বৃহস্পতির কক্ষপথে থাকা গ্রহাণু ট্রোজান নিয়ে প্রথমবারের মতো দীর্ঘ ১২ বছরের একটি অভিযান শুরু করতে চলেছে নাসা। সৌরজগত কী ভাবে তৈরি হয়েছিল, তা জানার জন্য আরও একধাপ এগিয়ে দেবে এই অভিযান, এমনটাই মনে করছেন নাসার বিজ্ঞানীরা।
বৃহস্পতি ও মঙ্গলের মধ্যে অসংখ্য গ্রহাণু সূর্যকে কেন্দ্র করে ঘোরে। এদের মধ্যে যেগুলো বৃহস্পতির কক্ষপথকে ঘিরে ঘুরছে তাদের বলা হয় ট্রোজান। এই ট্রোজানদের গঠন ও অবস্থান সম্পর্কে জানতে নাসার এই মিশন সাহায্য করবে বলে মনে করা হচ্ছে।
নাসার পরিকল্পনা রয়েছে, স্পেস ক্র্যাফ্টটি উৎক্ষেপণের পর প্রথমে পৃথিবীকে দু’বার প্রদক্ষিণ করবে এবং তারপর ছুটে যাবে ট্রোজানের দিকে। এছাড়া, ২০২৫ সালে মঙ্গল ও বৃহস্পতির মাঝখানে অবস্থিত একটি গ্রহাণুর পাশ দিয়ে স্পেস ক্র্যাফ্টটি যাওয়ার সময় তার যন্ত্রাংশের পরীক্ষা করা হবে। নাসা জানিয়েছে, ২০৩৩ সাল নাগাদ পরো মিশন সম্পন্ন হতে পারে বলে তারা মনে করছে।
এদিকে, মহাকাশে নিজেদের একটি স্টেশনের কোর মডিউলের উদ্দেশে তিন নভোচারীসহ মহাকাশ যান পাঠিয়েছে চীন। নভোচারীদের একজন নারী ও দু’জন পুরুষ। চীনের স্পেস স্টেশন তিয়ানহে-র কোর মডিউলে এই তিন জন ছয় মাস কাজ করবেন বলে জানানো হয়েছে। মহাকাশে নিজস্ব স্টেশন বানাতে চীনের এটি দ্বিতীয় অভিযান।
লং মার্চ-২এফ নামের স্পেস ক্র্যাফ্টটি শেনঝাউ-১৩ মহাকাশ স্টেশন নিয়ে স্থানীয় সময় শুক্রবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে চীনের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ গানসুর জিকুয়ান স্যাটেলাইট লঞ্চ সেন্টার থেকে মহাকাশের উদ্দেশে রওনা দেওয়ার পর এদিন তিয়ানহে মহাকাশ স্টেশনে সফলভাবে অবতরণ করে। চায়না ম্যানড স্পেস এজেন্সির পক্ষ থেকে বলা হয়, শনিবার সকাল ৭টার দিকে স্পেস ক্র্যাফ্টটি সফলভাবে স্পেস স্টেশনে পৌঁছাতে সক্ষম হয়। নভোচারীরা সকাল ১০টার দিকে স্পেস স্টেশনের কোর মডিউলে প্রবেশ করেন।
উল্লেখ্য, আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে চীনের যুক্ত হওয়া প্রসঙ্গে কোনও মতে সম্মত হয়নি আমেরিকা। এর ফলে সেখানে জায়গা না পেয়ে নিজেরাই মহাকাশ স্টেশন গড়তে উদ্যোগ নেয় চীন। ২০১১ ও ২০১৬ সালে তিয়ানগং-১ ও তিয়ানগং-২ নামক দু’টি পরীক্ষামূলক স্টেশন মাহাকাশে পাঠায় তারা। এবারের পাঠানো তিয়ানগং মহাকাশ স্টেশনটি ৬৬ টন ওজনের। আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনের আকারের তুলনায় যা এক পঞ্চমাংশ।
চলতি বছরের এপ্রিলে স্পেস স্টেশনটি নির্মাণ শুরু করে চীন। ওই সময় স্টেশনটির তিনটি মডিউলের মধ্যে প্রথম ও সবচেয়ে বড় মডিউলটি তিয়ানহে কক্ষপথে স্থাপন করা হয়। স্পেস স্টেশনটির নির্মাণ শেষ হলে বাসের চেয়ে আকৃতিতে কিছুটা বড় তিয়ানহেতে থাকবেন নভোচারীরা।
ইত্তেফাক/এফএস