শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

বিদ্যালয়ের কমিটির চাপে শিক্ষিকার আত্মহত্যা, পরিবারের অভিযোগ

আপডেট : ০৮ জুলাই ২০২০, ১৫:৫২

বিদ্যালয়ের অফিস সহকারীর কাছে বারবার বিদ্যালয়ের কমিটির নেতৃবৃন্দ হিসাব চাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। আইনিভাবে অফিস সহকারীর কাছে বিদ্যালয়ের হিসেব চাওয়া যুক্তিসঙ্গত না হলেও বারবার বিদ্যালয়ের হিসেব চান এবং চাপ প্রয়োগ করেন বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও কমিটির নেতৃবৃন্দ। 

এমন চাপের কারণে ও অপমানের ভার সহ্য করতে না পারায় বিশ্বনাথের দৌলতপুর ইউনিয়নের আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজের অফিস সহকারী ও সহকারী শিক্ষিকা আসমা শিকদার সিমলা আত্মহত্যা করেন বলে পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেছেন। 

নিহতের স্বামী ফজলুর রহমান বলেন, ‘বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও বিদ্যালয়ের গভর্নিং বডির ২-৩ জন সদস্যের চাপে আমার স্ত্রী আসমা শিকদার সিমলা মারা গেছেন।’ তিনি এ ব্যাপারে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলেও এ প্রতিবেদককে জানান। 

মঙ্গলবার দিবাগত রাত ২ টার দিকে শিক্ষিকা হারপিক খেয়ে আত্মহত্যা করেন। তিনি ষোল বছর বয়সী এক ছেলে সন্তানের জননী। পারিবারিক কোন কলহ ছিলো না বলে জানা গেছে। 

নিহতের ভাই যুক্তরাজ্য প্রবাসী স্বপন শিকদার বলেন, ‘কমিটির নেতৃবৃন্দ বারবার আমার বোনকে বিদ্যালয়ের হিসাব দিতে চাপ প্রয়োগ করেন। তাকে অপমান করেন। যার কারণে আমার বোন অপমানের চাপ সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করেন।’ 

আরো পড়ুন: ঝিনাইদহে নদীর পাড় থেকে সরকারি ওষুধ উদ্ধার

আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি যুক্তরাজ্য প্রবাসী বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুর রউফ বলেন, ‘বিদ্যালয়ের হিসাব দিতে কোন সময়ই আমরা আসমা বেগম সিমলাকে চাপ দেইনি। তার কাছে হিসেব চাওয়া যুক্তিসঙ্গত নয়। কারণ তিনি বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী। হিসেব চাইলে আমরা সাবেক সভাপতি অথবা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কাছে চাইতে পারি।’ তাদের ওপর আনিত অভিযোগ সম্পন্ন মিথ্যা ও বানোয়াট বলে তিনি দাবি করেন।  

আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) আব্দুল হাসিমের মুঠোফোনে বারবার যোগাযোগ করে ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। 

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সমীর কান্তি দেব বলেন, ‘এ ধরনের কোন ম্যাসেজ আমার কাছে আসেনি। তারপরও খোঁজ নিয়ে দেখব।’

বিশ্বনাথ থানার অফিসার ইনচার্জ শামীম মুসা বলেন, ‘বিদ্যালয় কমিটির চাপে বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী মারা যাওয়ার একটি মৌখিক অভিযোগ পেয়ে বিষয়টি আমি তদন্ত করে দেখছি।’ 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) কামরুজামান বলেন, ‘বিষয়টি আমি খতিয়ে দেখব।’

ইত্তেফাক/এএএম