বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

ক্ষমতা দেখালেন ইউপি সদস্য, আহত ব্যবসায়ী হাসপাতালে

আপডেট : ২২ মে ২০২০, ০০:৩৯

সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার মথুরাপুর গ্রামের বাজারে জাহাঙ্গীর আলমের সেলুনে বসে গল্প করছিলেন কয়েকজন। এরই ফাঁকে মনি নামে একজন বলে ওঠেন, ‘গরুর ব্যবসায়ীরা কখনও সত্য কথা বলে না।’

উত্তরে গরু ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘যত সত্যি কথা কয় কোরপারা (যারা এক গ্রাম থেকে এসে আরেক গ্রামে ঘরজামাই থেকে বসবাস করেন তাদের কোরপা বলে ডেকে থাকেন দক্ষিণ মথুরাপুর গ্রামের মানুষ )।’

এ কথার জের ধরে সেলুনের মধ্যেই শুরু হয় দুজনের ধস্তাধস্তি। তবে স্থানীয়দের হস্তক্ষেপে সেদিনের ঘটনাটা আর বেশি দূর গড়াতে পারেনি।

পরের দিন (১৬ মে) শনিবার ইফতারির আগে তাড়াশ সদর ইউনিয়ন পরিষদের ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আক্তার হোসেনের হুকুমে তার ছোট ভাই মোস্তফা, চাচাত ভাই আব্দুল জলিল ও ভগ্নীপতি মনি মথুরাপুর বাজার মাঠে নুরু শাহর ছেলে গরু ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলামের (২৮) উপর অতর্কিত হামলা চালায়। 

এ সময় প্রাণের ভয়ে তিনি দৌড়ে একটি মুদি দোকানের মধ্যে ঢুকে পড়েন। সেখানেই হাসুয়া দিয়ে তাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে আহত করে ফেলে রেখে যায়। পরে স্থানীয়রা তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে তাড়াশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। সেখান থেকে বগুড়া সজিমেক হাসপাতালে নেওয়া হলে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে স্থানান্তর করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। 

এ ঘটনায় শফিকুল ইসলামের মামা (১৭ মে) রবিবার তাড়াশ থানায় বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন। মামলা নং ১২। 

এদিকে প্রত্যক্ষদর্শী দক্ষিণ মথুরাপুর গ্রামের বাসিন্দা আলেপ প্রামানিক ও মুদি দোকানি আব্দুল হামিদ জানান, ইউপি সদস্য আক্তার হোসেন শুধুমাত্র তার শক্তি প্রমাণ করার জন্যই একজন গরু ব্যবসায়ীর উপর এমন বর্বর হামলার হুকুম দিয়েছেন। কোমরের বিভিন্ন অংশে যেভাবে তারা কুপিয়েছে, তাতে মনে হয় না তিনি আর কোনদিনও স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে পারবেন।

তবে ইউপি সদস্য আক্তার হোসেন জানা, ঘটনার সঙ্গে তার কোন রকমের সম্পৃক্ততা নেই।

তাড়াশ সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. বাবুল শেখ জানান, উভয় পক্ষকেই নতুন করে দ্বন্দ্বে না জড়াতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি তাদের নিয়ে বসে একটা সঠিক সমাধানের চেষ্টা চলছে।

তাড়াশ থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহবুবুল আলম বলেন, আসামিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। 

ইত্তেফাক/জেডএইচ