শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

সিলেটে করোনা চিকিৎসা নিয়ে অসন্তোষ ,ওসমানী হাসপাতালে চিকিৎসা শুরুর দাবি

আপডেট : ০৩ জুলাই ২০২০, ০৯:৩৬

সিলেট বিভাগে করোনা পরিস্থিতি অনিশ্চিত গন্তব্যে ছুটছে। প্রতিদিন শত শত লোক আক্রান্ত হচ্ছেন। হাসপাতালেই মারা যাচ্ছেন গড়ে প্রতিদিন ২-৩ জন। উপসর্গ ছাড়াও মারা যাচ্ছেন। চিকিৎসকরাও রেহাই পাচ্ছেন না। এরই মধ্যে দু‘জন চিকিৎসক মারা গেছেন এবং ১২ চিকিৎসক করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। 

বুধবার আওয়ামী লীগের ও বিএনপির কেন্দ্রীয় দু্ইজন নেতা অ্যাডভোকেট আবু নসর ও  আবদুল হক করোনা আক্রান্ত হয়ে সিলেট নর্থ-ইস্ট হাসপাতালের আইসিউতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বিভাগীয় এই শহরের নগরবাসী উদ্বিগ্ন। 

বুধবার সিলেট বিভাগের চার জেলায় ২৪৭ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। মোট শনাক্ত ৪ হাজার ৮৬১ জন। এরমধ্যে সিলেট জেলায়ই ২ হাজার ৬২৫ জন, সুনামগঞ্জে ১ হাজার ১৪ জন, হবিগঞ্জে ৭২২ জন ও মৌলভীবাজারে ৫০০ জন। বিভাগে করোনায় এ পর্যন্ত মোট মারা গেছেন ৭৯ জন। সিলেট জেলায়ই ৬২ জন মারা গেছেন। বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এ তথ্য জানায়।

সিলেটের ১৯টি এলাকাকে রেড জোন ঘোষণা করে প্রস্তাব পাঠানো হলেও লকডাউন এর ঘোষণা আসেনি। কিন্তু সংক্রমণ বাড়ছেই।

সূত্র মতে, বেশ আগেই সিলেটে চিকিৎসা সম্প্রসারণ করতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে ডিও দিয়েছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন। মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীও পাঠিয়েছেন নানা প্রস্তাবনা। প্রশাসন থেকেও জানানো হচ্ছে সংকটের কথা। কিন্তু কোন সাড়া নেই। এতে ক্ষুব্ধ সিলেটবাসী। 

‘একটি মহলের ষড়যন্ত্র ও অনাগ্রহে করোনা কমছেনা। চিকিৎসায় গতি আসছেনা,’ মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল বলেন, ‘পররাষ্ট্রমন্ত্রী সিলেটে চিকিৎসার পরিধি বাড়ানোর চেষ্টা করছেন। কিন্তু সাড়া মিলছে না। এতে সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করা হচ্ছে।’ 

তিনি বলেন, ‘সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালেও করোনা চিকিৎসা শুরু না হওয়ায় ক্ষোভ বাড়ছে। সেখানে আলাদা বিল্ডিং ও ওয়ার্ডকে আইসোলেটেড করে করোনা চিকিৎসা শুরু সম্ভব। কিন্তু সংশ্লিষ্টরা উদ্যোগী নন। অথচ দেশের অনেক মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে করোনা চিকিৎসা শুরু হয়েছে। 

এদিকে নগরীতে ১ শত শয্যার শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালকে করোনা ডেডিকেডেট হাসপাতাল করা হয় শুরুতেই। গত শনিবার খাদিমপাড়ার ৩১ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে শুধু আইসোলেশন সেন্টার চালু করা হয়। এতে সিলেটে শয্যার সংখ্যা দাড়ায় ১৩১। যদিও দক্ষিণ সুরমা ৩১ শয্যার হাসপাতাকেও আইসোলেশন সেন্টার করার প্রস্তুতি চলছে। তাতেও পর্যাপ্ত হবেনা। বেসরকারিভাবে সিলেটে দুটি হাসপাতাল করোনা চিকিৎসা শুরু হয়েছে। এতে ব্যয় অত্যাধিক।  

আরো পড়ুন: সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী নাসিম স্মরণে ডাবলিন আওয়ামী লীগের আলোচনা সভা ও দোয়া

সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. হিমাংশু লাল রায় বলেন, ‘সংক্রমণ রোধে আইসোলেটেড পদ্ধতি বেশি কার্যকর। সুতরাং বড় আকারে আইসোলেশন সেন্টার স্থাপন ছাড়া গত্যন্তর নেই।’ 

দুটি ল্যাব যথেষ্ট নয়: 

বিভাগে মাত্র দুটি পিসিআর ল্যাব-এ করোনার নমুনা পরীক্ষা চলছে। প্রতিদিন ১ হাজারে মতো নমুনা আসলেও  পরীক্ষা হয় ৪ শত। বাকি নমুনা ঢাকার পাঠানো হয়।

সূত্র জানায়, সিলেট ওসমানী হাসপাতালে একটি, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে একটিসহ আরো দু’টি জেলায় দুটি পিসিআর মেশিন চালুর জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে চিঠিও দিয়েছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রী মোমেন। কিন্তু সাড়া নেই।

ইত্তেফাক/এএএম