শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

নীলফামারীতে শ্রমিক সংঘর্ষে ১৫ কোটি টাকা ক্ষয়ক্ষতি দাবি করে মামলা, আসামি ৩৫০

আপডেট : ২৯ জুন ২০২০, ২০:৫৯

শ্রমিক ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদে নীলফামারীর উত্তরা ইপিজেডের এভারগ্রিন বিডি ফ্যাক্টরি লিমিটেডের বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা ফ্যাক্টরির মূল ফটক ভাঙচুর ও অগ্নি সংযোগের ঘটনায় প্রায় ১৫ কোটি টাকার লোকসান হয়েছে বলে দাবি জানিয়েছে প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনায় তিন জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ৩৫০ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছে এভারগ্রিন কর্তৃপক্ষ।

এভারগ্রিন বিডি ফ্যাক্টরি লিমিটেড গত রবিবার বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলন থেকে এসব কথা জানায়। সংবাদ সম্মেলনে এভারগ্রিনের প্রধান নির্বাহী ও চেয়ারম্যান ফিলিক্স ওয়াই সি চ্যাঙয়ের দাবি, ঘটনার দিন শ্রমিক আন্দোলনের নামে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়েছে বিক্ষোভকারীরা। তাদের ঘটানো অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের ঘটনায় কারখানার অন্তত ১৫ কোটি টাকার ক্ষতি সাধন হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।

একটি মহল উদ্দেশ্যমূলক ভাবে সহিংসতা ঘটিয়েছে দাবি করে এভারগ্রিন চেয়ারম্যান বলেন, শ্রমিকদের আন্দোলনকে পূঁজি করে কারখানায় ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, সিসি ক্যামেরা ও কম্পিউটার ধ্বংস করে ভোল্টে রাখা টাকাও নিয়ে যায় একটি দল। যারা এ কাজের সঙ্গে জড়িত তারা কেউ শ্রমিক না। তারা শ্রমিক হলে কারখানার কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ওপর হামলা চালাতে পারতো না। কারণ হামলার শিকার হওয়া কর্মকর্তা কর্মচারীরা সকল শ্রমিকদের চেনেন।

হঠাৎ সহিংসতা শুরু হলে শ্রমিকরাই মানববেষ্টনী করে তাকে রক্ষা করেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, আমি ২০ মিনিট কথা বলেছি। আমার কথায় তারা শান্ত হয়েছিল। কিন্তু হঠাৎ করে আমার ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু হলে শ্রমিকরাই আমাকে মানববেষ্টনী তৈরি করে রক্ষা করেছেন। এ সময় আমিও আহত হই। শ্রমিকদের ওই সহিসংতায় দেড় থেকে দুইশত জন মুখোশধারী হেলমেট পরা ব্যক্তি তিন ঘণ্টা ধরে ওই হামলা চালায়। তারা পরিকল্পিতভাবে হাতে স্ক্রু ড্রাইভার, হাতুড়ি, লোহার রড ও ভারী যন্ত্রপাতি নিয়ে এসে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে।

সহিংসতায় ক্ষতির কথা তুলে ধরে তিনি আরও বলেন, সেদিন আমাদের প্রায় নগদ ৯০ লাখ টাকা লুট হয়েছে। আগুনে পুড়ে গেছে দুটি কাভার্টভ্যান, ১০টি মোটরসাইকেল ও ৫০ টি বাইসাইকেলসহ অন্যান্য যন্ত্রপাতি। নষ্ট করেছে ৫ টি ফর্ক লিস্টার, ৪৫০ টি সিসি ক্যামেরা, ৩২০ টি কম্পিউটার ৩২০ টি হার্ডডিক্সসহ অসংখ্য আসবাবপত্র, প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ উৎপাদিত মালামালসহ অনেক কাঁচামাল। এতে মোট ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়াবে প্রায় ১৫ কোটি টাকা।

এভারগ্রিন চেয়ারম্যান বলেন, এখন জরুরী প্রয়োজন আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। অন্যথায় বিনিয়োগ করা কঠিন হয়ে পড়বে। কারণ এমন ঘটনায় শুধু আমরাই নই বরং বিদেশি বিনিয়োগকারী ও বায়াররাও হতাশ।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন এভারগ্রিনের অতিরিক্ত নির্বাহী পরিচালক কল হ্যান মঙ, উপ মহা-ব্যবস্থাপক  কাজী ফেরদৌস-উল আলম ও হারুন-উর রশিদ। 

এ বিষয়ে নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মমিনুল ইসলাম বলেন, ইপিজেডের গত শনিবারের ওই ঘটনায় এভারগ্রিন কারখানা কর্তৃপক্ষ তিনজনের নাম উল্লেখ করে আজ্ঞাত ৩৫০ জনের নামে মামলা করেছে। বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। এ ঘটনায় এখনো কেউ গ্রেপ্তার হয়নি। আসামীদের চি‎হ্নিত করে গ্রেপ্তারের অভিযান অব্যাহত আছে।

আরও পড়ুন: কাসেম সোলাইমানিকে হত্যার দায়ে ট্রাম্পের নামে গ্রেপ্তারী পরোয়ানা জারি

উল্লেখ, গত রবিবার ইত্তেফাকে ‘নীলফামারীতে শ্রমিক ছাটাইয়ের প্রতিবাদে বিক্ষোভ-অগ্নিসংযোগ’ শিরোনামে সচিত্র সংবাদ প্রকাশিত হয়।

ইত্তেফাক/আরআই