মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

ছাত্রীকে ‘দেহ ব্যবসায়ী’ বানানো সেই চেয়ারম্যানসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা

আপডেট : ২১ নভেম্বর ২০১৯, ১৭:৫৩

টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি জাকিরুল ইসলাম উইলিয়াম ও ধুবড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান মতিসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। তথ্য লোপাট, প্রতারণা, মিথ্যা তথ্য প্রদান, মানহানি ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগে এ মামলা করা হয়। উপজেলার ধুবড়িয়া গ্রামের সাহাবুদ্দিন গত ১৯ নভেম্বর নাগরপুর জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ মামলা দায়ের করেন। বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে ৩০ ডিসেম্বর এর মধ্যে সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ প্রদান করেছেন।

মামলার অপর আসামিরা হলেন, নাগরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রফিকুল ইসলাম রঙ্গু, ধুবড়িয়া ছেফাতুল্লাহ উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি শাহাবুল আলম দুলাল ও ধুবড়িয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা শফিকুর রহমান শাকিল। 

মামলার বিবরণীতে জানা যায়, গত ১২ জুলাই ২০১৮ উপজেলার সারটিয়াগাজি গ্রামের জবেদারের ছেলে জুয়েল একই কলেজে পড়ুয়া ছাত্রীকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে আত্মীয়ের বাড়িতে ৩ দিন আটকে রেখে ধর্ষণ করে। এ ঘটনার পর ওই ছাত্রীর বাবা নাগরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি জাকিরুল ইসলাম উইলিয়ামের সাথে তার বাড়িতে দেখা করে এর প্রতিকার চান। কারণ উইলিয়াম খুব প্রভাবশালী এবং জুয়েল তার কর্মচারী ও অন্যান্য সহযোগীরা তার কাছের লোক। তিনি প্রতিকার না করে ছাত্রীর বাবাকে বলে দেন, এরকম ঘটনা হয়েই থাকে। তুমি এ নিয়ে বাড়াবাড়ি করিও না, করলে সুবিধা করতে পারবে না। অন্যদিকে উইলিয়ামের প্রভাবে নাগরপুর থানা পুলিশ ধর্ষণের মামলা গ্রহণ করেননি। নিরুপায় হয়ে কলেজ ছাত্রীর বাবা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল, টাঙ্গাইল আদালতে মামলা করেন। পরে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য আসামিরা বাদীকে একের পর এক হুমকি দিয়ে আসে।

আরও পড়ুন: ভুয়া পরীক্ষার্থীসহ মাদরাসা শিক্ষক আটক

এদিকে আসামিদের মামলা থেকে নির্দোষ প্রমাণ করার জন্য আওয়ামী লীগ নেতারা পরস্পর যোগসাজসে ধুবড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তার প্যাডে ধর্ষণের বিষয়টিকে ধামাচাপা দিয়ে উল্টো ভু্ক্তভোগী ওই কলেজ ছাত্রীকে দেহ ব্যবসায়ী ও মাদক ব্যবসায়ী আখ্যা দিয়ে আসামিদের পক্ষে আদালতে একটি প্রতিবেদন জমা দেয়। এছাড়াও হ্যান্ডবিল ও পোস্টার ছাপিয়ে বিলি করে। অভিযুক্ত জুয়েল রানা আওয়ামী লীগ সভাপতি জাকিরুল ইসলাম উইলিয়ামের কর্মচারী ও অনুসারী হওয়ায় তাকে মামলা থেকে রেহাই দিতে ভুক্তভোগী ওই ছাত্রীর পরিবারকে ব্যাপক চাপ প্রয়োগ ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করা হয়। এছাড়াও প্রতিনিয়ত হুমকি দিয়ে বাদীকে বাড়িঘর থেকে উচ্ছেদের অভিযোগ আনা হয়েছে আসামিদের বিরুদ্ধে । 

এ ব্যাপারে উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি জাকিরুল ইসলাম উইলিয়াম বলেন, ‘সমাজে আমার সম্মান ক্ষুণ্ণ করার জন্য এই মামলা করা হয়েছে। আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।’

ইত্তেফাক/এএএম