শিল্পীরা ছবি আঁকেন কাগজে অথবা ক্যানভাসে। কেউ কিছুটা ভিন্ন কাজ করেন। কাপড়ে, দেয়ালে, কিংবা মাটির সানকিতেও রঙতুলির আঁচড়ে ফুটিয়ে তোলেন নানা ছবি। কিন্তু ম্যাচের বাক্স কি কারোর ক্যানভাস হয়? শুনতে হয়তো কিছুটা অদ্ভুত লাগছে।
এমনই অভিনব কাজ করেন তরুণ শিল্পী আশরাফুল ইসলাম। আজকাল দেশবিদেশের পত্রপত্রিকায় নানারকম ভিন্নধর্মী কাজ চোখে পড়ে। এর ব্যতিক্রম নন আশরাফুল। ছোট ছোট ম্যাচবাক্সের উপর নানারকম ছবি আঁকেন তিনি।
খুলনা জেলার কয়রা উপজেলার এই তরুণ মিনিয়েচার আর্ট ভালোবাসেন বেশ আগে থেকেই। সেই ভালোবাসা আর নিজের সৃজনশীলতায় যেন নতুনত্বের ভাবনা উন্মোচন করেছেন। ছোটবেলায় কপোতাক্ষ শিশু একাডেমিতে ছবি আঁকা শেখার মধ্য দিয়ে আঁকাআঁকি শুরু। বড়বোনের আঁকা ছবি দেখে আগ্রহ পেতেন। দুইভাইবোন মিলে নিজেদের মধ্যে অনেকটা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেই ছবি আঁকতেন।
মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে আশরাফুল বিজ্ঞানে পড়াশোনা করলেও শিল্পের প্রতি ভালোবাসা থেকে চারুকলায় পড়তে আগ্রহী হন। ভর্তিপরীক্ষা দেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে। পরে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে ভর্তির সুযোগ পান। পাঠ্যবিষয় হিসেবে চারুকলাকে পেয়ে তার ছবি আঁকার প্রতি ভালোলাগায় বাড়তি মাত্রা যোগ হয়।
ইতোমধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা সম্পন্ন করেছেন এই তরুণ। করোনাভাইরাসে কারণে যখন প্রথমবার লকডাউনে যায় পুরো দেশ, সেবার ঘরে বসে একঘেয়েমি সময় কাটছিল আশরাফুলের। সময় কাটাবার জন্য নতুন কিছু করার কথা ভাবতে ভাবতে ম্যাচবাক্সের উপর ছবি আঁকতে শুরু করেন। আর একে একে ইতোমধ্যেই এঁকে ফেলেছেন এমন শতাধিক ছবি।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মুখাবয়ব, দৈনিক ইত্তেফাকের ঐতিহাসিক সংখ্যার হুবহু ছবি, এবং সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয়ে আরও নানারকম ছবি এঁকে পরিচিতজনদের প্রশংসা কুড়ান। অনলাইনে ছবির দোকানও খুলেছেন। ভবিষ্যতেও মিনিয়েচার আর্ট নিয়ে কাজ করার ইচ্ছা এই তরুণ শিল্পীর।
ইত্তেফাক/এসটিএম