গত মার্চে ঘটা করে মাঠে গড়িয়েছিল এ বছরের ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ। এক রাউন্ডের খেলাও হয়ে গিয়েছিল। আর এর পরই সারা পৃথিবীর মতো বাংলাদেশেও আঘাত হানতে শুরু করল করোনা ভাইরাস। প্রথমে শুধু দ্বিতীয় রাউন্ডের খেলা স্থগিত হলো। এরপর অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত হয়ে গেল খেলা। এখন দেশের যে অবস্থা, তাতে এই লিগ আর আদৌ হবে কি না, তাই অনিশ্চিত। তারপরও লিগের জন্য অপেক্ষা করতে চায় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) ও খেলোয়াড়রা।
বাংলাদেশের বেশির ভাগ ক্রিকেটারদের বার্ষিক আয়ের প্রধান উত্স ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ। মাঝে কয় বছর এই লিগে খেলোয়াড়দের দলবদল হয়েছে ‘প্লেয়ার বাই চয়েজ’ পদ্ধতিতে। এবার খেলোয়াড়দের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে আবার উন্মুক্ত দলবদল পদ্ধতিতে ফিরে গিয়েছিল লিগ। সে নিয়ে খেলোয়াড়দের উত্সাহের অভাব ছিল না। ঢাকা ও সিলেটে ঘটা করে দলবদল হয়েছিল। জাতীয় দলের খেলা সিলেটে থাকায় জাতীয় দল তারকাদের দলবদল সেখানেই হয়েছিল।
এরপর ১৫ মার্চ শুরু হয় লিগ। ১৬ মার্চ প্রথম রাউন্ডের দ্বিতীয় দিনের খেলা চলা অবস্থায়ই ঘোষণা আসে যে, দ্বিতীয় রাউন্ড স্থগিত। আর এরপর এপ্রিলে এসে সেই স্থগিতাদেশ অনির্দিষ্টকালের হয়ে যায়। আশা ছিল করোনার সংক্রমণ কমে আসলে লিগ আবার মাঠে গড়াবে। কিন্তু সংক্রমণ বাড়ছে ছাড়া কমছে না।
এ অবস্থায় লিগের ভবিষ্যত্ নিয়ে আশা করা কঠিন। তবে আশাবাদী হতে চাইলেন বিসিবির মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস। তিনি বললেন, আগস্ট মাস পর্যন্ত পরিস্থিতি দেখবেন তারা, ‘এখন তো পরিস্থিতি ভালো না। তবে এখনই চূড়ান্ত কথা বলার সময় আসেনি। আমরা জুলাই-আগস্ট মাসও দেখব। তারপর যদি পরিস্থিতির উন্নতি হয়, অবশ্য ঢাকা লিগ হবে। আমাদের কাছে এটা অগ্রাধিকার পাবে। খেলোয়াড়দের স্বার্থ দেখতে চাই আমরা। তবে আরো কিছুদিন না গেলে কোনো অনুমান করাও কষ্ট।’
এই একই অপেক্ষাতে আছেন খেলোয়াড়রাও। বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের সংগঠন কোয়াবের সদস্য সচিব দেবব্রত পাল বলছিলেন, ‘আমরা অপেক্ষা করব। আমরা চাই যে কোনো মূল্যে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ হোক। এটা আমাদের খেলোয়াড়দের রুটি রুজির প্রশ্ন। অন্তত সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অপেক্ষা করব। আমাদের সর্বশেষ মিটিংয়ে এই সিদ্ধান্তই হয়েছে যে, আমরা পরিস্থিতি দেখব। আমরা চাই অবশ্যই লিগ হোক।’
দেবব্রত এটাও জানালেন যে, তাদের বোর্ড আশ্বাস দিয়েছে যে, ঘরোয়া ক্রিকেট ঢাকা লিগ দিয়েই শুরু হবে। তাই তারা আশা হারাতে চান না, ‘আমাদের বোর্ডের সঙ্গে কথা হয়েছে। ওনারা বলেছেন, পরিস্থিতি ভালো হতে শুরু করলেই খেলা মাঠে গড়াবে। ওনারা কথা দিয়েছেন, প্রিমিয়ার লিগ দিয়েই ঘরোয়া ক্রিকেট শুরু হবে। আমরা সেই অপেক্ষায় আছি।’
ইত্তেফাক/এসআই