আজকাল একেবারে নতুন ল্যাপটপ কেনা বেশ খরচ সাপেক্ষ। অন্যদিকে কম দামে সেইরকম ল্যাপটপও বাজারে পাওয়া যায় না। তাই অনেকে ল্যাপটপের বদলে ক্রোমবুক কিনছেন। কিন্তু ক্রোমবুক কি ল্যাপটপের সমান কাজ করে? কী কী সুবিধা, অসুবিধা আছে?
ল্যাপটপ বা ক্রোমবুক কেনার পূর্বে আপনি নিশ্চিত হয়ে নিন যে ঠিক কী কাজের জন্য আপনি সেটি কিনতে যাচ্ছেন। কেনার আগে কয়েকটি বিষয় অবশ্যই খেয়াল রাখুন।
ক্রোমবুক কী?
ক্রোমবুক ক্রোম অপারেটিং সিস্টেমে চলে যা ল্যাপটপ বা নোটবুকের মতো নয় এবং এটি সাধারণত ১০ থেকে ১৪ ইঞ্চির মধ্যে হয়ে থাকে, অর্থাৎ সবচেয়ে বড় ক্রোমবুকটিও ১৫.৬ ইঞ্চির ল্যাপটপের চেয়ে ছোট। মূলত, ক্রোমবুক হল একপ্রকার ল্যাপটপ। তবে এখানে উইন্ডোজ সিস্টেম পাওয়া যাবে না। কেবল গুগলের ক্রোম অপারেটিং সিস্টেমে চলবে এটি। তবে কিছু মাইক্রোসফট অফিস অ্যাপ্লিকেশন গুগল প্লে স্টোর থেকে ইন্সটল করা যাবে। সেক্ষেত্রে উইন্ডোজ বা ম্যাকবুক ল্যাপটপের মতো অভিজ্ঞতা পাবেন না।
ক্রোমবুক আর ল্যাপটপের মধ্যে পার্থক্য কী
ক্রোমবুক এবং ল্যাপটপের মধ্যে অজস্র পার্থক্য রয়েছে। প্রথমত ক্রোমবুকে র্যাম অনেক কম হয়। বেশিরভাগ ক্রোমবুকে 8 জিবি র্যাম দেওয়া হয়। অন্যদিকে একটি ভালো ল্যাপটপে অন্তত 8 জিবি র্যাম এর প্রয়োজন পড়ে।
ল্যাপটপের তুলনায় ক্রোমবুকের স্টোরেজ ক্যাপাসিটি অনেক কম থাকে। ৬৪ জি বি পর্যন্ত ম্যাক্সিমাম স্টোরেজ ক্যাপাসিটি পাওয়া যায়। অটোমেটিকালি যেকোনো ফাইল গুগল ড্রাইভে সেভ হয়। লিমিটেড স্টোরেজ অপশন থাকে।
এছাড়া এর প্রসেসর অনেক দুর্বল হয়। ফুল এইচডি ডিসপ্লে পাওয়া গেলেও ল্যাপটপের তুলনায় কোয়ালিটি তেমন ভালো হয় না। কি-বোর্ডের ক্ষেত্রে একাধিক সমস্যা ফেস করতে হতে পারে।
ক্রোমবুকে সুবিধা
যেই বিষয়টি সবচেয়ে আকর্ষিত করে সেটা হল এর দাম। মাত্র ১০, ১২ হাজার টাকা থেকে ক্রোমবুকের দাম শুরু হয়। যেখানে একটা ভালো মানের ল্যাপটপ কিনতে গেলে অন্তত ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা খরচ করতে হতে পারে আপনাকে।
এছাড়া ক্রোমবুকের ফ্লেক্সিবিলিটি অনেক বেশি। ম্যাট ফিনিশ দেওয়া থাকে ফলে একটা গ্লসি লুক পাওয়া যায়। ক্রোমবুক ওজনেও খুব কম হয়, বেশিরভাগ ক্রোমবুকের ওজন ১ কেজিরও কম এমনকি ৫০০ গ্রাম পর্যন্ত হতে পারে। যেকোনো জায়গায় অনায়াসে এই ক্রোমবুক নিয়ে যাওয়া যাবে। ক্রোমবুকের ব্যাটারি লাইফ দীর্ঘস্থায়ী হয়। অনেক ক্রোমবুকে স্ক্রিন টাচ পরিষেবাও পাওয়া যায়। ওয়েব ব্রাউজিং, ইমেইল চেক, সোশাল মিডিয়া ব্যবহার ও অনলাইন চ্যাটিং এর জন্য বেশ ভালো।
ক্রোমবুকে অসুবিধা
এর অসুবিধা হচ্ছে অফলাইনে থাকা অবস্থায় প্রয়োজনীয় কিছু ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন ভালোমতো কাজ করে না।
ক্রোমবুক কাদের জন্য
ক্রোমবুক ব্যবহারে কোনো মানদন্ড না থাকলেও অনলাইন ক্লাস, অফিসের কাজ, মিটিং, ব্রাউজিং, সিনেমা, সোশ্যাল মিডিয়া সার্ফিং ইত্যাদি কাজের জন্য এই ডিভাইজ আদর্শ। কেউ যদি প্রোগামিং, কোডিং, হাই লেভেল ফটো এডিটিং কাজ করতে চায় সেক্ষেত্রে ক্রোমবুক সন্তোষজনক পারফর্মেন্স নাও দিতে পারে, যেহেতু এর প্রসেসর অনেক নিম্ন মানের এবং স্টোরেজ ক্যাপাসিটি অনেক কম।
ইত্তেফাক/এফএস