শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

বেদনা বিধুর রাত স্যামসন-মোস্তাফিজের

আপডেট : ১৩ এপ্রিল ২০২১, ০৮:৫৪

মূল পেসার জোফরা আর্চার ইনজুরিতে ছিটকে পড়ায় আইপিএলের চলতি আসরে রাজস্থান রয়্যালসের প্রথম ম্যাচেই সুযোগ পেয়েছিলেন মোস্তাফিজুর রহমান। কিন্তু  নিজের নতুন দলের হয়ে অভিষেক রাঙাতে পারলেন না বাংলাদেশি বাঁহাতি পেসার। রান খরচ করলেন দেদারসে। তার দল রাজস্থানও হার দিয়েই আসর শুরু করলো।

যদিও রেকর্ড গড়া সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে শেষ বল পর্যন্ত লড়ে গেলেন অধিনায়ক সঞ্জু স্যামসন। পাঞ্জাবের ২২১ এর জবাবটাও দিচ্ছিল বুক চিতিয়েই। বিপত্তিটা বাঁধাল শেষ ওভারটা। রোমাঞ্চকর ওভারটা শেসে রাজস্থান থামল লক্ষ্য থেকে মাত্র চার রানের দূরত্বে। ফলে প্রথম ম্যাচে জয়টা ধরা দিতে দিতেও দিল না মুস্তাফিজের দল রাজস্থানকে। 

অধিনায়কত্বের অভিষেকে আইপিএলে সর্বোচ্চ ছিল শ্রেয়াশ আইয়ারের ৯৮, সেঞ্চুরি ছিল না কারো। সে চূড়ায় সোমবার রাতে উঠে গেলেন সাঞ্জু। প্রথম আইপিএল অধিনায়ক হিসেবে অভিষেকেই পেলেন সেঞ্চুরি। তবে সে সেঞ্চুরির স্বাদটা কি ঠিক পেলেন সাঞ্জু?

তাকে এমন কীর্তির পথটা করে দিয়েছিলেন বোলাররা। অধিনায়ক সাঞ্জুর শুরুতে বোলিং করার সিদ্ধান্তকে ঠিক প্রমাণ করতে পারেননি কেউ। সবাই রান দিয়েছেন ওভারপ্রতি দশেরও বেশি করে, সে তালিকায় ছিলেন এক মৌসুম পর আইপিএলে ফেরা বাংলাদেশি মুস্তাফিজও। কোটার ৪ ওভার বল করে দিয়েছেন ৪৫, ছিলেন উইকেটহীন। 

বোলারদের এমন বিবর্ণ দিনে তাদের ওপর ছড়ি ঘুরিয়েছিলেন পাঞ্জাব ব্যাটসম্যানরা। ওপেনার গেইল অবশ্য খুব একটা প্রলয়নাচন তুলতে পারেননি এদিন মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে। আউট হয়েছেন ২৮ বলে ৪০ রান করে।

লোকেশ রাহুল অবশ্য ছিলেন স্বরূপে। সঙ্গী হিসেবে পান দীপক হুদাকে। এই জুটি থেকে আসে ১০৫ রান। রাহুলের ৯১ আর হুদার ৬৪ রানের ইনিংস ২২১ রানের পুঁজি এনে দেয় পাঞ্জাবকে। 
জবাবে রাজস্থানও খুব একটা ভালো শুরু করতে পারেনি। বড় স্কোর তাড়া করতে বেন স্টোকসকে তুলে দেওয়া হয় ওপেনিংয়ে। কিন্তু তিনি ফেরেন রানের খাতা খোলার আগেই। এরপর মনন ভোহরাকেও দ্রুতই হারায় রাজস্থান।

২৫ রানে ২ উইকেট হারানোর পরই রাজস্থানের প্রতি আক্রমণের শুরু। স্যামসন তো ছিলেনই, সঙ্গে ছিলেন জস বাটলার। ইনিংসের অষ্টম ওভারে বাটলারকে হারালেও শিভম দুবে ও রিয়ান পরাগের দুটো ক্যামিও আর স্যামসন নিজে কক্ষপথেই রাখছিলেন রাজস্থানকে। 

এমনকি শেষ দুই বলের আগেও জয়ের পথে দারুণভাবেই ছিল দলটি। শেষ ওভারে প্রয়োজন ছিল ১৩ রান। প্রথম বলে ডট, এরপরের দুই বলে দুই রান, এরপর স্যামসনের ছক্কা। তাতে শেষ দুই বলে রাজস্থানের দরকার ছিল ৫ রান। চতুর্থ বলে সিঙ্গেলের সুযোগ থাকলেও নেননি অধিনায়ক স্যামসন। শেষ বলে ছয়ের চেষ্টায় ধরা পড়েন বাউন্ডারি লাইনে। 

ফলে সাঞ্জুর দারুণ এক লড়াই পরিণতি পায় করুণ এক হারে। তবে দারুণ ১১৯ রানের ইনিংসে ম্যাচসেরার পুরস্কারটা ঠিকই উঠেছে রাজস্থান অধিনায়কের হাতে।

এদিকে দারুণ দুটি সুযোগ হাতছাড়া হওয়া মোস্তাফিজের জন্যও ম্যাচটি হতাশার। ৪ ওভার বোলিং করে ৪৫ রান খরচায় উইকেটশূন্য ছিলেন মোস্তাফিজ। যদিও তার সামনে দুটি উইকেট নেওয়ার সুযোগ এসেছিল। কিন্তু ফিল্ডারদের ব্যর্থতা ও নিজের আত্মবিশ্বাসহীনতার কারণে দুটি উইকেট থেকে বঞ্চিত হন মোস্তাফিজ।

নিজের প্রথম ওভারের দ্বিতীয় বলেই মায়াঙ্ক আগরওয়ালকে এলবিডাব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলেছিলেন মোস্তাফিজ। রিভিউতে নিশ্চিত আউট দেখা গেলেও আম্পায়ার আবেদনে সাড়া দেননি। আর রাজস্থানও রিভিউ নেয়নি, মোস্তাফিজও সাহস করে রিভিউ চাননি। নিশ্চিত একটি উইকেট থেকে বঞ্চিত হন মোস্তাফিজ। আর দ্বিতীয় সুযোগটি পান ১৫তম ওভারে। মোস্তাফিজের প্রথম বলেই দীপক উড়িয়ে মারেন। কিন্তু উইকেটকিপার জস বাটলার ও বেন স্টোকসের ভুল বোঝাবুঝিতে ক্যাচ মিস হয়ে যায়।

ইত্তেফাক/এনএ