সিড ফান্ডিং হিসেবে সোয়া (১.২৫) মিলিয়ন ডলার সংগ্রহ করেছে দেশীয় রি-কমার্স প্ল্যাটফর্ম সোয়াপ। এক্সিলারেটিং এশিয়া, জেডএ ক্যাপিটাল অ্যাডভাইজরি, বাংলাদেশ এঞ্জেলস এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় এঞ্জেল বিনিয়োগকারীরা দেশীয় এই স্টার্ট-আপে বিনিয়োগ করেন।
বৃহস্পতিবার এই ফান্ড পাওয়ার বিষয়টি ইত্তেফাক অনলাইনকে নিশ্চিত করেন প্রতিষ্ঠানটির মার্কেটিং লিড সামিউল মেহেদী। তিনি বলেন, ২০২০ সালে শুরু হওয়ার পর থেকে সোয়াপ ১৪.৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও বেশি গ্রস মার্চেন্ডাইজ ভ্যালু (জিএমভি) তৈরি করেছে আর সোয়াপের বর্তমান মাসিক জিএমভি ১.৭ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি। সোয়াপ এখন পর্যন্ত ৪০ হাজারেরও বেশি গ্রাহককে সেবা দিয়েছে এবং আগামী ৬-১২ মাসের মধ্যে তা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাওয়ার পথে আছে।
তিনি আরও বলেন, ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের সমপরিমান এই বাজারে সোয়াপ একটি কাস্টমার টু বিজনেস (সিটুবি), বিজনেস টু বিজনেস (বিটুবি) এবং কাস্টমার টু বিজনেস টু কাস্টমার (সিটুবিটুসি) মার্কেটপ্লেস হিসেবে কাজ করে যেখানে গ্রাহকরা ব্যবহৃত ইলেকট্রনিক্স এবং অটোমোবাইল কিনতে, বিক্রি করতে বা অদল-বদল করতে পারেন। এখানে ব্যবহারকারীরা নানা প্ল্যাটফর্ম, পেমেন্ট পদ্ধতি এবং পরিষেবামূলক বিকল্পগুলি ব্যবহার করতে পারেন নির্ভরযোগ্যভাবে এবং সামর্থ্য অনুযায়ী! অনেক নিম্ন আয়ের উপার্জনকারীদেরও পণ্য ক্রয়, বিক্রয় এবং বিনিময় করতে প্ল্যাটফর্মটি সক্ষম করে যা উদীয়মান বাজারে অর্থনৈতিক অংশগ্রহণ এবং প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি করে।
সোয়াপের সিইও এবং সহ-প্রতিষ্ঠাতা পারভেজ হোসেন বলেন, ‘আমরা চাই, যারা কেনা, বেচা বা বিনিময় করার চেষ্টা করছেন তাঁদের জন্য বাংলাদেশের সবচেয়ে বিশ্বস্ত প্ল্যাটফর্ম হতে। আমরা বিশ্বাস করি আমাদের গ্রাহকদের যা কিছু পছন্দ তা সাশ্রয়ী মূল্যে প্রদান করার মাধ্যমে আমরা তা করতে পারবো, যেখান থেকে তাঁরা তাঁদের পছন্দটি বেছে নিতে পারবেন।’
তিনি বলেন, এই নতুন বিনিয়োগ সোয়াপের কার্যক্রম আরও ত্বরান্বিত করবে এবং লক্ষ্যপূরণে অবদান রাখবে। সোয়াপ নিয়ে এসেছে এক শ্রেণী থেকে অন্য শ্রেণীতে দ্রুততর আপগ্রেডেশন প্রোগ্রামের সুবিধার্থে ক্রস ক্যাটাগরি এক্সচেঞ্জ প্ল্যাটফর্ম, এক বছরের সম্পূর্ণ ওয়ারেন্টি এবং বীমা কাভারেজ দিয়ে (পানিজনিত ও দুর্ঘটনাজনিত ক্ষতিসহ) সর্বনিম্ম খুচরা মূল্যের ৬০% পর্যন্ত দামে সার্টিফাইড প্রি-ওউন্ড ফোন এবং দেশের প্রায় ৩০০০ এজেন্টকে করে দিচ্ছে অতিরিক্ত আয়ের সুবিধা।
জেডএ ক্যাপিটাল অ্যাডভাইজরির প্রতিষ্ঠাতা এবং সিইও জাহেদুল আরেফিন বলেন, ‘ই-বর্জ্য, খুচরা বিক্রেতা, ভোক্তাদের মধ্যে সংযোগ তৈরি এবং সাধারণ মানুষের জন্য পুনরায় ব্যবহারযোগ্যতা এবং সামর্থ্য নিশ্চিত করার মাধ্যমে সোয়াপের মধ্যে বাংলাদেশের বৃত্তাকার অর্থনীতির জন্য বাস্তুতন্ত্র তৈরির সম্ভাবনা রয়েছে। দেশের অন্যতম প্রতিশ্রুতিশীল এবং উদ্ভাবনী এই অনলাইন স্টার্টআপের সঙ্গে যুক্ত হতে পেরে আমরা নিঃসন্দেহে খুশী।’
নির্ভরযোগ্য রি-কমার্স প্ল্যাটফর্ম হওয়ার পাশাপাশি সোয়াপের লক্ষ্য হল সার্কুলার ইকোনমি অ্যাপ্রোচ এবং টেকসই ই-বর্জ্য ব্যবস্থাপনা উদ্যোগের জন্য মার্কেট লিডার এবং সাফল্যের বৈশ্বিক উদাহরণ হওয়া। কার্বন ফুটপ্রিন্ট কমানো এবং উদীয়মান বাজারে পরিবেশগত টেকসই ইকমার্স শিল্পে সাহায্য করার অঙ্গীকার নিয়ে সোয়াপ ইতিমধ্যে বাংলাদেশে ১১০০ মেট্রিক টন কার্বন নিঃসরণ কমাতে এবং ৬৫ মেট্রিক টনের বেশি ই-বর্জ্য বাঁচাতে সাহায্য করেছে, যা বাংলাদেশে ২০২৫ সালে প্রায় ৪.৫ মিলিয়ন হওয়ার আশঙ্কা আছে।
প্রতিষ্ঠানটি জানায়, মোবাইল ফোন ব্যবহারকারী সংখ্যায় বাংলাদেশ অষ্টম বৃহত্তম দেশ হওয়ায়, বিশ্বব্যাপী অন্যান্য দেশের মতন বাংলাদেশও ই-বর্জ্য উৎপাদন উর্ধমুখী প্রবৃদ্ধির মুখোমুখি হচ্ছে। সোয়াপ, বাংলাদেশের প্রথম রি-কমার্স প্ল্যাটফর্ম, এই সমস্যাটির সমাধান করছে ২৪ ঘন্টারও কম সময়ে ঘর থেকে গ্রাহকদের পুরাতন পণ্য বিক্রির সুযোগ করে দিয়ে তাঁদের সুবিধা এবং নিরাপত্তা উভয়ই প্রদানের মাধ্যমে। এছাড়াও, সোয়াপ ভোক্তাদের তাদের ই-বর্জ্য যথাযথভাবে বর্জন করার সুযোগও প্রদান করে।
ইত্তেফাক/আরকে