৩৩১ রান ও ১২ উইকেট—নিঃসন্দেহে এবার বিপিএলের সেরা অলরাউন্ডার ছিলেন সৌম্য সরকার। গতকাল শেষ হওয়া বিপিএলে একটু নতুন রূপেই ধরা পড়েছেন জাতীয় দলের এই তারকা। বিপিএলে নিজের পারফরম্যান্স ও জাতীয় দলে নিজের অবস্থান নিয়ে কথা বলেছেন এই অলরাউন্ডার—
এটাই কী ক্যারিয়ারের সেরা বিপিএল? আপনি কীভাবে দেখছেন নিজের পারফরম্যান্সকে? হ্যাঁ, এটাই সেরা বিপিএল। ব্যাটে-বলে, দুই ভূমিকাতেই এ রকম আগে করতে পারিনি। আমি আসলে বিপিএল শুরুর আগে ভেবেছিলাম এবারের আসরটা নিজের মতো করে উপভোগ করব। সেটা করেছি। ব্যাটিং-বোলিং, যেটাতেই সুযোগ পেয়েছি, নিজের মতো করে খেলার চেষ্টা করেছি।
রান, নাকি উইকেট? কোনটা বেশি আনন্দ দেয়? অবশ্যই রান। আমি তো ব্যাটিং অলরাউন্ডার। আমার ব্যাটিংটাই তো মূল। ফলে রান করতে পারলেই বেশি ভালো লাগে। তবে উইকেট পাওয়াটাও মজার। আর উইকেট পেলে একটু নির্ভার থাকা যায়। ঐদিন ব্যাটে রান না করলেও নিজের ওপর চাপ আছে বলে মনে হয় না।
বোলিংটা তাহলে নির্ভার থাকার ভালো একটা উপায়? হ্যাঁ। অলরাউন্ডার যারা তাদের এটা একটা ভালো ব্যাপার। যে কোনো এক ডিপার্টমেন্টে পারফরম করলে অন্য ডিপার্টমেন্টে পারফর্ম করা সহজ হয়। চাপ কম থাকে।
ইদানীং বোলিংটা বেশি কার্যকর মনে হচ্ছে। বেশি সুযোগ পাচ্ছেন, নাকি বেশি সময় দিচ্ছেন এটা নিয়ে? আসলে আগে সুযোগ কম পেতাম। তখন আমিও বোলিংকে গুরুত্ব কম দিতাম। কিন্তু গত কিছুদিন ধরে ইন্টারন্যাশনালেও বোলিংয়ের সুযোগ বেশি পাচ্ছি। তাই ইদানীং বোলিং নিয়ে একটু সিরিয়াস হয়েছি। অনুশীলনেও বেশি সময় দিচ্ছি। সে কারণে কিছু উন্নতি হয়েছে হয়তো।
ব্যাটিংয়ে নিজের কী অবস্থা বলে মনে করছেন? বড়ো ইনিংস খেলা দরকার। ৩০-৪০ রানের মধ্যে আটকে যাচ্ছি। এটা হলে তো সমস্যা। সেট হতে পারলে বড়ো ইনিংস খেলতে হবে।
মিডল অর্ডারে নামার পর বিপিএলে কয়েকটা তো বড়ো ইনিংস খেললেন। ওপেনিংয়ে বড়ো হচ্ছিল না ইনিংস। তাহলে কী মিডল অর্ডারে থেকে যাবেন? না, না। আমি টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান। এটা ঠিক যে, চার-পাঁচে কয়েকটা বড়ো ইনিংস খেলেছি। কিন্তু আমি নিজেকে নতুন বলের ব্যাটসম্যানই মনে করি। হ্যাঁ, প্রথম তিনের মধ্যে বড়ো ইনিংস খেলতে হলে হয়তো নিচে নামতে হতো না।
জাতীয় দলে এখন যদি বলা হয় মিডল অর্ডারে সেট হতে, সেটাতে রাজি আছেন? টিম কম্বিনেশনের জন্য বা দলের ভালোর জন্য আমি যে কোনো জায়গায় খেলতে রাজি। আগে তো খেলার সুযোগ পাওয়া। কিন্তু আমাকে যদি চয়েজ করতে বলেন, আমি অবশ্যই টপ অর্ডার বেছে নেব।
আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের বয়স পাঁচ হতে গেলো। যে সম্ভাবনা নিয়ে সৌম্য সরকারের শুরু হয়েছিল, তা কী বাস্তব হয়েছে? এটার উত্তর দেওয়া খুব কঠিন। আসলে মানুষের তো চাওয়ার শেষ নেই। নিজেরই নিজের কাছে অনেক চাওয়া থাকে। মানুষও অনেক রকম প্রত্যাশা করে। সব যে পূরণ হয়েছে, তা বলার কোনো সুযোগ নেই। তবে আমি চেষ্টা করছি। আর সময় শেষ হয়ে যায়নি। ফলে এখনো সামনে এগোনোর সুযোগ আছে।
ইত্তেফাক/মোস্তাফিজ