শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

বঙ্গবন্ধুর খুনি মাজেদের গ্রেফতারে আনন্দিত এলাকাবাসী, দ্রুত ফাঁসির দাবি

আপডেট : ০৭ এপ্রিল ২০২০, ২২:২৫

বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি ক্যাপ্টেন আবদুল মাজেদকে গ্রেফতার করেছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এমন সংবাদ মিডিয়ার কল্যাণে মঙ্গলবার (৭এপ্রিল) সকালে দ্বীপ জেলা ভোলায় ছড়িয়ে পড়ে। খবর শোনার সাথে সাথেই আনন্দিত ও উল্লাসিত হয়ে পড়েন তার জন্মস্থান বোরহানউদ্দিন উপজেলার বড় মানিকা ইউনিয়নবাসী।

করোনা পরিস্থিতির কারণে তাদের আনন্দের বহিঃপ্রকাশ ঘটাতে পারিনি-তারা এমন কথা বলে অনেকে দুঃখ প্রকাশ করেন। উল্লাসিত অনেকে সরকারের কাছে তার দ্রুত ফাঁসি দাবি করেন।

এর আগে সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মিরপুর সাড়ে ১১ নম্বর এলাকা থেকে ক্যাপ্টেন (অব.) আবদুল মাজেদকে গ্রেফতার করে।

স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার বড় মানিকা ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের উত্তর বাটামারা গ্রামে ক্যাপ্টেন মাজেদ জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম আলী মিয়া। ৪ ভাই ৩ বোনের মধ্যে ক্যাপ্টেন মাজেদ ভাইদের মধ্যে তৃতীয়। ভাইদের মধ্যে দ্বিতীয় আব্দুল মজিদ ছাড়া সবাই জীবিত।

এলাকাবাসী জানান, ছোট বেলা থেকেই মাজেদ ছিলেন বেশ ডানপিঠে। কে জানত? এই মাজেদই একদিন হবে জাতির পিতার খুনি। হবে বাঙ্গালি জাতির চরম বিশ্বাসঘাতকদের একজন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ব্যক্তি জানান, বাংলার এই মীরজাফর ও কুলাঙ্গারকে আগে আগেই গ্রেফতার করে ফাঁসির কার্যকর করা উচিত ছিল। তার সকল সম্পত্তি রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণে দেওয়ার দাবি করেন তারা।

স্থানীয়রা জানান, করোনা পরিস্থিতির কারণে তারা আনন্দ মিছিল ও মিষ্টি বিতরণ করতে পারেনি। তবে দ্রুত রায় কার্যকরের দাবি জানান।

বড় মানিকা ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের মেম্বর জাকির হোসেন বলেন, আজ আমরা খুবই আনন্দিত। এলাকায় আমরা মিষ্টি খাইছি।

বাংলাবাজার ফাতেমা খানম কলেজের প্রভাষক মাওলানা সহিদ উল্যাহ জানান, ক্যাপ্টেন মাজেদ বাংলাদেশের স্থপতিকে হত্যা করেন। এ গ্রেফতারের খবরে আমরা মহাখুশি।

বড় মানিকা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান জহির উদ্দিন বাবর জানান, মাজেদ সমগ্র বাঙ্গালি জাতির সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। আমি তার দ্রুত ফাঁসির দাবি করছি।

আরো পড়ুন: চিকিৎসক করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত, হাসপাতাল লকডাউন

প্রধান শিক্ষক মাহবুবুর রহমান জানান, ক্যাপ্টেন মাজেদ জাতির জন্য একটি কলঙ্ক। তাকে ঘৃণা করার মতো ভাষা আমার নেই। তবে গ্রেফতারের ঘটনায় আমি আনন্দিত।

ভোলা-২ আসনের সংসদ সদস্য আলী আজম মুকুল বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি, ফাঁসির আসামি, তার গ্রেফতারের সংবাদ শুনে আজ আমিসহ সারা বাংলার জনগণ আনন্দিত। কিন্তু করোনা ভাইরাসের কারণে এই আনন্দের বহিঃপ্রকাশ করতে পারছে না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার আকুল আবেদন অতি দ্রুত তার ফাঁসির রায় কার্যকরের দাবি রইল।

পাশাপাশি যে সমস্ত খুনিরা এখনও বিদেশে আছেন তাদেরকে দেশে ফিরিয়ে এনে রায় কার্যকরের আহ্বান জানান তিনি।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পলাতক ছয় খুনির মধ্যে আবদুল মাজেদ অন্যতম। পলাতক বাকি পাঁচ খুনিরা হলো আব্দুর রশিদ, শরিফুল হক ডালিম, এম রাশেদ চৌধুরী, এসএইচএমবি নূর চৌধুরী ও রিসালদার মোসলেম উদ্দিন। ক্যাপ্টেন (অব) আব্দুল মাজেদের বাড়ি ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার বড় মানিকা ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের উত্তর বাটামারা গ্রামে।

ইত্তেফাক/এএএম