বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

ইতিহাস সৃষ্টি করেই ইউএস ওপেন চ্যাম্পিয়ন হলেন এমা রাদুকানু

আপডেট : ১২ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৬:২৭

রবিবার (১২ সেপ্টেম্বর) ইউএস ওপেন ফাইনালে নারীদের লড়াইয়ে একদিকে ছিলেন এমা রাদুকানু, অন্যদিকে লায়লা ফার্নান্ডেজ। ব্রিটিশ বনাম কানাডিয়ান অষ্টাদশীর লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত বাজিমাত ব্রিটিশ তরুণীর। ম্যাচ জিতলেন ৬-৪, ৬-৩ ব্যবধানে। ঐতিহাসিক ফাইনাল বলা চলে। খেলতে খেলতে রক্তাক্ত হলেন। প্লাস্টার লাগিয়ে আবার খেললেন। শেষ পর্যন্ত চ্যাম্পিয়ন এমা। ব্যাকহ্যান্ড, ফোরহ্যান্ড, ক্রস কোর্ট, বেস লাইন সার্ভ, এমা এদিন নিজের সেরা খেলা তুলে ধরলেন।

প্রতিপক্ষকে প্রথম সেটে দু’বার ব্রেক করেছিলেন। তবে দ্বিতীয় সেটে লায়লা ফিরে আসার লড়াই চালালেন। ম্যাচ পয়েন্ট বাঁচালেন। শেষপর্যন্ত অবশ্য বাজিমাত রাদুকানুর। 

টেনিস খেলার ইতিহাসে এই প্রথম কেউ বাছাই পেরিয়ে এসে গ্র‍্যান্ডস্লাম জিতলেন। ইউএস ওপেনের আগে এমার র‍্যাংকিং ছিলো ১৫০, উইম্বলডনে ফোর্থ রাউন্ডে উঠেই চমক দেখিয়েছিলেন তিনি। মাস দুয়েক পরে গ্র‍্যান্ডস্লামই জিতে ফেললেন! তাও পুরা টুর্নামেন্টে একটা সেটও না হেরে।

গত ৪৪ বছরে কোনো বৃটিশ নারীর গ্র‍্যান্ডস্লাম শিরোপা না জিততে পারার খরাও ঘুচিয়ে দিলেন বয়স মাত্র ১৮ পেরোনো এ টেনিস তারকা। 

রাদুকানুর জন্ম কানাডার টরন্টোয়। তার বাবা ইয়ানের জন্ম রোমানিয়ার বুখারেস্টে। মা শেনিয়াংয়ের জন্ম চিনে। রাদুকানুর কেরিয়ারে তাই দুই দেশেরই টেনিস তারকা সিমোনা হালেপ ও লি না-র প্রভাব রয়েছে।

রাদুকানুর যখন দুই বছর বয়স তখন তার পরিবার চলে যায় ইংল্যান্ডে। পাঁচ বছর বয়সে টেনিস খেলা শুরু রাদুকানুর। উইম্বলডনের শেষ ১৬ থেকে বিদায় নিলেও এবার তার সামনে ইতিহাস গড়ার হাতছানি ছিল। ২২ বছর পর এই নিয়ে ওপেন এরায় দুই টিনএজার ফাইনালে খেতাবের লক্ষ্যে নেমেছিলেন অষ্টমবার। ইউএস ওপেনে শেষবার দুই টিনএজারের মধ্যে মহিলা সিঙ্গলস ফাইনাল হয়েছিল ১৯৯৯ সালে। সেবার সেরেনা উইলিয়ামস হারিয়েছিলেন মার্টিনা হিঙ্গিসকে।

এবারের উইম্বলডনে শেষ ১৬ অবধি পৌঁছেছিলেন রাদুকানু। তার আগে তিনি ছিলেন বিশ্বের ৩৩৬ নম্বর খেলোয়াড়। গত ২৩ অগাস্ট তার কেরিয়ারের সেরা র‌্যাঙ্কিং দাঁড়ায় ১৫০। এবার তিনি বিশ্বের প্রথম তিরিশে ঢুকে পড়তে চলেছেন। ১৯৫৯ সালে ১৮ বছর বয়সে ফরাসি ওপেন ফাইনাল খেলেছিলেন ক্রিস্টিন ট্রুম্যান। ফলে ৬২ বছরে রাদুকানুই প্রথম সর্বকনিষ্ঠ ব্রিটিশ টেনিস খেলোয়াড় হিসেবে গ্র্যান্ডস্ল্যামে খেলবেন।

এর আগে ফ্লাশিং মিডোসে ঝড় তুলে ব্রিটিশ অষ্টাদশী এমা রাদুকানু উড়িয়ে দেন গ্রিসের সপ্তদশ বাছাই মারিয়া সাকারিকে। খেলার ফল ৬-১, ৬-৪। ৪৪ বছর পর এই প্রথম ব্রিটিশ কোনও মহিলা গ্র্যান্ড স্ল্যাম ফাইনাল খেললেন।

১৯৭৭ সালে উইম্বলডন ফাইনাল খেলেছিলেন ভার্জিনিয়া ওয়েড। কেরিয়ারের তিনটি গ্র্যান্ড স্ল্যাম সিঙ্গলস খেতাবের প্রথমটি ওয়েড ১৯৬৮ সালে জিতেছিলেন ইউএস ওপেনেই। ফলে ৫৩ বছর পর কোনও ব্রিটিশ মহিলা সিঙ্গলস ফাইনালে উঠেছিলেন। খেললেন এবং ইতিহাস গড়লেন এমা। টেনিস বিশ্ব দেখল এক নতুন তারকার জন্ম।

ইত্তেফাক/এসজেড