গতকাল ঐচ্ছিক অনুশীলনে ছিলেন না পাঁচ ক্রিকেটার। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মোহাম্মদ মিঠুন, সাইফ হাসান, মেহেদী হাসান মিরাজ ও এবাদত হোসেন অনুশীলন করেননি। এর বাইরে গোটা অনুশীলনে ঘাম ঝরিয়েছে।ইন্দোর টেস্টের চতুর্থ দিন। হোলকার স্টেডিয়াম নীরব, নিথর। ২২ গজে বাংলাদেশ-ভারতের লড়াইয়ের ইতি ঘটেছে ম্যাচের তৃতীয় দিনই।
ইনিংস ব্যবধানে হারের ধকল সামলে গতকাল বিকালেই হোলকার স্টেডিয়ামে অনুশীলনে নেমেছিল বাংলাদেশ। পিংক বলের মিশনটা ইন্দোরেই শুরু করে দিয়েছে বাংলাদেশ। অবশ্য যেটি শুরু হওয়ার কথা ছিল কলকাতায়। ইন্দোর টেস্ট আগে শেষ হওয়ায় পিংক বলে প্রস্তুতির বাড়তি সময়টা কাজে লাগিয়েছে বাংলাদেশ।
অনুশীলনের আগে ইন্দোর টেস্টে বাংলাদেশের উজ্জ্বলতম পারফরমার আবু জায়েদ রাহী জানিয়েছেন, পিংক বলের সঙ্গে টুকটাক পরিচয় আছে তার। তবে বোলিং করা হয়ে ওঠেনি আগে। ইংল্যান্ড থেকে তার মেজো ভাই পিংক বল নিয়ে এসেছিলেন। গতকালই প্রথমবার পিংক বলে বোলিং করেছেন রাহী। কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সেও নতুন বলে এই ডানহাতি পেসারই হবেন বাংলাদেশের বড়ো ভরসা।
নতুন অবস্থান লাল বলের চেয়ে গোলাপি বলে সুইংটা বেশি হয়। সে জন্য সুইংয়ের প্রতিই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন রাহী। গতকাল বলেছেন, ‘আমার কাছে মনে হয় আমার মূল হলো সুইং। সুইং করে ব্যাটসম্যানকে পরাস্ত করতে হয়। আমি চেষ্টা করেছি ভালো জায়গায় বোলিং করার।’
ইন্দোরে বাংলাদেশ দল ইনিংস ব্যবধানে হারলেও বোলার রাহীর প্রাপ্তির খাতা অপূর্ণ নয়। এক ইনিংসই বোলিং করেছেন। নিয়েছেন চার উইকেটে। ভারতীয় শক্তিশালী ব্যাটিং লাইনকে ধাক্কা দিতে সমর্থ হয়েছেন এই বাংলাদেশি তরুণ পেসার। গতি খুব বেশি না হলেও বল সুইং করতে পারদর্শী তিনি। রয়েছে সুন্দর লাইন-লেন্থ। ইন্দোর তার শিকার তালিকায় জমা পড়েছে বড়ো বড়ো নাম। রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলি, চেতেশ্বর পূজারা, আজিংকা রাহানে ফিরেছেন রাহীর তীরে ঘায়েল হয়ে। তবে গতকাল রাহী বলেছেন, তার স্বপ্নের উইকেট ছিল কোহলির উইকেট। রোহিত-কোহলিদের আউট করা প্রসঙ্গে ডানহাতি এই পেসার বলেছেন, ‘অবশ্যই ভালো অনুভূতি ছিল। কারণ ওরা বিশ্বের এক, দুই নম্বর ব্যাটসম্যান বলতে গেলে। যেহেতু বিরাট কোহলি বিশ্বের এক নম্বর ব্যাটসম্যান, তাকে আউট করতে পারা মানে স্বপ্নের উইকেট। অবশ্যই কোহলি আমার জীবনের স্বপ্নের উইকেট।’
আরও পড়ুন: রুনা লায়লার সুরে তারা...
টেস্টে লাইন-লেন্থই বোলারদের বড়ো অস্ত্র। নিজের বোলিংয়ে ভারতীয় পেসার মোহাম্মদ শামির ছায়া খুঁজে পান রাহী। তাই বোলিং নিয়ে শামির সঙ্গে কথাও বলেছেন বাংলাদেশের এই পেসার। ভারতীয় পেসারদের দেখে শিখছেন জানিয়ে গতকাল বলেছেন, ‘এটা শিক্ষণীয়। তারা যেহেতু অনেক সিনিয়র বোলার। অনেকগুলো টেস্ট খেলেছে তারা। শামি ভাইয়ের সঙ্গে কালকেও কথা বলেছি আমরা। যেহেতু শামি ভাইয়ের সঙ্গে আমার ধরনটা একটু মিলে। দুজনই সিমিং বোলার। আমি শামি ভাইয়ের বল অনেক সময় দেখেছি। ম্যাচের মধ্যে যখন ছিলাম তার বল মনোযোগ দিয়ে দেখেছি। মাঝে মাঝে উচ্চতাও মিলিয়েছি। আমাদের চেয়ে বেশি নাকি সমান উচ্চতা। তখন মনে হয়েছে হয়তো শামি ভাইয়ের মতো বল করতে পারবো।’
রাহীর সাফল্য দেখে উইকেট-কন্ডিশন বিবেচনায় কলকাতা টেস্টে বাংলাদেশের একাদশে তিন পেসার দেখলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। তবে সেখানে এবাদত হোসেনের থাকার সম্ভাবনা ক্ষীণই বলা চলে।
ইত্তেফাক/এএএম