শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

করোনা :বেগুন-শসার কেজি দুই টাকা, তাও মিলছে না ক্রেতা

আপডেট : ০৫ এপ্রিল ২০২০, ১৩:০৩

প্রাণঘাতি করোনাভাইরাসের প্রভাবে দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে কমে গেছে সবজির দাম।  কাঙ্খিত মূল্য না পেয়ে হতাশা বাড়ছে সবজি চাষিদের। এখন প্রতিটি লাউ ৪ টাকা আর বেগুন ও শসা দু’টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন কৃষকরা। তাও ক্রেতা না পাওয়ায় ক্ষেতেই নষ্ট হচ্ছে সবজি। তবে খুচরা বাজারে দামের তারতম্য রয়েছে অনেকে।

সরেজমিন ফুলবাড়ী  উপজেলার দৌলতপুর ও শিবনগর ইউনিয়নের সবজি চাষিদের কথা বলে জানা গেছে, ক্রেতা সংকটের কারণে বেশীরভাগ সবজির দাম কমে গেছে। এখন প্রতিটি লাউ ৪ টাকা এবং বেগুন ও শসা দুই টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন কৃষকরা। করলা বিক্রি হচ্ছে মাত্র ১২ টাকা কেজিতে। তারপরও ক্রেতা মিলছে না। পানির দামে সবজি বেচে জমি থেকে সবজি ওঠানো ও পরিবহন খরচ না ক্ষেতেই নষ্ট হচ্ছে সবজি।

শিবনগর ইউনিয়নের পাঠকপাড়া গ্রামের সবজি চাষি মো. রঞ্জিত রায় বলেন, তিনি অন্যের জমি বর্গা নিয়ে দেড় বিঘা জমিতে লাউ, বেগুন, শিম, বরবটিসহ বিভিন্ন সবজি আবাদ করেছেন। বর্তমানে বেগুন আর লাউ ক্ষেত থেকে তুলে হাটে নিয়ে গেলে বিক্রি করে খরচ ওঠে না। তাই ক্ষেতেই পড়ে আছে সবজি। ইতিমধ্যে লাউ ক্ষেতের অর্ধেক ভেঙে ফেলেছেন।

একই গ্রামের শসা চাষি নিমাই চন্দ্র বলেন, তিনি ৩০ শতক জমিতে শসা চাষ করেছেন। খরচ পড়েছে ৪০ হাজার টাকা। অথচ এ পর্যন্ত মাত্র ২ হাজার টাকা বিক্রি করেছেন শসা। বর্তমানে শসার দর ৬০-৭০ টাকা মণ। স্থানীয় ক্রেতা নেই। বাইরের ক্রেতারাও কিনতে আসছেন না। ফলে সবজি চাষ করে এখন লোকসানের মুখে পড়েছেন।

দৌলতপুর ইউনিয়নের হরহরিয়াপড়া গ্রামের কৃষক তাহাজুল ইসলাম জানান, অনেক খরচ করে চরে করলা আবাদ করে বিপাকে পড়েছেন তিনি। হাটে এনে ২০০-২৫০ টাকা মণ দরে করলা বিক্রি করতে হচ্ছে। এতে করলা মাঠ থেকে তোলার খরচই উঠছে না।

তবে পাইকারি বাজারে সবজির দাম না থাকলেও খুচরা বাজারে এখনও অনেক সবজির দাম বেশী বলে জানিয়েছেন একাধিক ক্রেতা।

ফুলবাড়ী বাজারের পাইকারি ব্যবসায়ী অজয় দত্ত বলেন, খুচরা বিক্রেতারা না আসায় সবজির চাহিদা কমে গেছে। ফলে মোকামে চাহিদা না থাকায় কৃষক পর্যায়ে সবজির দাম পড়ে গেছে। করোনাভাইরাস পরিস্থিতির উন্নতি না হলে এ অবস্থার পরিবর্তন হবে কিনা সন্দেহ।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এটিএম হামীম আশরাফ বলেন, বর্তমানে সরকারি ছুটি থাকায় বেশির ভাগ মানুষ শহরে নেই। এ জন্য শহরের বাজারগুলোয় শসার চাহিদা কমে গেছে। এই সংকট কয়েক দিনের মধ্যে দূর হবে।

ইত্তেফাক/এমআরএম