বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

ভারতের অ্যাপ নিষেধাজ্ঞা বিশ্বব্যাপী চীনের প্রযুক্তি বিস্তারের জন্য হুমকি

আপডেট : ০৩ জুলাই ২০২০, ০৯:০২

টিকটক হলো বিশ্বব্যাপী চীনের ছড়িয়ে যাওয়ার শীর্ষ সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপ। পশ্চিমা দেশগুলো মনে করছেন, এটি বিপজ্জনক হতে পারে। সম্প্রতি ভারত চীনভিত্তি অ্যাপগুলো বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে।

ভারত যদি এই উপায়টি কার্যকর করার সঠিক উপায় খুঁজে পায়, তবে ইউরোপ থেকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যান্য দেশেগুলোর জন্য একটি মডেল স্থাপন করা হবে। এতে করে নাগরিকদের প্রচুর মূল্যবাণ ডাটা সুরক্ষিত করা সম্ভব হবে। এ কারণেই চীনা অ্যাপ বর্জনের মতো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে চায়। চীন গত দশক ধরে গুগল ও ফেসবুকের বিকল্প অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ও সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করছে। বর্তমানে আলিবাবা হোল্ডিংস কর্পোরেশন এর মাধ্যমে তারা এখন নিজস্ব বৃহত্তম টেক কর্পোরেশনের স্বত্ত্বাধিকারী হয়েছে।

চীনের ৫৯ অ্যাপের উপর ভারতের নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্ত দেশটির প্রযুক্তি জায়ান্টদের জন্য একটি সতর্ক বার্তা। শাওমি কর্পোরেশন থেকে প্রায় ২০০ মিলিয়ন ব্যবহারকারী টিকটকে সাইন-আপ করেছিল। শাওমি, আলিবাবা ও টেনসেন্ট তাদের সেবা আপাতত স্থগিত রেখেছে।

ভারতের এমন সিন্ধান্তে সমস্ত সাফল্য হুমকিতে পড়তে পারে। আমেরিকা ভারতে ফাইভজি নিয়ে হুয়াওয়ের প্রযুক্তি কার্যক্রম বন্ধ করার জন্য উত্সাহিত করছে।

সিঙ্গাপুরভিত্তিক গবেষণা সহযোগী অ্যালেক্স ক্যাপ্রি বলেছেন, ‘টেকনো জাতীয়তাবাদ ও ভূ-রাজনীতির সকল ক্ষেত্রে ক্রমবর্ধমানভাবে আত্মপ্রকাশ করবে। জাতীয় সুরক্ষা, অর্থনৈতিক প্রতিযোগীতা, এমনকি সামাজিক মূল্যবোধও এগুলোর মধ্যে রয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘চীনের প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোকে সিসিপি ও চীনের ভূ-রাজনীতির উচ্চাকাঙ্খা থেকে বিরত রাখা কঠিন হয়ে উঠবে। তারা নিজেদেরই আটকে পরা অবস্থায় দেখতে পাবে।’ টিকটক, টেনসেন্টস-এর ইউচ্যাট, আলিবাবার ইউসি ওয়েব এবং বাইদুর ম্যাপ ও অনুবাদ সার্ভিস সার্বভৌমত্ব এবং সুরক্ষা হুমকির মুখে পড়তে পারে ভেবে ভারত এগুলোকে বর্জনের সিদ্ধান্তে এগিয়ে আসে।

চীন-ভারতের উত্তেজনা অব্যাহত

এটি এখনও পরিষ্কার নয় যে, ভারত তাদের সিদ্ধান্ত কীভাবে বাস্তবায়ন করবে। প্রদত্ত টিকটক ইতোমধ্যে প্রতি ছয় জনের মধ্যে একজন ডাউনলোড করেছেন। তবে, দেশটিতে চীনের উপস্থিতি রোধে ভারতের একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে দেখা গিয়েছে। হিমালয় সিমান্তে একটি সংঘর্ষে ২০ ভারতীয় সেনার মৃত্যুর পর ভারতে দীর্ঘদিন ধরে উত্তেজনা বিরাজ করছে। এর পর থেকেই প্রশাসনের কঠোর অবস্থান সংকল্প দেখা যাচ্ছে। দেশটিতে সরকারি ওয়েবসাইটে চীনা পণ্য ক্রয় নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কর্তৃপক্ষ বড় ই-কমার্স কোম্পানিগুলোর মধ্যে অ্যামাজন ডটকম ইনক, ওয়ালমার্ট ইনক এর ফ্লিপকার্টে তাদের বিক্রিতে পণ্যগুলোর উেসর দেশগুলোর নাম উল্লেখ করতে বলেছে। এবং আরও বলেছে, চীন থেকে আমদানি পণ্যগুলো সরিয়ে ফেলতে।

টিকটকের আধিপত্য ধরে রাখতে লড়াই ইউটিউবে

আপতত বিকল্প গ্রহণের মতো দূর্দান্ত কোনো সুযোগ নেই। ইউরেশিয়া গ্রুপের বিশ্লেষকরা একটি গবেষণা নোটে লিখেছেন, যদিও চীন অর্থনৈতিক যুদ্ধে অনেক পারদর্শী। এ ক্ষেত্রে পারস্পরিক পদ্ধতিতে কাজ করা কিছুটা বিকল্প রয়েছে। দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের কারণে রফতানি স্বাভাবিক থাকলেও এখন এর উপর বাধা আসবে এবং অর্থনীতির দিক থেকে চীন অনেক পিছিয়ে পড়তে পারে।

সূত্র :হিন্দুস্তান টাইমস

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন