বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

বুদ্ধিবৃত্তিক সমাজ গঠনে দাবা খেলার ভূমিকা অপরিসীম: আইজিপি

আপডেট : ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২০, ২১:০৪

আমাদের বাঙালি সমাজ এই উপমহাদেশে সবসময়ই বুদ্ধি ভিত্তিক জীবনবোধে বিশ্বাসী ছিল। নো‌বেল পুরষ্কার প্রা‌প্তির দিক থে‌কেও এই উপমহা‌দে‌শে  বাঙা‌লিরা এগিয়ে র‌য়ে‌ছে। এ থেকেই অনুমেয় যে, বাঙালিরা ঐতিহাসিকভাবেই বুদ্ধিভিত্তিক ও ইতিবাচক জীবনবোধের অনুসারী। বর্তমান সময়ে আমরা লক্ষ্য করি, আমাদের ছেলেমেয়েরা, আমাদের যুব সমাজ, আমাদের শিক্ষার্থীরা দেশে-বিদেশে বিভিন্ন ভাবে বিভিন্ন জায়গায় সুনামের সাথে খ্যাতির সাথে কাজ করে যাচ্ছে; দেশের হয়ে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক পুরস্কার নিয়ে আসছে। এই প্রক্রিয়াকে আমরা অধিকতর ত্বরান্বিত করতে পারি, যদি আমরা দাবাখেলাকে আরো বেশি ছড়িয়ে দেই। 

আজ বৃহস্পতিবার ( ২৪ সেপ্টেম্বর) বিকা‌লে রাজধানীর "কানা‌ডিয়ান ইউ‌নিভা‌র্সি‌টি অব বাংলা‌দে‌শ" এ আ‌য়ো‌জিত জয়তু শেখ হাসিনা ইন্টারন্যাশনাল অনলাইন চেস টুর্নামেন্ট -২০২০ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ ড. বেনজীর আহমেদ বিপিএম(বার) একথা বলেন। ‌তি‌নি একাধা‌রে সাউথ এশিয়ান চেস কাউন্সিলর এবং বাংলাদেশ চেস ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট।  সাউথ এশিয়ান চেস কাউন্সিল এর উদ্যোগে এই টুর্নামেন্টটির আ‌য়োজ‌নে আরো র‌য়ে‌ছে কানা‌ডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলা‌দে‌শ এবং গো‌ল্ডেন স্পো‌র্টিং চেস ক্লাব।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৪তম জন্মদিন উপলক্ষে বুদ্ধিবৃত্তিক এই আয়োজনে আরো উপস্থিত ছিলেন কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ চেস ফেডারেশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট চৌধুরী নাফিস শরাফত ,ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোহা: শফিকুল ইসলাম, বিপিএম(বার), এশিয়ান চেস ফেডারেশনের জেনারেল সেক্রেটারি হিশাম আল তাহের, বাংলা‌দেশ দাবা ফেডা‌রেশ‌নের জেনা‌রেল সেক্রেটারি সৈয়দ শাহাব উদ্দিন শামীম, কানা‌ডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলা‌দের এর এক্সিকিউটিভ চেয়ারম্যান শাহনুল হাসান খানসহ অনেক গ্র্যান্ডমাস্টার ও খেলোয়াড়বৃন্দ। উক্ত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ছাড়াও ভুটান, মালদ্বীপ,নেপাল,পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা,ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন, ইরান, রাশিয়া, সিঙ্গাপুর, ভিয়েতনাম, মালয়েশিয়া এবং ভারতের অনেক দাবা খেলোয়াড় ও গ্র্যান্ডমাস্টার অনলাইনে এই অনুষ্ঠা‌নে যুক্ত হন।

আইজিপি তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন, আমরা অত্যন্ত সৌভাগ্যবান জাতি, আমরা উন্নয়নবান্ধব, ভবিষ্যতমুখী ও খেলোয়ার বান্ধব একজন প্রধানমন্ত্রী পেয়েছি। অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি বুদ্ধিবৃত্তিক মানবিক বিকাশ আমাদের এই অপ্রতিরোধ্য উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে অধিকতর টেকসই করবে যার সুবিধাভোগী হবে দেশের কেন্দ্র থেকে প্রত্যন্ত অঞ্চলের সকল নাগরিক। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুষম ও টেকসই উন্নয়নের জন্য দাবাখেলা নিয়ে আইজিপি তার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা বলেন। আই‌জি‌পি ব‌লেন, পৃ‌থিবীর বি‌ভিন্ন উন্নত দে‌শে পা‌র্কে দাবা খেলার ব্যবস্থা র‌য়ে‌ছে। জেলখানায় ক‌য়েদী‌দের জন্য দাবা খেলার আ‌য়োজন র‌য়ে‌ছে। মান‌সিক চাপ ও অবসাদ দূরীকর‌ণেও দাবা খেলার সুফল র‌য়ে‌ছে।

বাংলা‌দে‌শেও আগামী প্রজন্মের সুকোমল বৃত্তি ও বু‌দ্ধিবৃ‌ত্তিক উ‌ন্মে‌ষের জন্য দাবাখেলাকে ছড়িয়ে দিতে ও জনপ্রিয় করতে স্কুল ভিত্তিক দাবা খেলার প্রশিক্ষণ ও প্রতিযোগিতা আয়োজনের কথা বলেন তিনি। বাংলা‌দেশ দাবা ফেডা‌রেশ‌নের জন্য এক‌টি স্থায়ী ভব‌ন নির্মা‌নের উ‌দ্যোগের কথাও উ‌ল্লেখ ক‌রেন তি‌নি। নবীন খে‌লোয়াড়‌দের মান উন্নয়‌নের জন্য নিয়‌মিত উন্নত মা‌নের প্র‌শিক্ষ‌ণের উ‌দ্যোগ নেয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত ক‌রেন তি‌নি। ত‌বে, দাবা ফেডা‌রেশ‌নের আ‌র্থিক সাম‌র্থ্যের সীমাবদ্ধতা র‌য়ে‌ছে উ‌ল্লেখ ক‌রে তি‌নি ব‌লেন, দাবা খেলোয়াররা যাতে আরো বেশি অনুপ্রাণিত হয়, আরো বেশি উৎসাহিত হয় এবং বিশ্ব পরিমণ্ডলে আগামী সময়ে এর মাধ্যমে আমরা আরো বেশি আন্তর্জাতিক স্বীকৃ‌তি অর্জন করতে পারি সেজন্য প্র‌য়োজনীয় উ‌দ্যো‌গে সহ‌যোগী হ‌তে বাংলাদেশের বড় বড় কর্পোরেট হাউসগুলো এ‌গি‌য়ে আসতে পা‌রে। 

উ‌ল্লেখ্য, ১৫ টি দে‌শের ১৭ জন গ্র্যান্ড মাস্টারসহ মোট ৭৪ জন প্র‌তি‌যোগী এই টুর্না‌মে‌ন্টে অংশগ্রহন কর‌ছেন। আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ উক্ত টুর্ণামেন্টের গ্রান্ড ফাইনাল ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান আয়োজিত হবে। সংশ্লিষ্ট সকলকে টুর্নামেন্ট উপভোগ করার অাহ্বান জানিয়ে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।

ইত্তেফাক/এসআই