শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

চুয়াডাঙ্গার রেলবাজারের রেলগেট

বন্ধ করতে খুলতেই লাগে ১৫ মিনিট!

আপডেট : ১৫ ডিসেম্বর ২০১৯, ০৭:১৩

চুয়াডাঙ্গা শহরে রেলবাজারস্থ রেলগেটটি কার্যত গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ব্রিটিশ আমলে প্রতিষ্ঠিত এই রেলগেটটি দিয়ে চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুর জেলা থেকে ঢাকাসহ সারাদেশে যাতায়াত করা হয়। রেলগেট পার হওয়ার সময় এর দুই পাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। পথচারী ও মোটরসাইকেল চালকরা অতিষ্ঠ হয়ে অনেক সময় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রেলগেটের প্রতিরোধক দণ্ডের নিচ দিয়ে কোনো রকমে চলাচল করে থাকেন।

জানা গেছে, ইদানীং চুয়াডাঙ্গা হয়ে খুলনা-পার্বতীপুর, রাজশাহী ও দৌলতদিয়া এবং কলকাতার শিলাইদহ ও যশোরের বেনাপোল থেকে ঢাকা চলাচলকারী আপ ও ডাউন ট্রেনগুলোর নিয়মিত চলাচল স্বাভাবিক রাখতে গুরুত্বপূর্ণ এই রেলগেটটি রাত-দিন ২৪ ঘণ্টায় ৮ ঘণ্টা বন্ধ রাখা হয়। এদিকে, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে রেলবাজার রেলগেটটির ওপর একটি উড়াল সড়ক নির্মাণের উদ্যোগের অগ্রগতি এখনও জানা যায়নি।

রেল কর্তৃপক্ষ জানায়, বর্তমানে অত্যাধুনিক ক্যারিয়ার লকের মাধ্যমে রেলগেটটি বন্ধ ও খোলা হয়ে থাকে। পদ্ধতিগত কারণেই গেট বন্ধ না হলে সিগন্যাল পড়বে না। আর সিগন্যাল না পড়লে নির্দিষ্ট দূরত্বে ট্রেন দাঁড়িয়ে থাকবে। একটি নির্দিষ্ট দূরত্ব পার না হওয়া পর্যন্ত দায়িত্বরত গেটম্যান চাইলেও গেটটি খুলতে পারবেন না। গেটটি বন্ধ ও খোলা উভয় প্রক্রিয়াতেই প্রতিবার ১০ থেকে ১৫ মিনিট লেগে যায়। সংশ্লিষ্ট অন্যান্য প্রক্রিয়ায় প্রতিবার আরো সময় লাগে ১০ থেকে ১৫ মিনিট। যাত্রীবাহী ট্রেনের পরপরই মালবাহী ট্রেন এলে একটানা ৩০ থেকে ৪০ মিনিট বন্ধ রাখতে হয় এই গেটটি। যানজট স্বাভাবিক হতে সময় লেগে যায় ঘণ্টাখানেক।

যানজটে আটকে থাকা কলেজছাত্রী আদ্রিতা জান্নাত বলেন, প্রতিদিনই রেলগেটে দীর্ঘ সময় আটকে থাকি।

শামীম এন্টারপ্রাইজের বাসচালক আজিজুর রহমান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, একবার ট্রেন গেলে ২০-২৫ মিনিট রেলগেটটি বন্ধ থাকে। ট্রাকচালক মতিয়ার বলেন, যে সময়টুকু আমরা রেলগেটে আটকা থাকি, সেই একই সময়ে ঝিনাইদহে পৌঁছে যেতে পারি।

চুয়াডাঙ্গার রেল স্টেশন মাস্টার মিজানুর রহমান বলেন, ট্রেন চলাচল নির্বিঘ্ন রাখতে এবং মানুষের জীবনের নিরাপত্তার স্বার্থেই রেলগেট বন্ধ রাখতে হয়। সকালের দিকে রেললাইনের উভয় পাশ থেকে ট্রেন আসার কারণে রেলগেট দীর্ঘসময় ফেলে রাখতে হয়। ফলে, দুপুর ১২টা পর্যন্ত যানজট লেগেই থাকে।

আরও পড়ুন: পাসওয়ার্ড চুরির তথ্য জানাবে ব্রাউজার

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার সভাপতি সাবেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক সিদ্দিকুর রহমান বলেন, যানজটের সমস্যা সমাধানে এখানে একটি উড়াল সেতু অথবা শহরসংলগ্ন একটি বাইপাস সড়ক নির্মাণ জরুরি। জেলা প্রশাসক উদ্যোগ নিলেই সমস্যার নিরসন সম্ভব।

চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার বলেন, চুয়াডাঙ্গা শহরের রেলগেটে যানজট নিরসনে উড়াল সড়ক নির্মাণের জন্য ইতিমধ্যে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। উড়াল সড়কের নির্মাণ হলে জেলাবাসীর দীর্ঘদিনের এই যানজট সমস্যা নিরসন হয়ে যাবে।

ইত্তেফাক/এএএম