করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকলেও এবারই প্রথম রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ট্রেনে আম যাবে ঢাকায়। চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ঢাকায় নিতে কেজি প্রতি আমের ভাড়া লাগবে মাত্র দেড় টাকা। আর রাজশাহী থেকে ভাড়া এক টাকা ৩০ পয়সা।
বুধবার (২০ মে) বিকেলে রাজশাহী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে আম সংগ্রহ, পরিবহণ ও বাজারজাতকরণ নিয়ে অনুষ্ঠিত এক সভায় এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। জেলা প্রশাসক মো. হামিদুল হকের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, বিভিন্ন কুরিয়ার সার্ভিস, কৃষি বিভাগ, পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে, জেলা ও মহানগর পুলিশসহ বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন এলাকার আম চাষী এবং ব্যবসায়ীরা।
সভায় সিদ্ধান্ত হয়, আম নামানো শুরু হওয়ার পর শুধু আম পরিবহনেই চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে প্রয়োজনীয় সংখ্যক ট্রেন ঢাকায় যাবে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা থেকে ব্যবসায়ীরা প্রতিকেজি আম মাত্র দেড় টাকা ভাড়ায় ঢাকায় নিয়ে যেতে পারবেন। একই ট্রেনে প্রতিকেজি আম মাত্র এক টাকা ৩০ পয়সা ভাড়ায় ঢাকায় নিয়ে যাওয়া যাবে রাজশাহী থেকে। ঢাকায় পৌঁছানোর পর ব্যবসায়ীদের সুবিধা মতো স্টেশনে ট্রেন থামানো হবে। রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে বিভিন্ন কুরিয়ার সার্ভিস সাধ্যমতো কম খরচে ঢাকায় আম নিবে।
আরও পড়ুন: চোরাই পথে পদ্মা পাড়ি ঠেকাতে ১৯ ট্রলার ডুবিয়ে দিলো পুলিশ
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় আম, লিচু ও অন্যান্য মৌসুমী ফল বিপণন এবং কৃষিপণ্য বাজারজাতকরণ বিষয়ে গত ১৬ মে ভিডিও কনফারেন্সে চাষী ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলেন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক। ওইদিনই ট্রেনে রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের আম ঢাকায় পরিবহনের কথা ওঠে। এরপর রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন এই বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন। সে অনুযায়ী আনুষ্ঠানিক সভায় রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ট্রেনে ঢাকায় আম পরিবহনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়।
অপরদিকে ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের প্রভাবে বুধবার দিবাগত রাতে রাজশাহীর অন্তত ১৫ শতাংশ আম গাছ থেকে ঝরে পড়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর গণমাধ্যমে এমন তথ্যই দিয়েছে। অবশ্য জেলা প্রশাসক হামিদুল হক সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ঘুর্ণিঝড়ের প্রভাবে রাজশাহীর আম ঝরেছে ২০ শতাংশ।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শামসুল হক বলেন, রাতেই বিভিন্ন স্থানে খোঁজ নিয়ে তারাই জেলা প্রশাসককে জানিয়ে ছিলেন যে ২০ শতাংশ আম ঝরে পড়েছে। তবে সকালে বিভিন্ন বাগান পরিদর্শন করে দেখেছেন, ক্ষতির পরিমাণ আরেকটু কম। শহরে ১০ শতাংশ এবং চারঘাট উপজেলায় এসে ১৫ শতাংশ আম ঝরে পড়ার দৃশ্য দেখেছেন তারা। বাঘা উপজেলায় বাগান বেশি। সেখানে যাচ্ছন। তারপর আম ঝরে পড়ার প্রকৃত চিত্রটা বলতে পারবেন।
ইত্তেফাক/এসি