শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ থাকতে পারে আরো দুই দিন

আপডেট : ২১ ডিসেম্বর ২০২০, ০৩:১২

উত্তর জনপদের পাশাপাশি দেশের বিস্তীর্ণ এলাকার ওপর দিয়ে বয়ে চলা মৌসুমের প্রথম শৈত্যপ্রবাহে ভোগান্তি বেড়েছে জনজীবনে। তাপমাত্রা সামান্য বাড়লেও মৃদু থেকে মাঝারি মাত্রার এ শৈত্যপ্রবাহ আরো দুই দিন অব্যাহত থাকবে বলে আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। তবে আগামী বুধবার তাপমাত্রা কিছুটা বাড়তে পারে। তবে সে সময় বাড়তে পারে কুয়াশার পরিমাণ। এদিকে এ মাসের শেষে আবারও শৈত্যপ্রবাহের আশঙ্কা করেছেন আবহাওয়াবিদরা।

আবহাওয়াবিদ বজলুর রশিদ বলেন, বর্তমানে উত্তরাঞ্চল, মধ্যাঞ্চল, পশ্চিমাঞ্চল এবং দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে শৈত্যপ্রবাহ। এটি আজ এবং কাল অব্যাহত থাকতে পারে। মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের এই প্রবাহ আরো বিস্তার লাভ করতে পারে। আর এ মাসের শেষে অর্থাত্ ২৫-২৬ ডিসেম্বর আবারও শৈত্যপ্রবাহ হতে পারে বলে তিনি জানান।

গতকাল দেশে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল তেঁতুলিয়ায় সাত ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা শনিবার ছিল রংপুর বিভাগের রাজারহাটে ৬ দশমিক ৬। এছাড়া ঢাকায় ১৩ দশমিক ৫, ময়মনসিংহে ১০ দশমিক ৫, চট্টগ্রামে ১৩ দশমিক ২, সিলেটে ১১ দশমিক ৭, রাজশাহীতে ১০ দশমিক ৪, রংপুরে ১১, খুলনায় ১০ দশমিক ৫ এবং বরিশালে ৯ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।

এছাড়া রংপুর, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, সিলেট, ময়মনসিংহ অঞ্চলের অধিকাংশ জায়গায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৭-১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে বিরাজ করছে। তাপমাত্রা সামান্য বাড়ছে। আবহাওয়া অফিস জানায়, উপমহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ এবং আশপাশের পশ্চিমাংশে অবস্থান করছে। মৌসুমি লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। এর প্রভাবে আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।

মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত নদী অববাহিকায় মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। এছাড়া অন্য এলাকায় হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে।

এদিকে শীত ও কনকনে ঠান্ডায় স্থবির হয়ে পড়েছে বহু গ্রামীণ জনজীবন। সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গেই তাপমাত্রা কমে যাচ্ছে। ফাঁকা হয়ে পড়ছে বাজার ও রাস্তাঘাট। বিপাকে পড়েছে শ্রমজীবী ও ছিন্নমূলের মানুষ। গরম কাপড়ের অভাবে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। উত্তরাঞ্চলে তীব্র শীতকষ্টে ভুগছেন হতদরিদ্র পরিবারের শিশু ও বৃদ্ধরা। খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন অনেকেই।

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি জানান, মাঝারি শৈত্যপ্রবাহের কবলে তীব্র শীত ও কনকনে ঠান্ডায় তাপমাত্রা নিম্নগামী হওয়ায় স্থবির হয়ে পড়েছে এ অঞ্চলের মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। রবিবার মাঝারি শৈত্যপ্রবাহের কারণে জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বিকাল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তাপমাত্রা নিম্নগামী হয়ে পড়ায় ফাঁকা হয়ে পড়ছে বাজার ও রাস্তাঘাট। সরকারি ও বেসরকারিভাবে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হলেও প্রয়োজনের তুলনায় তা অপ্রতুল। কনকনে ঠান্ডায় শ্রমজীবী মানুষ পড়েছে চরম দুর্ভোগে।

নাগেশ্বরী (কুড়িগ্রাম) সংবাদদাতা জানান, কনকনে ঠান্ডায় কাঁপছে মানুষ, পশু-পাখি। অন্যান্য দিনের মতো রবিবারও কুয়াশার চাদর মুড়ি দিয়ে সকাল আসে দেরিতে। সূর্যের দেখা মেলে সকাল সাড়ে ৮টার কিছু পরে।

এদিকে পঞ্চগড় প্রতিনিধি জানান, জেলায় জেঁকে বসেছে শীত। মাঝারি শৈত্যপ্রবাহে বেড়েছে দুর্ভোগ। বিকাল হলেই উত্তরে হিমেল হাওয়ায় নেমে আসে কনকনে ঠান্ডা। রাতভর পড়ে ঘন কুয়াশা। রাতের কুয়াশা বৃষ্টিতে মাঠঘাট, গাছপালা, সড়ক- মহাসড়ক ভিজে যাচ্ছে। শীতের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। সব থেকে কষ্টে রয়েছে দিনমজুর, রিকশা-ভ্যানচালক, ইজিবাইকচালক, পাথর শ্রমিক, চা-শ্রমিকসহ ছিন্নমূল মানুষ। ঠান্ডার কারণে হাত-পা জড়ো হয়ে কাজ করতে পারছেন না তারা। শীতের তীব্রতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালগুলোতে শীত ও শীতজনিত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।

ইত্তেফাক/জেডএইচডি