শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

পরিযায়ী পাখিতে মুখরিত আলতাদিঘী

আপডেট : ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ১৯:৪৬

সীমান্তের কোল ঘেঁষা একটি উপজেলা হিসেবে পরিচিত নওগাঁর ধামইরহাট। নওগাঁ জেলার পর্যটন কেন্দ্রগুলোর মধ্যে অন্যতম পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত আলতাদিঘী জাতীয় উদ্যান।

শীতের শুরুতেই আলতাদিঘীর চার দিক থেকে ঝাঁক বেঁধে ছুটে আসে পরিযায়ী পাখি। পাখির কিচির-মিচির শব্দে যেন মুখরিত হয়ে উঠেছে শালবনে ঘেরা দিঘীর চারপাশ। শীতের তীব্রতা যত ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে দুর দূরান্ত থেকে পাখিরা এসে ভিড় করে আলতাদিঘীতে।

একদিকে শীতকাল অন্যদিকে পাখির কলকাকলিতে জাতীয় উদ্যানে আসা দর্শনার্থীদের মন কেড়েছে। এমন মনোমুগ্ধকর পরিবেশে একবার ঘুরে আসলে মনের ভেতরে তৈরি হবে এক স্বপ্নের বসবাস। নিমিষেই মনের মধ্যে জমে থাকা চাপা কষ্ট ভুলিয়ে ফিরিয়ে আনবে এক অন্যরকম অনুভূতি।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, আলতাদিঘী জাতীয় উদ্যান রাজশাহী সামাজিক বনবিভাগের আওতায় নওগাঁ জেলার ধামইরহাট উপজেলায় পাইকবান্দা রেঞ্জের অধীনে ধামইরহাট বিটে অবস্থিত। নওগাঁ সদর থেকে ৬০ কি.মি. দুরে ধামইরহাট উপজেলায় অবস্থিত এই আলতাদিঘী নামের জাতীয় উদ্যানটি। যার মোট আয়তন ২৬৪ দশমিক ১২ হেক্টর। এই বনভূমির মাঝখানে ৪৩ একর আয়তনে গড়ে ওঠা এক বিশাল দিঘী। পরিবেশ ও বনমন্ত্রণালয় ২০১১ সালে ১৪ ডিসেম্বর ‘আলতাদিঘীকে জাতীয় উদ্যান’ হিসেবে ঘোষণা করেছেন।

এছাড়াও জাতীয় উদ্যানের পাশের ১৭ দশমিক ৩৪ হেক্টর বনভূমিকে ২০১৬ সালের ৯ জুন বাংলাদেশ বন অধিদপ্তর বিশেষ জীববৈচিত্র সংরক্ষণ এলাকা হিসেবে ঘোষণা প্রদান করেন।

সরে জমিনে দেখা গেছে, শৈত্যপ্রবাহে শীতের আর্দ্রতা বাড়তে থাকায় দেশের গণ্ডি পেরিয়ে নানান দেশ থেকে দল বেধে এসে ঝাঁক বেধেছে দিঘীর পুরো এলাকা জুড়ে পরিযায়ী পাখিরা। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য রাজ সরালি, পাতি সরালি, বালিহাঁস, রাজহাঁস, মান্দারিন হাঁস, গোলাপী রাজহাঁস, ঝুটি হাঁস, চকাচকি, চিনা হাস, কালোহাঁস, বুনো হাঁস, লালশির, নীলশীর, মানিকজোড়া, জলপিপি, ডুবোরী পাখি, হরিয়াল পাখি, রামঘূঘু, কাদাখোঁচা ও বিভিন্ন প্রজাতির গাংচিল।

প্রতিবছর শীতকালে বিভিন্ন দেশ থেকে আসা এসব পরিযায়ী পাখিরা আলতাদিঘী শালবনকে এক অপরূপ সাজে সাজিয়ে তোলে। সাধারণত মাঘ মাসের শেষ অবধি দেখা মিলে এদের বিচরণ। তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবারে আলতাদিঘীতে পাখির সংখ্যা কম দেখা মিলেছে। আর শীতকালে শালবনের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসা ভ্রমণ পিপাষুরা দল বেধে ঝাঁকে ঝাঁকে উড়ে আসা পাখির ছোটাছুটি আর দুরন্তপনায় মুগ্ধ হয়ে ঘরে ফিরেন। এসব পরিযায়ী পাখি নিধনে প্রশাসন সর্বদা কড়া নজরদারি রাখেন বলে জানান বন পরিদর্শকরা।

ইত্তেফাক/এমআর