বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের অ্যাথলেটিক ট্র্যাকের করুণ হাল নিয়ে আক্ষেপের শেষ নেই অ্যাথলেটদের। ছেঁড়া জীর্ণ ট্র্যাক যেন মরণ ফাঁদ তাদের জন্য। ট্র্যাকটি খারাপ বলে জানুয়ারিতে জাতীয় অ্যাথলেটিকসের আসর হয়েছিল চট্টগ্রামের এম এ আজিজ স্টেডিয়ামের ঘাসের মাঠে। সেই আসরও ছিল আবার আগের বছরের। ২০২০ সালের তিনটি আসরের মধ্যে সিনিয়র, জুনিয়র এবং সামার অ্যাথলেটিকস হয়নি। করোনার কারণে সম্ভবও ছিল না। তবে করোনা না এলেও এ জীর্ণ ট্র্যাকে জাতীয় পর্যায়ের খেলা আয়োজন করা যায় না।
অ্যাথলেটিকস ফেডারেশনের সভাপতি আলী কবীর এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের ট্র্যাক জরুরি ভিত্তিতে পরিবর্তন করা দরকার। কম্পিটিশন ভেন্যু হিসাবে এ ট্র্যাক ঝুঁকিপূর্ণ। বহুবার মেরামত করা হয়েছে। এখন এটার লাইফ চলে গেছে।’
২০১০ সালে এসএ গেমস উপলক্ষ্যে ট্র্যাকটি বসানো হয়েছিল। ১০ বছরে এ ট্র্যাকের ওপর অত্যাচারও কম হয়নি। গাড়ি, জিপ, ট্রাক চলেছে। মোটরসাইকেল চলেছে। আলী কবীর বলেন, ‘এটা অন্য কোনো দেশ যদি শোনে তাহলে বাংলাদেশ সম্পর্কে ধারণাই পালটে যাবে। আন্তর্জাতিক অ্যাথলেটিকস সংস্থা শুনলে অনুদানও বন্ধ হয়ে যেতে পারে।’ তিনি অবশ্য আশাবাদ জাগিয়ে বলেন, ‘আমি শুনেছি এনএসসি নতুন ট্র্যাক স্থাপন করবে।’
জাতীয় ক্রীড়া পরিষদও জানিয়েছে নতুন ট্র্যাক স্থাপন করা হবে। ট্র্যাক প্রসঙ্গে গতকাল কথা বলেন এনএসসির সচিব মাসুদ করিম। তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম সংস্কারের যে প্রকল্প হাতে রয়েছে, সেখানে ট্র্যাক অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। নতুন ট্র্যাক বসবে। কনসালটেন্ট নিয়োগ প্রক্রিয়া প্রায় সম্পন্ন। করোনার কারণে কাজের ক্ষতি হয়েছে।’
নতুন ট্র্যাক বসবে শুনে দারুণ খুশি দেশের দ্রুততম মানব মোহাম্মদ ইসমাইল। তিনি বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ, আমরা নতুন ট্র্যাক পাচ্ছি। কিন্তু কথা হচ্ছে কতো দিন টিকবে? রক্ষণাবেক্ষণ করবে কে? এখানে মাঠের নিরাপত্তা দরকার। লরি চলে ট্র্যাকের ওপর দিয়ে।’
ভালো ট্র্যাক দাবি করে তিনবারের দ্রুততম মানব ইসমাইল বলেন, ‘বর্তমান ট্র্যাকে এক এক জায়গায় এক এক রকম থিকনেস। কাজে গাফিলতি ছিল। ২০০ মিটার স্টার্টিং পয়েন্ট নষ্ট। কেউ যদি ৫ কোটি টাকা নিয়ে ২ কোটিতে ট্র্যাক বসায় তাহলে ক্ষতিগ্রস্ত হবেই।’
বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের বর্তমান ট্র্যাকটি কম করে হলেও ১০০ স্থানে ছেঁড়াফাটা, জোড়াতালি রয়েছে। বিরক্ত অ্যাথলেটরা। নতুন ট্র্যাকের খবরে দেশের আরেক দ্রুততম মানবী শিরিন সুলতানা দারুণ খুশি। বললেন, ‘আমরা খেলতে নামার আগে আল্লাহকে ডাকি, যেন ইনজুরি না হই। সবাই যেন সুস্থ থাকতে পারি। শুনে খুব ভালো লাগল নতুন ট্র্যাক বসবে।’