মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

ব্যর্থতা মানছেন তাসকিন

আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০১৯, ০৩:১২

সতীর্থদের সঙ্গে কথা বলতে বলতে স্বাভাবিকভাবেই মাঠে এসেছেন। বিসিবি একাডেমি মাঠে প্রবেশ করে পরিচিত সাংবাদিকদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন তাসকিন আহমেদ। মুখে লেগে থাকা হাসিটা অটুট রয়েছে তার। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চোখ রাখলেও অবশ্য তাসকিনের ভেতরটা পড়া যাবে না। বাস্তবে সময়টা ভালো যাচ্ছে না তার। ভেতরের হতাশাকে ঢেকে রেখেই দিন কাটছে তাসকিনের।

রংপুর রেঞ্জার্সের হয়ে বঙ্গবন্ধু বিপিএল খেলছেন ডানহাতি এই পেসার। কিন্তু গত তিন ম্যাচে রংপুরের একাদশেই জায়গা হয়নি তার। শুরুতে তিন ম্যাচ খেলে খরুচে বোলিং করেছিলেন। তারপর আর একাদশেই সুযোগ পাননি। তরুণ মুকিদুল ইসলাম মুগ্ধর কাছে জায়গা হারিয়েছেন তাসকিন।

ঘরোয়া ক্রিকেটের টুর্নামেন্টে একাদশে জায়গা না হওয়াটা হতাশারই বটে। বাইরের দুনিয়া না জানলেও রংপুর শিবিরের কর্তারা তা সম্পর্কে ভালোই অবগত। গতকাল যেমন বিসিবি একাডেমি মাঠে অনুশীলন শুরুর আগে রংপুরের কোচ মার্ক ও’ডনেল কথা বলেন তাসকিনের সঙ্গে। কিছু কথা বলার পর কোচ পিঠ চাপড়ে দেন এই তরুণের।

পরে সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে আলাপে একাদশ থেকে বাদ পড়ার হতাশা লুকাতে পারেননি তাসকিন। তবে একই সঙ্গে বল হাতে নিজের ব্যর্থতাও স্বীকার করেছেন।

প্রথম ম্যাচে ২৩ রান, দ্বিতীয় ম্যাচে ১৪ রান ও তৃতীয় ম্যাচে ৩৯ রান দিয়ে উইকেট শূন্য তাসকিন। খরুচে বোলিং করেছেন। একাদশ থেকে বাদ পড়ার বিষয়ে গতকাল তাসকিন বলেছেন, ‘আসলে কিছুটা দুঃখজনক, শেষ তিনটা ম্যাচ খেলার সুযোগ হয়নি। এটা আসলে ক্যারিয়ারের অংশই। সামনে সুযোগ পেলে নিজের সেরাটা দিতে চেষ্টা করব। এছাড়া যে তিনটা ম্যাচ খেলেছি, কোনো উইকেট পাইনি। এটা নিয়ে আসলে মন খারাপ করে বসে থাকলে হবে না। ট্রেনিংয়ে চেষ্টা করছি উন্নতির। সামনে সুযোগ পেলে কাজে লাগাতে পারব আশা করছি।’

বল হাতে নিজের ব্যর্থতা মেনে নিয়ে ২৪ বছর বয়সি এই পেসার বলেছেন, ‘সত্যি কথা বলতে দুই একটা লুজ বল হয়েছে ওগুলোতে বাউন্ডারি হয়েছে। চট্টগ্রামে উইকেট এমন যে ভালো বলেও বাউন্ডারি এসেছে ওভারঅল সবমিলিয়ে ব্যাটিংবান্ধব উইকেট এবারের বিপিএল, সব বোলারই মোটামুটি খরুচে। আমি চেষ্টা করব সামনে সুযোগ পেলে, যদিও এটা অজুহাত হতে পারে না উইকেট ব্যাটিংবান্ধব। আমি আসলে নিজে ভালো করতে পারিনি এটা আমারই ব্যর্থতা।’

বিপিএল শুরুর আগে মুস্তাফিজ-তাসকিনকে নিয়ে গড়া রংপুরের বোলিং লাইন শক্তিশালী বিবেচনা করা হয়েছিল। কিন্তু শুরুতে দুই পেসারই হতাশ করেছেন দলকে। মুস্তাফিজ ধীরে ধীরে ছন্দে ফিরলেও তাসকিন একাদশ থেকেই বাদ পড়েছেন। দলের মতোই বিবর্ণ তার পারফরম্যান্স।

ডানহাতি এই পেসারের ফর্মহীনতা হতাশা ছড়িয়েছে জাতীয় দলের সংশ্লিষ্টদের মাঝেও। বিপিএলকে ঘিরে অনেক ক্রিকেটারই ২০২০ টি-২০ বিশ্বকাপ দলে জায়গা পাকা করার পরিকল্পনায় আছেন। একই লক্ষ্য তাসকিনের মাঝেও রয়েছে। রঙিন জার্সিতে ফেরার অতি চিন্তা মূল ফোকাস থেকে কক্ষচ্যুত করছে এই তরুণকে। জাতীয় লিগে পারফর্ম করেছেন তিনি। এখন বিপিএলে ভালো করলেই সীমিত ওভারের ফরম্যাটে জাতীয় দলের দরজা খুলে যেত দ্রুতগতির এই পেসারের।

কিন্তু মূল অস্ত্র বোলিংই ছন্দ নেই তার। গতকাল জাতীয় দলের এক কর্মকর্তা বলেছেন, ‘জাতীয় দলে ঢুকতে হবে এই চিন্তাকে আপাতত দূরে রেখে ওর উচিত বিপিএলটা উপভোগ করা। এখানে নিজের সেরাটা দেওয়া। বোলিংয়ে মনোযোগী হওয়া। বাইরে কথা কম বলে নিজের কাজে ফোকাস করা।’

বিপিএলের গত আসরেও ২২ উইকেট নিয়ে জাতীয় দলে ফিরেছিলেন তাসকিন। যদিও ইনজুরির কারণে তার খেলা হয়নি। এখন রংপুরের মতোই বল হাতে সুস্থির হতে হবে ডানহাতি এই পেসারকে।