বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

ভিপিএন নিয়ে আমাদের যত ভুল ধারণা

আপডেট : ১৮ অক্টোবর ২০২০, ০৬:৫২

ভিপিএন, যার পূর্ণ নাম ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক — যখনই কথা বলা হয় অনলাইন সিকিউরিটি আর প্রাইভেসি নিয়ে, ভিপিএন এর কথা সবার আগেই সামনে চলে আসে। পেছনের কয়েক বছর আপনি যদি কোন আদিম গুহাই বাস না করে থাকেন তাহলে বিভিন্ন ওয়েবসাইটে, আপনার পছন্দের ইউটিউবারদের ভিডিওতে, নানান জায়গায় নানান ভাবে ভিপিএন এর বিজ্ঞাপন দেখে থাকবেন।

যতদিন যাচ্ছে, ভিপিএন কোম্পানি গুলো পানির মত টাকা উড়াচ্ছে বিজ্ঞাপনের পেছনে আর আমি ও আপনি চোখ বন্ধ করে ভিপিএন সার্ভিস গ্রহণও করছি। তবে একটু দাঁয়ান, আমি শুরুতেই বলে নিচ্ছি, এই আর্টিকেলে কোন ভিপিএন কোম্পানি বা সম্পূর্ণ ভিপিএন সার্ভিসের বিপক্ষে কিছু লিখতে বসিনি। ভিপিএন সত্যিই পয়োজনীয় জিনিস, তবে ২০২০ সালে এসেও এটা কতটা মূল্য রাখে এই ব্যাপারেই আলোচনা করবো। তো চলুন, ভিপিএন সম্পর্কে কিছু চরম সত্যতা গুলো জেনে নেওয়া যাক—

ভিপিএন মানেই মিলিটারি সিকিউরিটি

ভিপিএন কোম্পানীরা তাদের বিজ্ঞাপনে প্রায়ই এটা মেনশন করে থাকে যে, তারা মিলিটারি গ্রেড সিকিউরিটি প্রোভাইড করে। আপনার সম্পূর্ণ ইন্টারনেট ট্রাফিক এনপ্রিপ্টেডকরিয়ে এক গোপন ট্যানেলের মধ্যে দিয়ে সার্ভারের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। এতে মাঝখানে হ্যাকার বা আপনার আইএসপি স্বয়ং চেষ্টা করলেও আপনার ইন্টারনেট প্যাকেজগুলো ডিকোড করতে পরবে না। ভিপিএন সত্যিই এই কাজ করে, ডাটা এনক্রিপ্টেড করিয়ে সিক্রেট ট্যানেলের মধ্য দিয়েই ট্রান্সমিট করে, কিন্তু ব্যাপারটা স্পেশাল আর কোন ব্যাপার নেই। কেননা আপনি হয়ত লক্ষ করে থাকবেন; গুগল, ইউটিউব, জিমেইলসহ প্রায় যেকোনো ওয়েবসাইট প্রবেশ করলেই ব্রাউজারের এড্রেসবারের কোনায় একটি সবুজ তালার চিহ্ন উঠে থাকে। এরমানে ঐ ওয়েবসাইটটি এইচটিটিপিএন প্রটোকল ব্যাবহার করে কাজ করছে। যেসকল ওয়েবসাইট এখনো এইচটিটিপিএস প্রটোকলে পরে রয়েছে, আপনার ব্রাউজারের অ্যাড্রেসবার থেকে সহজেই দেখতে পারবেন, সেগুলোর পাশে ‘নো সোর্স’ লেখা থাকে। আপনি সেই ওয়েবসাইট গুলো থেকে এড়িয়ে চললেই কাজ শেষ।

ভিপিএন আইএসপির নজরদারি থেকে বাঁচায়

যেহেতু আপনার প্রত্যেকটি ইন্টারনেট ট্রাফিক আইএসপি ই সার্ভারের দিকে সেন্ড করে, সুতরাং আপনার সম্পূর্ণ ইন্টারনেট অ্যাক্টিভিটির উপরে আইএসপি সহজেই নজর রাখতে পারে এবং আপনার উপরে প্রোফাইল তৈরি করতে পারে। পরে আইএসপি আপনার প্রাইভেট ডাটা গুলো তৃতীয় পক্ষ কোন কোম্পানির কাছে বিক্রি করে দিতে পারে। আপনি যদি ভিপিএন ব্যাবহার করেন, সেক্ষেত্রে আপনার আইএসপি নিজেই জানবে না আপনি কোন ওয়েবসাইটে ভিজিট করছেন বা কোন ভিডিও স্ট্রিমিং করছেন।

ভিপিএন ব্লক সাইটগুলো আনব্লক করতে সাহায্য করে

এটা একটা ভ্যালিড কারণ হতে পারে ভিপিএন ব্যাবহার করার। ইদানিং আমাদের দেশে কারণে অকারণে অনেক ওয়েবসাইট এবং অনলাইন সার্ভিস সরকার দ্বারা ব্লক করা হচ্ছে। রেডিট, ব্লগার ডট কম, গুগল ক্লাউড ডোমেইন, মিডিয়ামের মতো ব্লগ গুলো অকারণে বন্ধ করছে সরকার। তো এগুলোকে ব্যাবহার করার জন্য ভিপিএন ব্যাবহার করা যেতে পারে।

অথবা এমন কোন অনলাইন সার্ভিস যেটা আপনার দেশে নেই, সেটা আনব্লক করার জন্যও ভিপিএন ভালো সলিউশন। তবে এক্ষেত্রে ভিপিএন কিন্তু একমাত্র সলিউশন নয়। আপনি প্রক্সি, টর, ওয়েব প্রক্সি ব্যাবহার করেও এই কাজ গুলো চালিয়ে নিতে পারেন, যদি ভিপিএন এর প্রাইস আপনার কাছে অনেক বেশি মনে হয় আর সেখানে যদি প্রাইভেট কোন কাজ জড়িত না থাকে।

ইত্তেফাক/এএএম

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন