মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

নতুন প্রজন্মকে সৃজনশীল হিসাবে গড়ে তুলতে হবে

আপডেট : ১৩ জুন ২০১৯, ২১:৪৯

বিগত বছর সমূহে বাংলাদেশে সরকারি সেবা ও সামাজিক কর্মকাণ্ডে উদ্ভাবনী কৌশল ও প্রক্রিয়া সম্যকভাবে দেখা গেলেও শিল্পখাতে আশানুরূপ উদ্ভাবন লক্ষ্য করা যায়নি। কিন্তু চতুর্থ শিল্প বিপ্লব মোকাবেলা করে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশের কাতারে যাওয়ার জন্য সকল স্তরে উদ্ভাবনী সংস্কৃতি গড়ে তোলা দরকার। আর এ জন্য নতুন প্রজন্মকে সৃজনশীল হিসাবে গড়ে তুলতে হবে। এছাড়া উদ্ভাবকদের দিতে হবে স্বীকৃতি ও পৃষ্ঠপোষকতা।

বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) সকালে স্থানীয় একটি হোটেল আয়োজিত এক গোলটেবিল আলোচনায় অতিথি ও বক্তারা এই অভিমত তুলে ধরেন। বাংলাদেশের টাইগার আইটি ফাউন্ডেশন ‘ইনোভেশন ফর ইকোনোমিক গ্রোথ’ শীর্ষক এই গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করে।

বৈঠকের প্রধান অতিথি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী জানান, ‘প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে এরই মধ্যে বাংলাদেশ নানা খাতে উন্নয়নের রোল মডেল পরিণত হয়েছে, যার পেছনে রয়েছে নেতৃত্বের দূরদর্শিতা এবং প্রয়োজনীয় নীতি সহায়তা। তিনি বলেন আগামীতে শিক্ষাখাতে আরও উদ্ভাবনী উদ্যোগে সরকার প্রয়োজনীয় সহায়তা দেবে। তিনি আরও বলেন বিগত সময়ের বিভিন্ন উদ্ভাবনী উদ্যোগ সরকারী সেবা প্রাপ্তি সহজতর করেছে।’

অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কাজী মো. আমিনুল ইসলাম উদ্ভাবনী উদ্যোগ ছাড়া আগামী ২৩ বছরে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে তেরোগুণ বৃদ্ধি করা সম্ভব হবে না। আর এ জন্য সরকারি-বেসরকারি এবং বিশ্ববিদ্যালয়কে একযোগে কাজ করতে হবে। তিনি পরিবার থেকে সর্বোচ্চ পর্যায় পর্যন্ত উদ্ভাবনী সংস্কৃতি গড়ে তোলায় গুরুত্ব দিয়ে বলেন, উদ্যোক্তা বান্ধব, উদ্ভাবনী ইকো-সিস্টেম গড়ে তোলার জন্য এটি অপরিহার্য।

এর আগে সকালে সবাইকে স্বাগত জানান টাইগার আইটি ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান। তিনি জানান, এই আয়োজনের উদ্দেশ্য দেশে উদ্ভাবনী সংস্কৃতিকে জোরদার করার কার্যক্রমে সম্পৃক্ত হওয়া।

তিনি জানান, টাইগার আইটি যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজি (এমআইটি)-এর সঙ্গে যৌথভাবে ‘টাইগার চ্যালেঞ্জ’ নামে একটি উদ্ভাবনী প্রতিযোগিতার আয়োজন করছে। এই আয়োজনের পাশাপাশি দেশে উদ্ভাবনী সংস্কৃতি গড়ে তুলতে তারা কাজ করতে চান।

নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রোকনুজ্জামান তার উপস্থাপিত নিবন্ধে দেশে উদ্ভাবনী সেবা ও সামাজিক ব্যবসার পাশাপাশি শিল্পখাতে উদ্ভাবনে বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেন। তিনি বলেন, বিগত দশক জুড়ে দৃষ্টি আকর্ষণী উন্নয়নের পরও প্রয়োজনীয় কর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে না। বরং অটোমেশনের ফলে কর্মবাজার সংকুচিত হয়ে যেতে পারে। এ থেকে পরিত্রাণের জন্য গবেষণা ও উন্নয়নে  বরাদ্দ বাড়ানোসহ প্রাইভেটসেক্টরকে উদ্ভাবনে এগিয়ে আসতে হবে। আর এজন্য দরকার দেশের মেধাবী তরুণদের চ্যালেঞ্জিং কর্মক্ষেত্রে সম্পৃক্ত করা।

এমআইটির সলভ প্রোগ্রামের পরিচালক ম্যাথিউ মিনর জানান, তাদের অভিজ্ঞতার আলোকে স্টার্টআপদের প্রতিষ্ঠানে আর্থিক বিনিয়োগের পাশাপাশি মেন্টরিং, নেটওয়ার্কিং এবং অভিজ্ঞতা বিনিময়ের পরিবেশ গড়ে তোলায় গুরুত্ব আরোপ করেন। বিশেষ করে গ্লোবাল মানদণ্ডে উন্নীত হওয়ার জন্য বৈশ্বিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে সহযোগিতা গড়ে তোলাটা খুবই জরুরী বলে তিনি মত দেন।

বৈঠকে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের আইআইসিটির অধ্যাপক ড. এস এম লুৎফুল কবির, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএর পরিচালক অধ্যাপক ড. সৈয়দ ফারহাদ আনোয়ার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. আরশাদ মোমেন, আইসিটি বিভাগের যুগ্মসচিব এনামুল পারভেজ, এমআইটি সলভের এসোসিয়েট অফিসার নোয়া লিভি, বিকেএমই এর সাবেক সভাপতি ফজলুল হক, বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব সফটওয়ার এন্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস) এর সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবির, বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি (বিসিএস)–র সভাপতি মো. শাহীদ–উল–মুনির, বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব কল সেন্টার এন্ড আউটসোর্সিং (বাক্য)–র সভাপতি ওয়াহিদুর রহমান শরীফ, এলআইসিটি প্রকল্পের কম্পোনেন্ট টিম লিডার সামি আহম্মেদ। বৈঠকটি সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্ক এর সাধারণ সম্পাদক মুনির হাসান।

ইত্তেফাক/বিএএফ