বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

রাশিয়া ও কাতার বিশ্বকাপের জন্য ঘুষ নেন ফিফা কর্তারা

আপডেট : ০৮ এপ্রিল ২০২০, ০৪:১৬

রাশিয়া ও কাতারকে বিশ্বকাপ আয়োজনের স্বত্ব পাইয়ে দিতে ঘুষ নিয়েছিলেন ফিফা নির্বাহী কমিটির সদস্যরা। গত সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে জমা দেওয়া ফেডারেল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশনের (এফবিআই) তদন্ত রিপোর্টে বেরিয়ে এসেছে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য।

ফিফার তখনকার যে কর্মকর্তাদের নাম এসেছে, তার অন্যতম ব্রাজিল ফুটবল কনফেডারেশনের (সিবিএফ) সাবেক সভাপতি রিচার্ড টিক্সেইরার নাম। এছাড়াও আছেন দক্ষিণ আমেরিকার আরো দুই কর্মকর্তা নিকোলাস লিওজ ও হুলিও গ্রোন্দোনা যারা ২০১০ সালে ফিফার নির্বাহী কমিটিতে কাতারের পক্ষে ভোট দেয়ার জন্য ঘুষ নিয়েছিলেন। ফুটবলে দুর্নীতির ওপর বেশ কয়েক বছর ধরেই তদন্ত করে আসছে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাটি। যুক্তরাষ্ট্রের ডিস্ট্রিক্ট কোর্ট অব ব্রুকলিনে জমা দেওয়া দলিল দস্তাবেজে অবশ্য কোত্থেকে এসব অর্থ এসেছে তা বলা হয়নি। এফবিআইয়ের নতুন তদন্তে বেরিয়ে আসে কাতার ও রাশিয়া বিশ্বকাপে ঘুষ নেওয়ার ব্যাপারটি।

ইতিমধ্যে দক্ষিণ আমেরিকান ফুটবলের নীতিনির্ধারক সংস্থা কনমেবলের সাবেক সভাপতি নিকোলাস লিওজ আর রিকার্ডো টিক্সেইরার বিপক্ষে অভিযোগপত্রও গঠন করেছে। তাতে বলা হয়, ‘দুজনে নিজেদের ভোটের জন্য ঘুষের প্রস্তাব পেয়েছিলেন অথবা ঘুষ গ্রহণ করেছিলেন।’

সাবেক ফিফা সহসভাপতি জ্যাক ওয়ার্নারের ওপরও রাশিয়ার ২০১৮ বিশ্বকাপ আয়োজনের পক্ষে ৪ মিলিয়ন পাউন্ড ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ আনা হয়। রাশিয়া এই বিশ্বকাপটি আয়োজনের দায়িত্ব পাওয়ার পথে ভোটাভুটিতে ইংল্যান্ডকে হারায়।

সে সময়ে ওয়ার্নার উত্তর আমেরিকা ও ক্যারিবীয় ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা কনকাকাফের সভাপতি ছিলেন। আরেক সাবেক ফিফা সদস্য গুয়াতেমালা ফুটবলের প্রধান রাফায়েল সালগুয়েরোকেও একই কারণে ঘুষ দেয়ার অভিযোগ ওঠে এসেছে তদন্তটিতে।

গেল বছর প্যারাগুয়েতে নিজ বাড়িতে গৃহবন্দি থাকার সময়ে মৃত্যুবরণ করেন লিওজ। টিক্সেইরাও ফিফা থেকে ২০০৬ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত মার্কেটিং ও মিডিয়া স্বত্ব বিক্রির জন্যে ঘুষ নেয়ায় আজীবন নিষিদ্ধ হয়েছিলেন। স্যালগুয়েরোর অদৃষ্টেও নেমে আসে একই পরিণতি, যদিও তিনি অপরাধ স্বীকার করে নিয়েছিলেন আগেই।

আরো পড়ুন : বরিস জনসনের অসু্স্থতায় যেভাবে চলছে ব্রিটেন

টুয়েন্টি ওয়ান সেঞ্চুরি ফক্সের সাবেক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধেও আনা হয়েছে অভিযোগ। বলা হচ্ছে, প্রচারস্বত্ব পেতে দক্ষিণ আমেরিকা ফুটবলকে ঘুষ দিয়েছিল প্রতিষ্ঠানটি।

এফবিআইয়ের সহকারী ব্যবস্থাপক উইলিয়াম সোয়িনি নিজেদের তদন্তের ব্যাপারে বলেন, ‘আন্তর্জাতিক ফুটবলে ঘুষ খুব গভীর ও নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। এফবিআই ফুটবলের অবকাঠামো, ভেন্যু আর মার্কেটিং চুক্তিতে অনৈতিক করমর্দন ও পর্দার আড়ালের চুক্তিগুলো তদন্ত করে দেখছে। এ ব্যাপারে প্রথম অভিযোগটা আসে ২০১৫ সালে। এটাই সাক্ষ্য দেয় যে, যারা এখনো অনৈতিকভাবে এখানে লাখ লাখ ডলার অর্থ উপার্জন করতে আসে আমরা অবশ্যই তাদের টুঁটি চেপে ধরব।’

ইত্তেফাক/এসি