ঝাপসা একটা ছবি।
ছবিটার কেন্দ্রীয় চরিত্র আফিফ হোসেন ধ্রুব। তার জন্মদিন উপলক্ষ্যে বিকেএসপিতে কয়েক জন ক্রিকেটার-কোচ একত্র হয়েছিলেন। তারা একটা কেকও কেটেছেন। কিন্তু ধ্রুব বা কেক; কিছুই নজর কাড়তে পারল না। এই ছবিটাতে চোখ টেনে নিলেন লম্বা চুলের ‘এক তরুণ’। হ্যাঁ, সাকিব আল হাসান।
ঢাকার এই কোলাহল আর উৎসুক দৃষ্টি এড়িয়ে সাভারের বিশাল বিকেএসপি ক্যাম্পাসে প্রায় নির্জনাবাসে চলছে বিশ্বের অন্যতম সেরা এই ক্রিকেটারের অনুশীলন। দৃশ্যত তুচ্ছ এক কারণে আইসিসির নিষেধাজ্ঞা কাটাচ্ছেন সাকিব। সেই নিষেধাজ্ঞা শেষের দিকে। এখন চলছে আবার ক্রিকেটে ফেরার প্রস্তুতি। যতদূর জানা গেল, অত্যন্ত আনন্দ এবং উপভোগের ভেতর দিয়েই চলছে সাকিবের অনুশীলন।
২৯ অক্টোবর শেষ হবে সাকিবের এক বছরের নিষেধাজ্ঞা। সূচি ঠিক থাকলে সে সময় শ্রীলঙ্কা সফরে থাকা বাংলাদেশ স্বাগতিকদের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট খেলবে। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন আশার কথা শুনিয়েছেন যে, তারা দ্বিতীয় টেস্টেই সাকিবকে দলে পাওয়ার আশা করছেন।
সাকিব নিজে কী ঠিক করেছেন, সে জানার উপায় কারো নেই আপাতত। তবে প্রস্তুতির বহর শুনে অনুমান করা যায়, তিনিও এর মধ্যে নিজেকে টেস্ট খেলার জন্য তৈরি করে ফেলতে চাইছেন।
করোনা মহামারির শুরু থেকে সাকিব ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রে। করোনার কারণে তিনি একা নন, দুনিয়ার সব ক্রিকেটারই ক্রিকেট থেকে দূরে ছিল। সাকিবের এই প্রবাসের সময়টা একটা কারণে দারুণ কেটেছে—এই সময়ে দ্বিতীয় কন্যার পিতা হয়েছেন। দুই কন্যা আর স্ত্রীকে রেখে সেপ্টেম্বরের শুরুতে দেশে ফিরে এসেছেন। আর এ মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকেই বিকেএসপিতে শুরু হয়েছে কঠোর অনুশীলন।
আইসিসির নিষেধাজ্ঞার কারণে সে অনুশীলন বাইরের কারোর দেখার উপায় নেই। এমনকি অনুশীলনের প্রকৃতি নিয়ে কথাও বলছেন না সংশ্লিষ্ট কেউ। তার পরও দু-একটা উড়ো কথা ভেসে আসে। তাতে জানা যায়, সপ্তাহে একদিন বা কখনো দুই দিন বিরতি নিয়ে নিয়ে চলছে সাকিবের অনুশীলন। এই পর্বে তাদের সহায়তা করছেন দেশের সেরা দুই কোচ—নাজমুল আবেদীন ফাহিম ও মোহাম্মদ সালাউদ্দিন। এ ছাড়া বিকেএসপির অ্যাথলেটিক্স কোচ ও সাবেক দ্রুততম মানব আব্দুল্লাহ হেল কাফী এবং বক্সিং কোচ আরিফুল করিম আছেন সহায়তার জন্য। আছেন একজন ফিজিও।
বিকেএসপি তার এই সাবেক ছাত্রর জন্য সব দুয়ার উন্মুক্ত করে দিয়েছে। প্রতিষ্ঠানের সবচেয়ে আকর্ষণীয় ‘মধুমতি গেস্টহাউসে’ থাকছেন সাকিব। তার জন্য এক নম্বর মাঠে ঘাস কেটে প্রস্তুত করে দেওয়া হয়েছে উইকেট। তার জন্য বিশেষ ব্যবস্থায় চালু রাখা হয়েছে সব অনুশীলন সুবিধা।
সবমিলিয়ে বিকেএসপি যেন সাকিবের মতোই এক লড়াইয়ে সামিল হয়েছে। এই লড়াইয়ের জয়টা তো বাংলাদেশেরই দরকার।
ইত্তেফাক/জেডএইচডি