শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

ব্যাংক ঋণ পেলেও বাকিতে চামড়া কেনে ট্যানারিগুলো!

আপডেট : ০৭ জুলাই ২০২০, ০৩:৫৫

কোরবানির পশুর চামড়ার বাজার নিয়ে চট্টগ্রামের আড়তদার ব্যবসায়ীরা শঙ্কার মধ্যে রয়েছেন। ট্যানারি মালিকরা এখনো দর নির্ধারণ করে না দেওয়ায় এই আশঙ্কা বিরাজ করছে। এছাড়া ঢাকার ট্যানারি মালিকদের কাছে বিগত সময়ের প্রায় ৫০ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীদের। আড়তদার ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, ঢাকার ট্যানারি মালিকরা সিন্ডিকেট করে চামড়া ক্রয় করেন। তাই গত কয়েক বছর যাবত্ চামড়ার ন্যায্যমূল্য পাওয়া যাচ্ছে না। আর ট্যানারিগুলো ব্যাংক ঋণ সুবিধা পেলেও বাকিতে চামড়া কিনে থাকে।

চট্টগ্রামে প্রায় দেড় শতাধিক কাঁচা চামড়ার আড়তদার ব্যবসায়ী রয়েছে। তারা কোরবানির পশুর চামড়া কেনার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। নগরীর আতুরা ডিপো এলাকায় রয়েছে আড়তদারদের গুদাম। চট্টগ্রামে সাড়ে ৬ লাখ পশু কোরবানি হয়ে থাকে। চট্টগ্রামে বর্তমানে একটি মাত্র ট্যানারি রয়েছে। তারা সীমিত পরিমাণ কাঁচা চামড়া সংগ্রহ করে। ফলে চট্টগ্রামের আড়তদার ব্যবসায়ীদের কাঁচা চামড়া বিক্রির জন্য ঢাকার ট্যানারির ওপর নির্ভর করতে হয়। কারণ কাঁচা চামড়া লবণ দিয়ে দুই/তিন মাসের বেশি রাখা যায় না। ফলে ট্যানারি মালিকদের কাছে বাকিতে হলেও চামড়া বিক্রি করে দিতে বাধ্য হন তারা।

চট্টগ্রামের আড়তদার ব্যবসায়ীরা জানান, ঢাকার ট্যানারি মালিকদের কাছে বিগত সময়ের প্রায় ৫০ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে। চামড়া কেনার সময় ট্যানারি মালিকরা মোট টাকার ২০ থেকে ৩০ শতাংশ টাকা পরিশোধ করেন। বাকি টাকা পরে দিবেন বলে চামড়া নিয়ে যান। অথচ ট্যানারি মালিকরা সরকার থেকে কাঁচা চামড়া কেনার জন্য কোটি কোটি টাকা ঋণ পেয়ে থাকেন।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন কাঁচা চামড়া আড়তদার সমবায় সমিতির সাবেক সভাপতি আবদুল কাদের ইত্তেফাককে বলেন, ‘ঢাকার ট্যানারিগুলো সিন্ডিকেট করে চামড়া কেনায় আমরা চামড়ার ন্যায্যমূল্য পাই না। কম দামে চামড়া কিনলেও তা আবার বাকিতে কেনে। তারা চেকের মাধ্যমে চামড়া কিনে না। একটি কাগজে বকেয়া লিখে দেওয়ায় পরবর্তীতে টাকা উদ্ধারের জন্য মামলাও করা যায় না। এবার এখনো পর্যন্ত চামড়ার দর নির্ধারণ করে না দেওয়ায় তারা আদৌ আমাদের কাছ থেকে চামড়া কিনবে কি না তা নিয়ে সংশয়ের মধ্যে রয়েছে আড়তদার ব্যবসায়ীরা। ’

জানতে চাইলে বাংলাদেশ ট্যানারি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শাহিন আহমেদ ইত্তেফাককে বলেন, করোনার কারণে এ বছর কোরবানি ৫০ শতাংশ কম হবে। সরকার ঋণ না দিলে আমরা চামড়া ক্রয় করতে পারব না। কোরবানির পশুর চামড়ার দর নির্ধারণ নিয়ে আমরা শিগিগরই বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বসব। আড়তদারদের বকেয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এগুলো অনেক পুরোনো বিষয়।

বাংলাদেশ ফিনিশড লেদার, লেদার গুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার এক্সপোর্টার অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন আহমেদ শাহিন বলেন, ২০১৭ সাল থেকে চামড়া শিল্পে সংকট বিরাজ করছে। ট্যানারিগুলো হাজারিবাগ থেকে সাভারে স্থানান্তর করা হয়েছে। কিন্তু সেখানে সেন্ট্রাল ইটিপি নির্মিত হয়নি। ফলে বিদেশি ক্রেতা আমাদের কাছ থেকে চামড়া কিনতে অনীহা দেখাচ্ছে।

ইত্তেফাক/এসআই