শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

প্রথম বছরই শতভাগ উত্তীর্ণের তালিকায় কুমিল্লা কালেক্টরেট স্কুল

আপডেট : ০১ জুন ২০২০, ০০:৪০

রবিবার প্রকাশিত এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলে এক অসামান্য সাফল্য অর্জন করেছে ‘কুমিল্লা কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজ’। কুমিল্লা জেলা প্রশাসন কর্তৃক পরিচালিত এ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা এবার এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে শতভাগ পাস এবং মোট পরীক্ষার্থীর প্রায় অর্ধেক সংখ্যক জিপিএ-৫ অর্জন করে এ সাফল্য দেখায়। শুরুতেই এমন চমকপ্রদ ফলাফলে আনন্দে উচ্ছ্বসিত প্রতিষ্ঠান পরিচালনা পর্ষদের কর্মকর্তা, অধ্যক্ষ, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীসহ অভিভাবকরা।

প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ নার্গিস আক্তার বলেন, কুমিল্লা জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে নগরীর কেন্দ্রস্থল রাজগঞ্জ-সংলগ্ন রাজবাড়ি কম্পাউন্ডে ২০১৫ সালে প্রায় ২ একর ভূমির উপর কুমিল্লা কালেক্টরেট স্কুল এ- কলেজটি স্থাপন করা হয়। ওই সালে প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমিক স্কুল শাখায় ষষ্ঠ শ্রেণিতে প্রথম ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের ব্যাচটি এ বছর এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে।

এ বছর তিনটি বিভাগ থেকে মোট ১৮৬ জন পরীক্ষায় অংশ নিয়ে সকলেই কৃতকার্য হয়েছে। এর মধ্যে বিজ্ঞান বিভাগে ১২১ জন, মানবিক বিভাগে ১৭ জন ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে ৪৮ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। তাদের মধ্যে বিজ্ঞান বিভাগের ৭১ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে এবং অপর সকল শিক্ষার্থী জিপিএ-৪ পেয়েছে। এ প্রতিষ্ঠানে পাসের হার শতভাগ। প্রতিষ্ঠানের সভাপতিসহ সংশ্লিষ্টদের তদারকি, শিক্ষক ও অভিভাবকদের চেষ্টার কারণে শুরুতে এমন ফলাফল হয়েছে উল্লেখ করে তিনি সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন। তিনি আসন্ন এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য সকলের নিকট দোয়া চেয়েছেন।

কুমিল্লা কালেক্টরেট স্কুল এ- কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ও কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মো. আবুল ফজল মীর বলেন, এই প্রতিষ্ঠানে শুরু থেকেই শিক্ষার্থীদের বহুমুখি প্রতিভা বিকাশ, লেখাপড়ার মানোন্নয়ন ও ফলাফল ভাল করার জন্য মনিটরিং বৃদ্ধিসহ নানা কার্যক্রম চলমান আছে। শিক্ষকরা ইংরেজি ও গণিতসহ সকল বিষয়ে সমান গুরুত্ব দিয়ে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করে থাকেন। এছাড়া ক্রীড়া, সাংস্কৃতিক ও বইপড়া প্রতিযোগিতাসহ সকল ক্ষেত্রে সমভাবে শিক্ষার্থীরা তাদের পারফরমেন্স প্রদর্শন করছে। এসব কারণে শতভাগ উত্তীর্ণসহ প্রত্যাশিত ফল অর্জিত হয়েছে। এতে আমরা সকলে বেশ আনন্দিত। ভালো ফলাফলের পেছনে প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ, শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের আন্তরিক প্রচেষ্টা ছিল। আগামীতে আরও ভাল ফলাফল করার জন্য আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠার পেছনে সাবেক জেলা প্রশাসক (বর্তমানে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব) মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়ার অসামান্য অবদানের কথা স্মরণ করে জেলা প্রশাসক মো. আবুল ফজল মীর আরও বলেন, এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সাবেক জেলা প্রশাসক (বর্তমানে কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব) মো. হাসানুজ্জামান কল্লোল। এখানে মানসম্পন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের চাহিদাকে প্রাধান্য দিয়ে তিনি এই প্রতিষ্ঠানটি স্থাপন করেন।

তবে বিগত সময়ে পাবলিক পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের দিন বোর্ডের অধীন প্রাচীন ও নামকরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোয় শিক্ষক-অভিভাবক ও কৃতি শিক্ষার্থীদের হৈ-হুল্লুর, নাচ-গান আর ঢোল-তবলা বাজিয়ে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করলেও এবার দেখা গেছে সম্পূর্ণ ভিন্ন চিত্র। অদৃশ্য প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের মহামারির কারণে শিক্ষার্থী ও তাদের পরিবারের সকল আনন্দ-উচ্ছ্বাস ম্লান হয়ে গেছে। সেরা সাফল্য অর্জনকারী নগরীর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর আঙ্গিনা আজ ছিল ফাঁকা।

ইত্তেফাক/জেডএইচডি