শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

জটিল প্রশ্নের জবাব দেয় রোবট ‘মিরা’

আপডেট : ০৬ অক্টোবর ২০১৯, ০৪:০৭

মানুষের সঙ্গে কথা বলা, বিভিন্ন জটিল প্রশ্নের উত্তর দেওয়া, ভার্চুয়াল কাজে সহযোগিতা করাসহ বিভিন্ন সুবিধা-সংবলিত রোবট তৈরি করেছেন গণবিশ্ববিদ্যালয়ের (গবি) কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগের শেষ বর্ষের ছয় শিক্ষার্থী। প্রায় ৪৭ হাজার টাকা (আনুমানিক) ব্যয়ে নির্মিত রোবটটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘মিরা’ (মোবাইল অ্যান্ড ইন্টেলিজেন্ট রোবট ফর অ্যাডভান্সড অ্যাসিস্ট্যান্স)।

রোবটটি তৈরিতে বিভিন্ন ধরনের প্রোগ্রামিং কোড ব্যবহার করা হয়েছে যেমন—জাভা, পাইথন, এআইএমএল, ডট কনফ ও কোডের সর্বমোট দৈর্ঘ্য আনুমানিক প্রায় ১২ থেকে ১২ হাজার লাইন। বিশ্ববিদ্যালয়-সংলগ্ন নিরিবিলি ফাল্গুনি হাউজিংয়ের ল্যাবে রোবটটি তৈরির যাবতীয় কাজ সম্পন্ন হয়। রোবটটি তৈরিতে অবদান রাখেন উজ্জ্বল সরকার ও মাসুদ রানা নামের সংশ্লিষ্ট দুই ব্যক্তি।নিজ বিভাগ থেকে দেওয়া প্রজেক্টের আওতায় রোবট মিরার উদ্ভাবক সিএসই বিভাগের ২০তম ব্যাচের ছয় শিক্ষার্থী হলেন মোহাম্মদ রিফাত (দলনেতা), মাহতাবুর রহমান সবুজ, মাহমুদা আক্তার নিঝুম, মারুফ হোসেন, সাফিক হাসান ও শারমিন নাহার তোহফা। তারা বিভাগের প্রভাষক রোয়িনা আফরোজ অ্যানির অধীনে চলতি বছরের ২০ জুলাই রোবটটির কাজ শুরু করেন। প্রায় আড়াই মাসের অক্লান্ত পরিশ্রমে তৈরিকৃত হিউম্যানয়েড (মানুষের মতো গঠন আকৃতি) রোবটটি গত বৃহস্পতিবার সংশ্লিষ্ট বিভাগে প্রদর্শন করা হয়।

রোবটটির প্রধান বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে গ্রুপের সদস্য মাহতাবুর রহমান সবুজ বলেন, এটি মূলত পোর্টেবল ও অটোমেটেড, অর্থাত্ বাইরের নিয়ন্ত্রণ ছাড়াই পূর্ণ কাজ করতে সক্ষম। সফটওয়্যার চালুর পর এটি নিজে নিজেই সব কাজ করতে পারে। রোবটের আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেনস ও মেশিন লার্নিং ক্যাপাবিলিটি তাকে বাইরের নিয়ন্ত্রণ ছাড়াই কাজ করার সক্ষমতা দিয়েছে। পূজার ছুটি শেষে আগামী ১২ অক্টোবর (সম্ভাব্য) রোবটটি ক্যাম্পাসে সবার জন্য প্রদর্শন করা হবে।

অসামান্য এই উদ্ভাবনের বিষয়ে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. করম নেওয়াজ বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের এই অভাবনীয় সাফল্যে আমরা অত্যন্ত আনন্দিত ও গর্ববোধ করছি। এটি একটি অত্যাধুনিক রিসার্চ ওয়ার্ক।’

গণবিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে প্রথম তৈরিকৃত এই রোবট বিভিন্ন ভার্চুয়াল ও শারীরিক কাজে সক্ষম। ভার্চুয়াল কাজের মধ্যে ইমেইল পাঠানো, পছন্দের গান বাজানো, নির্দিষ্ট কাজের কথা মনে করিয়ে দেওয়া (রিমাইন্ডার), সময় ও তারিখ জানানো, ফেসবুকের নোটিফিকেশন চেক করা, আগাম পূর্বাভাস দেওয়া ইত্যাদি কাজ করতে পারে। শারীরিক কাজের মধ্যে বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গি যেমন হ্যান্ডশেক বা হাই ফাইভ করা, কাজের সময় কফির কাপ ধরে রাখা, জোকস শোনানো, রক পেপার সিজার খেলা ইত্যাদি কাজে সক্ষম। এছাড়া রোবটটি যাদের সঙ্গে কথা বলবে, তাদের ব্যক্তিগত তথ্য মনে রাখতে পারবে এবং ঐ তথ্যের ভিত্তিতে পরবর্তীতে কথোপকথন করতে পারবে।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন