একটা সময় মনে হয়েছিল বাংলাদেশ হেরেই যাবে। টিভির সামনে বসে থাকা দর্শকদের মনে পরাজয়ের শঙ্কা ক্ষণিকের জন্য হলেও ভয় ধরিয়ে দিয়েছিল। তবে শেষ পর্যন্ত বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে স্বাগতিক ওমানকে হারিয়ে স্বস্তির জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। এর মধ্য দিয়ে সুপার টুয়েলভে যাওয়ার আশা বাঁচিয়ে রাখলো লাল-সবুজ বাহিনী।
মঙ্গলবার (১৯ অক্টোবর) ওমানের আল-আমিরাত স্টেডিয়ামে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে স্বাগতিকদের বিপক্ষে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশের অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। মাস্টউইন এই ম্যাচে নির্ধারিত ২০ ওভারে সবকটি উইকেটের বিনিময়ে ১৫৩ রান সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়েছে রিয়াদ বাহিনী।
জবাবে ১৫৪ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে দারুণ শুরু করেন ওমানের দুই ওপেনিং ব্যাটার আকিব ইলিয়াস ও জাতিন্দর সিং। যদিও দলীয় ১৩ রানের মাথায় মুস্তাফিজের বলে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়ে আউট হয়ে যান আকিব। এরপরই কাশ্যপ প্রজাপতির সঙ্গে জুটি গড়ার চেষ্টা করেন জাতিন্দর। ৫.৪ ওভারে আউট হওয়ার আগে দলীয় রান ৪৭ করে যান কাশ্যপ। এরপর বাংলাদেশ শিবিরে প্রায় ভয় ধরিয়ে দিচ্ছিলেন জাতিন্দর সিং। দলীয় ৯০ রানের মাথায় ব্যক্তিগত ৪০ রান করে আউট হন তিনি। ক্রমশ ভয়ঙ্কর হতে থাকা এই ক্রিকেটারকে ফেরান সাকিব আল হাসান।
পরে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট পড়তে থাকে। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেটের বিনিময়ে ১২৭ রানে থেমে যায় ওমানের ইনিংস। ফলে ২৬ রানের জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। টাইগারদের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪টি উইকেট শিকার করেছেন মুস্তাফিজুর রহমান। এছাড়া সাকিব নিয়েছেন ৩টি এবং সাইফউদ্দিন ও শেখ মেহেদী হাসান নেন একটি করে উইকেট।
বাংলাদেশ দলে একটি পরিবর্তন আনা হয়েছিল। ওপেনিংয়ে সৌম্য সরকারের বদলি হিসেবে একাদশে ফিরেছেন নাঈম শেখ। তিনি দারুণভাবে আস্থার প্রতিদান দিয়েছেন। করেছেন দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৬৪ রান। ৫০ বলে সাজানো তার এই ইনিংসটিতে ছিল চারটি ৬ ও তিনটি ৪- এর মার।
শুরুর চাপ সামাল দিয়ে সাকিব আল হাসানের সঙ্গে তিনি দুর্দান্ত একটি জুটি গড়ে তোলেন। দু'জনের ব্যাট থেকে এসেছে ৮০ রান। এর মধ্যে ২৯ বলে ৪২ রান করেছেন সাকিব। এছাড়া শেষ দিকে অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের ১০ বলে ১৭ রানের ক্যামিও ইনিংসের ওপর ভর করে ১৫৩ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর দাঁড় করাতে সক্ষম হয় লাল-সবুজ বাহিনী।
এই রান করার ক্ষেত্রে অবশ্য ওমানের ফিল্ডারদের কৃতীত্ব দিতে হবে! তারা বেশ কয়েকটি ক্যাচ ছেড়েছেন। নয়তো বাংলাদেশের রান আরও অনেক কম হতো। এর মধ্যে ওপেনিংয়ে ব্যাট করতে নামা লিটন দাস দুইবার জীবন পেয়েছেন। তবুও দলীয় ১১ রানের মাথায় ব্যক্তিগত ৬ রান করে আউট হয়ে যান। ওপেনার পরিবর্তন করলেও বাংলাদেশি ব্যাটারদের পারফরম্যান্সে কোনো পরিবর্তন হয়নি। আগের ম্যাচের মতোই শুরুতে দুই উইকেট হারিয়ে আবারও চাপে পড়ে বাংলাদেশ। ওয়ানডাউনে নেমে শেখ মেহেদী হাসানও হতাশ করেছেন। রানের খাতা খোলার আগেই তিনি প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন।
The passion. The support. The energy. ????
— T20 World Cup (@T20WorldCup) October 19, 2021
Some brilliant scenes at the Oman Cricket Academy ground ???? #BANvOMN #T20WorldCup pic.twitter.com/mDc5fMWYNj
দলীয় ১০১ রানের মাথায় রানআউটের ফাঁদে পড়ে সাকিব আউট হওয়ার পর আর কেউ দাঁড়াতে পারেননি। অবশ্য সাকিবের আউটটি দৃষ্টিকটু লেগেছে। চেষ্টা করলে সেটি হয়তো এড়াতে পারতেন। পরে সোহান, আফিফ, মুশফিক ও সাইফউদ্দিনরা কেবল হতাশাই বাড়িয়েছেন। শেষ ব্যাটার হিসেবে ২০তম ওভারের ৬ষ্ঠ বলে আউট হয়েছেন মুস্থাফিজুর রহমান।
ওমানের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩টি করে উইকেট পেয়েছেন বিলাল খান ও অভিষিক্ত ফাইয়াজ বাট। এছাড়া কালিমউল্লাহ ২টি ও একটি উইকেট নিয়েছেন অধিনায়ক জীশান মাকসুদ।
ইত্তেফাক/টিএ