ন্যাড়া ও টাক মাথা, ছোট ও কম চুলের সকল মানুষের কৃত্রিম সাজে প্রয়োজন পড়ে পরচুলার। এই পরচুলা তৈরি হচ্ছে, মুক্তাগাছার বিভিন্ন গ্রামে। গড়ে উঠেছে পরচুলা শিল্প। পরচুলা তৈরির কাজে যুক্ত হয়েছেন অনেক নারী ও স্কুল পড়ুয়া ছাত্রীরা। দেশের বিভিন্ন স্থানের পাশাপাশি বিদেশেও কদর রয়েছে মুক্তাগাছায় তৈরি পরচুলার। এমনকি নাটক ও সিনেমার অভিনেতা অভিনেত্রীরাও ব্যবহার করেন পরচুলা।
জানা যায়, শহর বা গ্রামের অনেক নারী তাদের আঁচড়ানো ঝরা চুল জমিয়ে রাখেন। ভাঙারি বিক্রেতাদের হাঁক শুনে নারীরা ঘর থেকেই চুল বিক্রি করেন। নগদ টাকা ও বাসন-পত্তরের বিনিময়ে ঝরা চুল কিনে নেন ভাঙ্গারি বিক্রেতারা। উপজেলার বাঁশাটি ইউনিয়নের জয়দা, নিমুরিয়া ও মন্ডলসেন গ্রামে রয়েছেন পরচুলা তৈরির অনেক দক্ষ কারিগর । কেনা চুল পরিষ্কার করে বিশেষ পদ্ধতিতে। একেকটি মাথা হিসাবে চুল তৈরি করে পারিশ্রমিক পান ৩শ’ টাকা থেকে ছয়শ’ টাকা পর্যন্ত।
আরও পড়ুন: ৪৪ হাজার মেয়ের বিয়ের প্রস্তাব পাওয়া ব্যাচেলর
ঝরা চুলের ক্রেতারা মনির জানান, সাধারণ হিসাবে একজন নারীর মাথা থেকে মাসে ষাট গ্রাম চুল ওঠে। একজন নারীর মাথায় আড়াইশ থেকে তিনশ’ গ্রামের মতো চুল থাকে। নারীদের নিকট থেকে একশ’ গ্রাম চুল বিষ থেকে পঁচিশ টাকা কেনা যায় । বিক্রি করা যায় পাঁচশ টাকা পর্যন্ত।
ঝরা চুল দিয়ে সাধারণত পরচুলা, চোখের ভ্রু, শীতের পোষাক ইত্যাদি তৈরি হয়। গৃহস্থালী কাজের ফাঁকে গৃহীনিরা এবং পড়া লেখার ফাঁকে ফাঁকে ঘরে বসে কিংবা বাড়ির আঙিনায় পরচুলা শিল্পের কাজ করে ভালো আয়ের মাধ্যমে স্বাবলম্বী কারিগররা ।
পরচুলা শিল্প নিয়ে কাজ করা জয়দা গ্রামের গৃহবধূ শরিফা জানান, গ্রামের এক কারিগরের নিকট থেকে তারা পরচুলা তৈরির কৌশল শিখে এসে রপ্ত করি। এই গ্রামে আমরা কমপক্ষে ২০ জন নারী পরচুলা তৈরির কাজে সম্পৃক্ত। আমরা বাড়ির উঠোন কিংবা ঘরে বসেই পরচুলা তৈরির কাজ করি। চুল আসে ময়মনসিংহ বিভাগের বিভিন্ন জেলা উপজেলাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে।
ইত্তেফাক/এনএ