসব খেলনা বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে শিশুদের কাছে পৌঁছে যায়। প্যাকেট থেকে নতুন খেলনা বের করা থেকে শুরু করে এগুলো নিয়ে খেলার যত কৌশল রয়েছে সব কিছুরই বিস্তারিত বর্ণনা থাকে এসব ভিডিওতে। ফলে ইউটিউবের এসব ভিডিও শিশুদের মন্ত্রমুগ্ধের মতো আবিষ্ট করে রাখে। অনেক বাবা-মা সন্তানকে খাওয়ানোর ‘অস্ত্র’ হিসেবেও এসব ভিডিওকে কাজে লাগায়। তবে ইউটিউবের এসব ভিডিও’র সুফল-কুফল নিয়ে অনেক ধরনের মতামত চালু হয়েছে।

শৈশবকালীন খেলাধুলা নিয়ে গবেষণাকারী, ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী গবেষক ডেভ নেল বিশ্বাস করেন, এসব ভিডিও-র একটি ইতিবাচক দিক আছে; যদি সেটা শিশুদের খেলনা নিয়ে খেলা করতে উত্সাহিত করে এবং সেগুলো ভালোভাবে বুঝতে সাহায্য করে। শৈশবে খেলা করাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটা শিশুদের ভাষা শিক্ষা দেয় এবং আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে শেখায়, কীভাবে অন্যদের সঙ্গে ভাগাভাগি এবং যোগাযোগ করতে হয়, যা আসলে সম্পর্কের অভিজ্ঞতা তৈরি করে। সুতরাং খেলা করতে উত্সাহিত করে এমন সব কিছুই ভালো।

আরো পড়ুন: মিয়ানমারের সেনাপ্রধানসহ ৪ সেনা কর্মকর্তার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা

তবে ইউটিউবের খেলনার ভিডিওতে মেতে থাকা শিশু-কিশোরদের পারস্পরিক যোগাযোগ এবং সামাজিকতার অভাবের বিষয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন অধ্যাপক ডেভ নেল। তার মতে, যখন শিশুরা খেলনা নিয়ে খেলা করে তখন তারা সমস্যা সমাধান এবং সৃষ্টিশীল মনোভাবের থাকে, তারা নিজেরা জানার চেষ্টা করে কীভাবে খেলনাটি কাজ করে অথবা এটা নিয়ে আর কী করা যেতে পারে। এসব ভিডিও দেখার ফলে তাদের আর সেটা করা হয় না।

ইউটিউবে ভিডিও দেখার ফলে বাচ্চাদের মধ্যে সেই খেলনা হাতে পাওয়ার একটা তাগিদ থাকে। আর অনেক সময়ই এসব খেলনা বেশ দামি হয়। এ কারণে যদি সেই খেলনা কিনে দেওয়া সম্ভব না হয় তাহলে শিশুরা অপ্রাপ্তির কষ্টে ভোগে। আরো একটি সমস্যা হলো—এসব ভিডিও এত লম্বা যে শিশুটা তখন আর অন্য কোনো দিকেই তাদের চোখ সরাতে চায় না। এসব খেলনার ভিডিও অল্পবয়সী শিশুদের উদ্দেশ্যে বানানো যেখানে শিশুদের অনেক ভাষা ব্যবহার করা হয়। বাচ্চারা যখন এসব ভিডিও দেখে, তারাও সেসব শব্দ বলতে থাকে, অনেক সময় তারা বুঝতে পারে না এসব শব্দের ব্যবহার কীভাবে করা উচিত। অনেক মায়ের অভিযোগ, এ ধরনের বিষয়গুলো অনেক সময় আসক্তির জন্ম দিতে পারে। এই অভিজ্ঞতা অনেকটা সম্মোহনী শক্তির মতো এবং এসব ভিডিও দেখার ফলে শিশুদের আচরণে নেতিবাচক প্রভাব বলে অনেক অভিভাবক অভিযোগ করেছেন।

ব্রাজিলে শিশুদের জন্য কোনোরকম বিজ্ঞাপন দেওয়া অবৈধ। সেখানকার সরকারি কৌঁসুলি ইউটিউবের এসব ভিডিওর বিষয় ধরে একটি মামলা করেছেন। ইউটিউবের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে, এর মাধ্যমে শিশুদের উদ্দেশ্যে অপব্যবহারমূলক বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে।—বিবিসি

ইত্তেফাক/এমআরএম

 

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন