ভোলার বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলার প্রাণকেন্দ্র হাজির হাট বাজারের উত্তর পাশে পুরান থানা সংলগ্ন পাকা সংযোগ বেড়িবাঁধটি নদী ভাঙ্গনের হাত থেকে রক্ষার জন্য যুবসমাজের সহযোগিতায় গ্রামবাসীরা উদ্যোগ নিয়েছেন। চরযতিন ও সোনারচর গ্রামবাসীর অর্থিক সহযোগিতায় ও উপজেলার বিভিন্ন স্থানের বিত্তবানদের আর্থিক অনুদানের মাধ্যমে নদীভাঙ্গনের হাত থেকে বেড়িবাঁধ রক্ষার কাজ চলছে।
পাকা বেড়িবাঁধ সড়কটি মনপুরার সর্বপ্রথম প্রধান সড়ক। সড়কটি ভেঙ্গে গেলে দুইটি গ্রামের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে। শত শত স্কুল, কলেজর ছাত্র-ছাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পড়বে। এছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন পয়েন্টে ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের প্রভাবে বাঁধ ভেঙ্গে যাচ্ছে। দ্রুত এসব পয়েন্টেও নদীভাঙ্গনের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য সরকারিভাবে উদ্যোগ নেওয়া জরুরী।
গ্রামবাসীর সূত্রে জানা যায়, সড়কটি মনপুরার অন্যতম যোগাযোগ মাধ্যম। এই পাকা বাঁধের সড়ক দিয়ে প্রতিদিন স্কুল, মাদ্রাসা ও কলেজের শত শত ছাত্র-ছাত্রীরা প্রতিষ্ঠানে যায়। রাস্তাটি ভেঙ্গে গেলে ছাত্র-ছাত্রীরা স্কুল, মাদ্রাসা ও কলেজে যেতে পারবে না। ভোগান্তিতে পড়বে সাধারণ মানুষ। বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে দুইট গ্রামের দশ সহ্রাধিক মানুষ। পাকা বেড়িবাঁধ সংযোগ সড়কটি রক্ষার জন্য গ্রামের যুবসমাজের উদ্যোগে গ্রামবাসীর সহযোগিতায় রক্ষার কাজ চলছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চরযতিন গ্রামের যুব সমাজের সামাজিক সংগঠন ‘উত্তর চরযতিন সমাজ কল্যাণ সংগঠন’ উদ্যোগে নদীভাঙ্গনের হাত থেকে বেড়িবাঁধ রক্ষার জন্য নদী ভাঙ্গনের প্রতিরোধে “বেড়িবাধ রক্ষা কমিটি ” গঠন করা হয়েছে। এই কমিটির নের্তৃত্বে বাঁধ রক্ষার কাজ চলছে। গ্রামবাসীর আর্থিক সহযোগীতায় ও বিত্তবানদের দানের মাধ্যমে একটি তহবিল গঠন করা হয়েছে। তহবিলে সঞ্চিত অর্থ থেকে পাকা বেড়িবাঁধ সংযোগ সড়কটি রক্ষার কাজ দৃশ্যমান। উপজেলা প্রশাসন, রাজনৈতিক দলের নের্তৃবৃন্দ, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও পানিউন্নয়ন বোর্ড যুবসমাজের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন। ইতিমধ্যে পানিউন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী আঃ রহমান বেড়িবাঁধ রক্ষার জন্য কিছু জিও ব্যাগ প্রদান করেছেন।
কমিটির আহবায়ক মোঃ ছালাহউদ্দিন জনান, বেড়িবাঁধ সড়কটি মনপুরার সর্বপ্রথম প্রধান সড়ক। মনপুরার ইতিহাসের স্বাক্ষী। বেড়িবাঁধ সড়কটি রক্ষার জন্য গ্রামের যুব সমাজ যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে তা সত্যিই প্রশংশনীয়। এই সংযোগ বেড়িবাঁধটি ভেঙ্গে গেলে দুইটি গ্রামের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে। কোমলমতি শিক্ষার্থীরা প্রতিষ্ঠানে যেতে খুব কষ্ট হবে। পাকা বেড়িবাঁধ সংযোগ সড়কটি রক্ষার জন্য যুব সমাজের পাশাপাশি উপজেলা প্রশাসন, রাজনৈতিক দলের নের্তৃবৃন্দ, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, উপজেলার বিত্তবান, বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন যুব সমাজের পাশে দাঁড়ানোর জন্য অনুরোধ জানান তিনি।
এব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ সহকারী প্রকৌশলী আঃ রহমান বলেন, বেড়িবাঁধটি ভেঙ্গে গেলে যাতে জনসাধারণের দুর্ভোগ না হয় তার জন্য বিকল্প বেড়িবাঁধের কাজ চলছে। তবে যুব সমাজ বেড়িবাঁধ রক্ষার যে উদ্যোগ নিয়েছে তা প্রশংশনীয়। আমিও ব্যক্তিগতভাবে সার্বিক সহযোগীতা করব।
এ ব্যাপারে উপজেলা চেয়ারম্যান ও আ’লীগ সভাপতি সেলিনা আকতার চৌধূরী বলেন, বেড়িবাঁধ রক্ষার জন্য গ্রামের যুবসমাজ যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন তা আমি সমর্থন করি। এটি একটি ভালো উদ্যোগ। আমিও যুব সমাজকে উৎসাহিত করার জন্য যা যা করার তা অবশ্যই করব।
ইত্তেফাক/আরকেজি