বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

সম্ভাবনাময় পর্যটনকেন্দ্র ছৈলার চর

আপডেট : ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৫:০১

কাঁঠালিয়ার বিষখালী নদীতে প্রাকৃতিকভাবে জেগে ওঠা দৃষ্টিনন্দন ছৈলার চর। নানা সঙ্কট পেরিয়ে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপার লীলাভূমি হিসেবে গড়ে উঠছে ছৈলার চরটি। 

দেখা গেছে, আকর্ষণীয় এ পর্যটন স্পটটি বঙ্গোপসাগর থেকে মাত্র ৬০ কিলোমিটার নিকটবর্তী। সদর ইউনিয়নের হেতালবুনিয়ায় মৌজার আওতাধীন বিষখালী নদীতে এক যুগ আগে ১১০ একর জমি নিয়ে জেগে ওঠে। এখানকার যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম নৌপথ। এখানে রয়েছে কয়েক লক্ষাধিক ছৈলাগাছ। আর ছৈলাগাছের নাম থেকেই জেগে ওঠা এ চরের নামকরণ করা হয়েছে ‘ছৈলার চর’। শীতের সময় শুকনো চরে গহিন অরণ্য। চারপাশে নদীঘেরা যেন ছৈলার বনের দ্বীপ। চরটিতে ছৈলাগাছ ছাড়াও কেয়া, হোগল, রানা, এলি, মাদার, আরগুজিসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ রয়েছে। আর সেখানে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি—শালিক, ডাহুক আর বকের সারি। 

এছাড়া বিষখালী নদীর ঢেউয়ের গর্জন, বাতাসের তালে ছৈলা পাতার শোঁ শোঁ শব্দ। সকালবেলায় পূর্বাকাশে নদীর বুক চিরে জেগে ওঠা লাল সূর্যটা। বেলা শেষে পশ্চিম আকাশে হেলে পড়ার মতো দৃশ্য যে কোনো জায়গায় দাঁড়িয়ে অবলোকন করার মতো অতুলনীয় স্পটের নাম ছৈলার চর। ভ্রমণ পিপাসুদের প্রতিদিনের পদচারণায় এখন মুখরিত ছৈলার চর।

ইতিমধ্যেই উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে তৈরি হয়েছে শীতাতপনিয়ন্ত্রিত দুইটি রেস্ট হাউজ, একাধিক গোল ঘর, দৃষ্টিনন্দন বিশাল ডিসি লেক ও ইকোপার্ক। বিষখালী নদীর পাশ দিয়ে পর্যটকদের ঘুরে বেড়ানোর জন্য থাকছে ময়ূরপঙ্খি লাল রঙের একাধিক নৌকা। রয়েছে পুকুর ও লেকে বিভিন্ন প্রজাতির দেশি-বিদেশি মাছ। পর্যটকদের জন্য রয়েছে টিউবওয়েল ও মানসম্মত শৌচাগারের সুব্যবস্থা। পর্যটনের কথা চিন্তা করে নদী পারাপারের জন্য নির্মিত হয়েছে একটি কাঠের সেতু। অচিরেই এটি অন্যতম পর্যটন স্পষ্ট হিসেবে স্বীকৃতি পাবে বলে জানান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুফল চন্দ্র গোলদার। বিগত ২০১৫ সালে ছৈলার চর স্থানটি পর্যটন স্পট হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। 

বরগুনার বেতাগী প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি মো. আ. সালাম ছিদ্দিকী জানান, ২০১৫ সাল থেকে আমরা প্রায়ই ছৈলার চরে ঘুরতে আসি। বর্তমানে অনেক স্থাপনা ও দোকানপাট গড়ে উঠেছে, যা পর্যটকদের আরও বেশি আকর্ষণ করছে। ছৈলার চর এলাকার বাসিন্দা হেতালবুনিয়া মাদ্রাসার সুপার মাওলানা মুনিরুল ইসলাম জানান, ডিসি লেক, একাধিক গোলঘরসহ অনেক স্থাপনা নির্মিত হয়েছে এখানে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুফল চন্দ্র গোলদার বলেন, ২০১৫ সালে ছৈলার চর নামক স্থানটি পর্যটন স্পট হিসেবে চিহ্নিত করে পর্যটন মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। পর্যটকদের সুবিধার্থে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই নানা পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে ছৈলার চরে থাকার কটেজ, একাধিক গোলঘর, পাকা ঘাটলাসহ বেশকিছু স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে। 

উপজেলা চেয়ারম্যান মো. এমাদুল হক মনির জানান, ছৈলার চরকে আধুনিক একটি পর্যটনকেন্দ্র করার জন্য আমাদের কাজ চলছে।

ইত্তেফাক/এমএএম