শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

হাওরের বোরো ধান কি এবার কৃষকের গোলায় উঠবে?

আপডেট : ২৮ মার্চ ২০২০, ১৬:৩২

করোনা আতঙ্কে এবার এক ফসলী বোরো ধান গোলায় তুলতে পারবে কিনা এ নিয়ে অনিশ্চয়তায় পড়েছেন হাওর অঞ্চলের কয়েক হাজার কৃষক পরিবার। এরই মধ্যে বোরো ধানের শীষ ধানে রূপান্তরিত হতে শুরু করেছে। সব ঠিক থাকলে চৈত্রের শেষে ধান কাটার কথা।

হাওরাঞ্চলের একাধিক কৃষক জানান, বিগত বছরগুলোতে অকাল বন্যা, পাহাড়ি ঢল, ধানের দাম কম থাকায় আমরা অনেকেই ভুগেছি। এবার আশঙ্কা করছি করোনা ভাইরাস সংক্রমণের ভয়ে ধান কাটার শ্রমিক পাওয়া যাবে না। তাছাড়া আতঙ্কে সংঘবদ্ধভাবেও আমার ধান কাটতে পারবো না। ফলে হাওরের ধান কিভাবে ঘরে উঠবে এ নিয়ে আমাদের চিন্তার শেষ নেই।

এদিকে উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানিয়েছে, এবার উপজেলায় বোরো আবাদ করা হয়েছে ১৭ হাজার ২৫০ হেক্টর জমিতে।

উপজেলার তলার হাওরের কৃষক মহন মিয়া, আল্লাদ মিয়া, আহম্মদ জানান, করোনা আতঙ্কের কারণে এ বছর ধান কাটার শ্রমিক পাবো না। যারা নিয়মিত ধান কেটে দিতো এবার তারা আসবে না। এক্ষেত্রে কৃষি বিভাগ যদি শুরুতেই পর্যাপ্ত ধান কাটার মেশিন সরবরাহ করে রাখে তাহলে শ্রমিক সংকট কিছুটা দূর হবে।

উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের কৃষক খসরু রুমান, তিয়শ্রী ইউনিয়নের কৃষক শাহাজাহান ও মাঘান ইউনিয়নের কৃষক দুলাল মিয়া জানালেন একই আশঙ্কার কথা। 

আরও পড়ুন: বেলারুশীয় সেই নাগরিক করোনায় আক্রান্ত নন: রসাটম

মদন দক্ষিণপাড়া গ্রামের দিনমজুর আনোয়ার হোসেন, বাঘমারা গ্রামের হছর উদ্দিন, হাসনপুর গ্রামের কালা মিয়া জানান, আমরা ঘরে বসে। ভয়ে বাড়ি থেকে বের হচ্ছি না। কিভাবে পরিবার চলবে তাও ভেবে পাচ্ছিনা। আমরা মূলত বৈশাখ মাসের দিকে তাকিয়া থাকি। ধান কাটব, বছরের ৮/৯ মাসের রোজগার করব। এবার মনে হয় ধান কাটতে পারব না। পরিবার পরিজন নিয়ে কিভাবে চলব? 

কৃষি অফিসার মো. নাজমূল হাসান বলেন, বোরো ধান কাটতে আরও বেশ কয়েকদিন বাকি। আমরা আশা করছি এর আগেই করোনা ভাইরাস থেকে দেশ রক্ষা পাবে। আর যদি এভাবেই থাকে তাহলে শ্রমিকদের নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায়ে রেখে ধান কাটতে হবে। আমাদের কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে ৫০ পার্সেন্ট পরিশোধের মাধ্যমে ধান কাটার মেশিন দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে । আমি মনে করি এতে ধান কাটার শ্রমিকের সমস্যা হবে না। 

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ওয়ালীউল হাসান বলেন, কৃষকদের ধান ঘরে তোলার স্বার্থেই সরকার ধান কাটার মেশিনের ব্যবস্থা করেছে। 

ইত্তেফাক/এসি