শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

মিঠাপুকুরে পেট্রোল বোমায় ৬ বাসযাত্রী হত্যা মামলা এখন গতিহীন

আপডেট : ১৪ জানুয়ারি ২০২০, ১৮:২৪

রংপুরের মিঠাপুকুরে যাত্রীবাহী নাইট কোচে পেট্রোল বোমা মেরে ৬ বাসযাত্রী হত্যা ও ২৫ জন দগ্ধের ঘটনাটি আজ ১৪ জানুয়ারি ৬ বছরে গড়াবে। ২০১৫ সালের এই দিনে জামায়াত-শিবিরের দুর্বৃত্তরা পেট্রোল বোমার হামলা চালিয়ে এ ঘটনা ঘটিয়েছিল। ঘটনার ৬ বছর পার হলেও চাঞ্চল্যকর এ মামলাটি গতিহীন হয়ে পড়েছে। এছাড়া এই মামলার অধিকাংশ আসামি উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে।

জামিনপ্রাপ্ত কয়েকজন আসামি হাইকোর্টে স্থগিতাদেশ চেয়ে আবেদন করার প্রেক্ষিতে মামলাটি এখন স্থগিত অবস্থায় রয়েছে। এখনও অনেক আসামি গ্রেপ্তার এড়িয়ে ধরা-ছোঁয়ার বাইরে রয়েছে।

পুলিশ ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫ সালের ১৪ জানুয়ারি কুড়িগ্রামের উলিপুর থেকে খলিল পরিবহনের একটি নাইটকোচ যাত্রীদের নিয়ে ঢাকায় যাচ্ছিল। রাত প্রায় ১ টার দিকে রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার বাতাসন এলাকায় পৌঁছলে জামায়াত-শিবিরের দুর্বৃত্তরা বাসটি লক্ষ্য করে কয়েকটি পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করে। এতে বাসের ভেতরে আগুন ধরে যায় এবং জীবন্ত দগ্ধ হয়ে এক শিশুসহ ৬ জন নিহত হন। অগ্নিদগ্ধ হন আরও ২৫ যাত্রী। তাদের রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

এ ঘটনায় সে সময় মিঠাপুকুর থানার এসআই আবদুর রাজ্জাক বাদী হয়ে ৮৭ জনের নাম উল্লেখ করে আরও অজ্ঞাত ৪০/৫০ জনের নামে সন্ত্রাস বিরোধী আইন ২০০৯ (সংশোধনী ২০১২) এর ৬/১২ ধারায় একটি মামলা দায়ের করেন। তৎকালীন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মিঠাপুকুর থানার তৎকালীন পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) নজরুল ইসলাম ১৩২ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন।

মামলাটি বর্তমানে রংপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-১ এ বিচার কাজ চলা অবস্থায় হাইকোর্টের আদেশে স্থগিত অবস্থায় রয়েছে। এছাড়া ৬০ জন স্বাক্ষীর মধ্যে ৪২ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য ও জেরা সম্পন্ন হলেও মামলার মূল সাক্ষী অগ্নিদগ্ধ ও নিহতদের স্বজনরা অনেকে স্বাক্ষী দেননি।

মিঠাপুুকুর থানার ওসি জাফর আলী বিশ্বাস সাংবাদিকদের জানান, চার্জশিটভূক্ত ১৩২ জনের মধ্যে ১০০ জনের বেশি আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অনেকে স্বেচ্ছায় আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন নিয়েছেন। এদের মধ্যে বেশিরভাগ আসামি জামিনে বের হয়েছেন। বাকি পলাতকদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। মামলাটি বর্তমানে উচ্চ আদালতের নির্দেশে স্থগিত রয়েছে।

আরও পড়ুন: 'নাগরিকত্ব আইন সংশোধনে কোনো নাম যেন বাদ না পড়ে'

সরকার পক্ষের আইনজীবী এ্যাড তুহিন জানান, এই মামলার বেশকজন আসামি উচ্চ আদালতে মামলাটির স্থগিতাদেশ চেয়ে আবেদন করেছে। এর প্রেক্ষিতে হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুয়ায়ী বর্তমানে মামলাটি স্থগিত রয়েছে। মামলার ৬০ জন সাক্ষীর মধ্যে এ পর্যন্ত ৪২ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য ও জেরা সম্পন্ন হয়েছে। বাকি সাক্ষীরা ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী অগ্নিদগ্ধ ও নিহতের স্বজন।

ইত্তেফাক/নূহু